নয়াদিল্লি: কয়েক হাজার কোটি টাকার ঋণ পরিশোধ না করেই দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন বিজয় মাল্য, নীরব মোদিরা (RBI on Bank Fraud)। তার পর থেকে ভূরি ভূরি প্রতিশ্রুতি শোনা গেলেও, ব্যাঙ্ক দুর্নীতি যে আগের জায়গাতেই রয়েছে, এ বার তা কার্যত মেনে নিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (Reserve Bank of India/RBI)। তারা জানিয়েছে, ব্যাঙ্ক দুর্নীতির জেরে গত সাত বছরে দৈনিক অন্তত ১০০ কোটি করে টাকা খুইয়েছে দেশ। যদিও আগের তুলনায় এই টাকার অঙ্ক ধারাবাহিক ভাবে কমেছে বলে জানিয়েছে তারা।


ব্যাঙ্ক দুর্নীতিতে শীর্ষে মহারাষ্ট্র, তার পর দিল্লি, তেলেঙ্গানা, গুজরাত, তামিলনাড়ু


দেশের যে সমস্ত রাজ্যে ব্যাঙ্ক দুর্নীতির দৌরাত্ম সবচেয়ে বেশি, তার একটি তালিকাও প্রকাশ করেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। তাতে একেবারে শীর্ষে রয়েছে মহারাষ্ট্র। গোটা দেশের সামগ্রিক ব্যাঙ্ক দুর্নীতির ৫০ শতাংশই সেখানে হয় বলে দাবি করা হয়েছে। এর পরই তালিকায় রয়েছে দিল্লি, তেলেঙ্গানা, গুজরাত এবং তামিলনাড়ু। গত সাত বছরে ওই সমস্ত রাজ্যে ২ লক্ষ কোটি টাকার বেশি ব্যাঙ্ক দুর্নীতি হয়েছে বলে জানিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, যা দেশের সামগ্রিক আর্থিক দুর্নীতির ৮৩ শতাংশ।


আরও পড়ুন: Viral Video: রাতের আকাশে রহস্যময় আলোর ছটা, দেখা গেল দেশের একাধিক শহরে, উল্কাবৃষ্টি নাকি চিনা রকেট, তুঙ্গে জল্পনা


রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, ২০১৫ সালের ১ এপ্রিল থেকে ২০২০-র ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ২ লক্ষ ৫০ হাজার কোটি টাকার আর্থিক জালিয়াতি ধরা পড়েছে দেশে। ব্যাঙ্ক দুর্নীতিকে আটটি ভাগে ভাগ করেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, টাকা আত্মসাৎ ও অপরাধমূলক ভাবে বিশ্বাসভঙ্গ, যান্ত্রিক পদ্ধতিতে জালিয়াতি, ভুয়ো অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে জালিয়াতি, সম্পত্তি রূপান্তর, অনুমোদন ছাড়াই ক্রেডিট সুবিধা প্রদান, গাফিলতি ও নগদে ঘাটতি, প্রতারণা ও জালিয়াতি, বিদেশি মুদ্রার লেনদেন এবং অন্যান্য।


নজরদারির ফাঁক গলে ব্যাঙ্ক দুর্নীতি অব্যাহত দেশে


এখনও পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুয়ায়ী, ২০১৫-’১৬ অর্থবর্ষে ৬৭ হাজার ৭৬০ কোটি টাকা খোয়া যায় ব্যাঙ্ক দুর্নীতিতে। ২০১৬-’১৭ অর্থবর্ষে ৫৯ হাজার ৯৬৬.৪ কোটি টাকা খোয়া যায়। এর পর টাকার অঙ্ক কিছুটা কমে পরবর্তী দু’বছরে ৪৫ হাজার কোটি টাকা খোওয়া যায়। ২০১৯-’২০ অর্থবর্ষে টাকার অঙ্ক কমে ২৭ হাজার ৬৯৮.৪ কোটি এবং ২০২০-’২১ অর্থবর্ষে ১০ হাজার ৬৯৯.৯ কোটি টাকার ব্যাঙ্ক দুর্নীতি হয়। ২০২১-’২২ অর্থবর্ষের প্রথম ন’মাসে ৬৪৭.৯ কোটি টাকার দুর্নীতির হিসেব পাওয়া গিয়েছে এখনও পর্যন্ত।


তবে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক জানিয়েছে, দুর্নীতি সংক্রান্ত যে সমস্ত অভিযোগ জমা পড়েছে, নিরাপত্তার বেড়াজালে যে সমস্ত দুর্নীতির বিষয় সামনে এসেছে, তার ভিত্তিতেই এই হিসেব দেখিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। অর্থাৎ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নজরদারির ভাঁক গলেও বিপুল টাকার টুর্নীতি হয়েছে, যার কোনও হিসেব এখনও মেলেনি। ফলে ব্যাঙ্ক দুর্নীতিতে খোয়া যাওয়া টাকার পরিমাণ আরও বেশি।