নয়াদিল্লি: কী বলা আছে বিতর্কিত তিন কৃষি আইনে? কী যুক্তি ছিল কেন্দ্রীয় সরকারের ? কী চাইছেন চাষিরা? চলুন এক নজরে জেনে নেওয়া যাক।

ফারমার্স প্রোডিউস ট্রেড অ্যান্ড কমার্স (প্রোমোশন অ্যান্ড ফেসিলিটেশন) অ্যাক্ট, ২০২০। যেখানে বলা হয়েছে, বড় ব্যবসায়ী বা বেসরকারি সংস্থা চাইলে সরাসরি চাষির কাছ থেকে কৃষিজ পণ্য কিনতে পারবে। সরকারের যুক্তি, এর ফলে কৃষকরা বাজারের সর্বোচ্চ মূল্য পাবেন। কিন্তু কৃষকদের দাবি, এভাবে বাজারের নিয়ন্ত্রণ ব্যবসায়িক সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। 


দ্বিতীয় আইনটি হল ফারমার্স (এমপাওয়ারমেন্ট অ্যান্ড প্রটেকশন) এগ্রিমেন্ট অব প্রাইস অ্যাসিওরান্স অ্যান্ড ফার্ম সার্ভিসেস অ্যাক্ট, ২০২০। এই আইন অনুযায়ী কোনও বেসরকারি বাণিজ্য সংস্থা বা খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ সংস্থা চাইলে কৃষকদের কাছ থেকে জমি লিজ নিয়ে সেই জমিতে কৃষিজ পণ্য ফলাতে পারবে। সরকারের যুক্তি ছিল, এতে দেশীয় কৃষিজ পণ্যের চাহিদা বাড়বে। কৃষি পণ্য রফতানির পথ প্রশস্ত হবে। কিন্তু কৃষকদের দাবি, এর ফলে তাঁদের জমি আর তাঁদের থাকবে না। 




আরও পড়ুন :


' তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার ' , বড় ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর


তৃতীয় আইনটি হল এসেনশিয়াল কমোডিটিজ (সংশোধিত) বা অত্যাবশ্যক পণ্য আইন। এই বিল অনুযায়ী চাল, ডাল, গম, ভোজ্য তেল, তৈলবীজ ইত্যাদি অত্যাবশ্যকীয় পণ্য সামগ্রী মজুতের ঊর্ধ্বসীমা বলে কিছু থাকবে না। সরকারের যুক্তি ছিল, এর ফলে ফড়েদের দাপট শেষ হবে। কৃষিক্ষেত্রে বেসরকারি এবং বিদেশি বিনিয়োগও আসবে। কৃষকদের পাল্টা দাবি, এভাবেই অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা ঘুরপথে চলে যাবে বড় ব্যবসায়ীদের হাতে। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে তিনটি বিল পাস হওয়ার সময় তুমুল হই-হট্টগোলের সাক্ষী ছিল রাজ্যসভা। 


এই তিন কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে, ২০২০ সালের নভেম্বর থেকে আন্দোলন শুরু করেন কৃষকরা। প্রথম দিনেই দিল্লি-হরিয়ানা সীমানার আম্বালায় পুলিশের বাধা মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁদের। তারপর দফায় দফায়  বৈঠক হয়েছে কেন্দ্র ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে। কিন্তু, সুরাহা হয়নি। চাপে পড়ে দেড় বছরের জন্য তিনটি কৃষি আইন স্থগিত রাখতে রাজি বলেও আশ্বাস দেয় মোদি সরকার। কিন্তু, তাতে চিঁড়ে ভেজেনি। কৃষকরা আইন প্রত্যাহারের দাবি থেকে একচুল সরেননি।