নয়াদিল্লি: নোটবন্দির পরও রোখা যায়নি জাল নোটের কারবার (Fake Currency)। এ বার তা উঠে এল রিজার্ভ ব্যাঙ্কের রিপোর্টেও (Reserve bank of India/RBI)। বরং ২০২১-’২১ অর্থবর্ষে তা আগের তুলনায় বেড়েছে বলেই জানিয়েছে তারা। ৫০০, ২০০০ টাকার জালনোটে বাজার কার্যত ছেয়ে গিয়েছে বলে দাবি তাদের।
জাল নোট বৃদ্ধির পরিসংখ্যান প্রকাশ
শুক্রবার রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তরফে যে পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হয়, তাতে বলা হয়েছে, ২০২১-’২২ অর্থবর্ষে ৫০০ টাকার জাল নোটে ১০১.৯ শতাংশ বৃদ্ধি দেখা গিয়েছে। ২০০০ টাকার জাল নোটের বৃদ্ধি ৫৪.১৬ শতাংশ।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের রিপোর্ট ঘিরে উদ্বেগের আরও বড় কারণ হল যে, ৫০০, ২০০০ টাকার জাল নোট এবং ১০, ২০, ২০০ টাকার জাল নোটের মধ্যে ব্যবধান অনেক বেশি। ২০২১-’২২ অর্থবর্ষে ১০ টাকার জাল নোট ১৬.৪ শতাংশ, ২০ টাকার জাল নোট ১৬.৫ শতাংশ এবং ২০০ টাকার জাল নোট ১১.৭ শতংশ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। ৫০ এবং ১০০ টাকার জাল নোট বৃদ্ধি পেয়েছে যথাক্রমে ২৮.৭ শতাংশ এবং ১৬.৭ শতাংশ হারে তাই মোটা টাকার লেনদেনে জাল নোটের রমরমা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
নোটবন্দির (Demonetisation) সপক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে বরাবর জালনোটের কারবার নির্মূল করার কথা বলতে শোনা গিয়েছে কেন্দ্রকে। তা নিয়ে বার বার বিরোধীদের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছে তারা। তাই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সাম্প্রতিকতম পরিসংখ্যান হাতে পেয়ে নতুন করে কেন্দ্রকে বিঁধতে শুরু করেছেন বিরোধীরা।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের রিপোর্ট শীর্ষক একটি প্রতিবেদন তুলে ধরে টুইটারে নোটবন্দি নিয়ে কেন্দ্রকে কটাক্ষ ছুড়ে দেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গাঁধী (Rahil Gandhi)। তিনি লেখেন, ‘দুর্ভাগ্যজনক হলেও, নোটবন্দির সাফল্য বলতে একটাই, ভারতের অর্থনীতিকে গুঁড়িয়ে দিতে পেরেছে।’
তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন (Derek O'Brien) সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে (Narendra Modi) নিশানা করেন। তিনি লেখেন, ‘নমস্কার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। নোটবন্দি? মনে পড়ছে কি? কী ভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আপনাকে চ্যালেঞ্জ ছুড়েছিলেন? আর আপনি কী ভাবে গোটা দেশকে জাল নোট থেকে মুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন? রিজার্ভ ব্যাঙ্কের রিপোর্ট কিন্তু বলছে জাল নোট বৃদ্ধি পেয়েছে।’
নোটবন্দি নিয়ে কেন্দ্রকে আক্রমণ বিরোধীদের
উল্লেখ্য, আগাম ঘোষণা ছাড়া ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর মধ্যরাত থেকে দেশে পুরনো ৫০০ এবং ১০০ টাকার নোট বাতিলের ঘোষণা করেন মোদি। তার বদলে নতুন ৫০০ এবং ২০০০ টাকার নোট আনার কথাও দেশবাসীকে জানান তিনি। দুর্নীতি রুখতে, ডিজিটাল লেনদেনে মানুষকে উৎসাহিত করতে, দেশকে জাল নোট মুক্ত করতে এবং কালো টাকা দেশে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যেই এমন সিদ্ধান্ত বলে সেই সময় জানায় কেন্দ্র। আচমকা এই ঘোষণায় হুলুস্থুল বেধে যায় সর্বত্র। নগদে টান পড়ায় শিকেয় ওঠে ব্যবসা-বাণিজ্য। রোজকার খরচের টাকা তুলতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা এটিএম-এর বাইরে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় সাধারণ মানুষকে। রোদে, গরমে তা করতে গিয়ে অনেকের মৃত্যু পর্যন্ত হয়। তার জেরে বরাবর সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে কেন্দ্রকে।
আরও পড়ুন: Aadhaar Misuse: আধার কার্ডের অপব্যবহার এড়াতে নয়া পদক্ষেপ নিল UIDAI কর্তৃপক্ষ