কলকাতা: ফের বাড়ল পেট্রোল-ডিজেলের দাম (Fuel Price Hike)। গত ১৪ দিনে ১২ বার দাম বাড়ল জ্বালানির। ৪২ পয়সা বেড়ে লিটারপ্রতি পেট্রোলের (Petrol Price Hike) দাম হল ১১৩.৪৫ টাকা। ৪০ পয়সা বেড়ে লিটার প্রতি ডিজেলের (Diesel PRice Hike) দাম হল ৯৮.২২ টাকা। ফলে ফের দেশে সর্বকালীন রেকর্ড গড়ল পেট্রোলের দাম (Record Price Hike of Fuel)। ডিজেলের দাম ১০০ ছুঁইছুঁই। 


জ্বালানির দামে সর্বকালীন রেকর্ড


উত্তরপ্রদেশ-সহ পাঁচ রাজ্যে ভোটের ফল বেরিয়েছে ১০ মার্চ। আর ২২ মার্চ থেকেই ধারাবাহিক ভাবে বাড়ছে পেট্রোল-ডিজেলের দাম। মহার্ঘ হয়েছে CNG-ও। বাড়তে বাড়তে দাম কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা ভেবে কুলকিনারা পাচ্ছে না সাধারণ মানুষ। এই অবস্থায় সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে অর্থনীতিবিদদের একাংশ।


পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দামও। আনাজ, মাছ-মাংস থেকে ভোজ্য তেল---সবকিছুরই দাম চড়ছে হু হু করে। অগ্নিমূল্য বাজার। তাতেই মাথায় হাত সাধারণ মানুষের। নাভিশ্বাস উঠছে সকলের। 


আরও পড়ুন: Jhalda Murder: পারিবারিক অশান্তির জেরে তপন কান্দুকে খুন করেছে দাদা নরেন কান্দু, দাবি এসপির।Bangla News


কিন্তু এই মূল্যবৃদ্ধির দায় কার? কেন বেলাগাম পেট্রোল-ডিজেলের দাম? কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালার কথায়, "মোদির শাসনে দেশ বিধ্বস্ত, বিজেপির জয় দেশকে লোটার লাইসেন্স, মানুষের ঘাড়ে করের বোঝা, কৃষি আইন প্রত্যাহার করায় প্রতিশোধ নিচ্ছে বিজেপি।"


কেন্দ্রের তীব্র সমালোচনা বিরোধীদের


তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, "একটা অভাবনীয় ব্যাপার ঘটছে। ভয়ঙ্কর ব্যাপার। সম্পূর্ণ বেপরোয়া ভাবে পেট্রোল-ডিজেলের দাম বাড়িয়ে চলেছে কেন্দ্র। শুধু কি পেট্রোল-ডিজেল, রান্নার গ্যাস, ওষুধ সবের দাম বাড়ছে। বাজারে এর প্রভাব পড়বে। প্রভাবিত হবে পরিবহণ ব্যবস্থাও। সাধারণ মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত, খেটে খাওয়া মানুষ কোথায় যাবেন! বাজারে আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে মোদি সরকার। তেলের দাম সরকারের নিয়ন্ত্রণে নেই বলাটা সবচেয়ে বড় মিথ্যাচার। কারণ পাঁচ রাজ্যে ভোটের আগে তেলের দাম অপরিবর্তিত থাকল কী ভাবে?"


সিপিএম-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, "সর্বকালীন রেকর্ড হয়ে গেল। সেঞ্চুরি করে ফেলল পেট্রোল। ডিজেল সেঞ্চুরি হাঁকানোর পথে। অচ্ছে দিন কী , তা ভাল ভাবে টের পাচ্ছেন মানুষ। ভয়ানক ভাবে দাম বাড়ছে। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বাড়ছে, তাই বাডা়তে হবে বলে এত দিন যুক্তি দিচ্ছিল। কিন্তু এখন তো আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমেছে ২৫ শতাংশ। তা হলেও ভারতে দাম বাড়ছে কেন?"


প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীর কথায়, "কী অবস্থা! প্রতিদিন সকালে আমাদের মর্নিং গিফট দিচ্ছে মোদি সরকার। ঘুম ভাঙলেই পেট্রোল-ডিজেলের দাম বৃদ্ধি। ১৪ দিনে ১২ বার দাম বাড়িয়ে রেকর্ড গড়েছে। সারের দামও ভয়ঙ্কর ভাবে বাড়ছে। এ সবের প্রভাব পড়বে বাজারে। এই সরকার গত আট বছরে শুধু করবাবদ ২৬ লক্ষ কোটি টাকা রোজগার করেছে। অন্য রাজ্য কিছু কমালেও, বাংলা খআতির করে না। বাংলায় বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে বলব, ভ্যাট একটু হলেও কমাতে।"


যদিও রাজ্য বিজেপি-র মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের যুক্তি, "সাম্প্রতিক পরিস্থিতি ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির বাধ্যবাধকতায় দাম বাড়ছে, সরকার এর কোনও নিয়ন্ত্রণ করে না, কোনও বিশেষ রাজনৈতিক ব্যক্তিও দাম নিয়ন্ত্রণ করেন না।" কিন্তু বিরোধীদের প্রশ্ন, কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণেই যদি না থাকে, তাহলে কোন জাদুবলে পাঁচ রাজ্যের ভোটের আগে দীর্ঘ ১৩৭ দিন দাম অপরিবর্তিত রাখা সম্ভব হয়।