নয়াদিল্লি: কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আরও সুর চড়ালেন রাহুল গাঁধী। পেগাসাস অস্ত্র গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের ওপর ব্যবহার হয়েছে কিনা, হ্যাঁ বা না-এ জবাব দিক কেন্দ্র। মূল্যবৃদ্ধি, পেগাসাস ও কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে কোনও সমঝোতা যে করা হবে না, কেন্দ্রকে তেমনই বার্তা দিলেন কংগ্রেস সাংসদ। 


সংসদের বাদল অধিবেশনের প্রথম দিনই প্রধানমন্ত্রী  নরেন্দ্র মোদি বিরোধীদের উদ্দেশে বলেছিলেন, সরকারের দিকে সবথেকে কড়া ও তীক্ষ্ণ প্রশ্ন ছুড়ে দিতে। পেগাসাস ইস্যুতে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে এদিন চাপ বাড়ান রাহুল গাঁধী। ছুড়ে দিলেন একের পর এক প্রশ্নবাণ। 


এদিন কংগ্রেস সাংসদ জানতে চান, মোদি সরকার কি পেগাসাস কিনেছিল? স্পাইওয়্যারের মাধ্যমে চলেছিল নজরদারি? এই ইস্যুতে সংসদে কেন আলোচনা হবে না?


সংসদের বাদল অধিবেশনের ঠিক আগেই সামনে আসে পেগাসাস ইস্যু। যাকে কেন্দ্র করে উত্তাল জাতীয় রাজনীতি। বিরোধীদের ক্ষোভ-বিক্ষোভে উত্তপ্ত সংসদ। যা অব্যাহত ছিল এদিনও। বুধবারও পেগাসাস-বিতর্কে আজও উত্তাল ছিল সংসদের দুই কক্ষ। রাজ্যসভার অধিবেশন শুরুতেই মুলতুবি হয়ে যায়। 


এই প্রেক্ষাপটেই পরবর্তী রণকৌশল ঠিক করতে বুধবার বৈঠকে বসে বিরোধী দলগুলি। সংসদে  রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গের অফিসে হয় সেই বৈঠক। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাহুল গাঁধীও। 


কংগ্রেস ছাড়াও, ডিএমকে, এনসিপি, শিবসেনা, আরজেডি, সমাজবাদী পার্টি, সিপিএম, ন্যাশনাল কনফারেন্স, আম আদমি পার্টি, আরএসপি, ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লিগ - সহ ১৪টি রাজনৈতিক দল এই বৈঠকে উপস্থিত ছিল। এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শিবসেনার তরফে সঞ্জয় রাউত, আম আদমি পার্টির ভগবন্ত মান, সমাজবাদী পার্টির রামগোপাল যাদবরা।


বৈঠকের পরে পেগাসাস ইস্যু নিয়ে মোদি সরকারকে নিশানা করেন বিরোধী নেতা-নেত্রীরা। রাহুল গাঁধী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আমাদের ফোনে একটি অস্ত্র ঢুকিয়েছেন। দেশের বিরোধী নেতা, সাংবাদিক, সমাজকর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হয়েছে ওই অস্ত্র। আমি আপনাদের কাছে জানতে চাই, এই বিষয়টি নিয়ে কি সংসদে আলোচনা হওয়া উচিত নয়?


তাৎপর্যপূর্ণভাবে এই বৈঠকে অনুপস্থিত ছিল তৃণমূল। পেগাসাস-ইস্যুতে লোকসভা ও রাজ্যসভায় মুলতুবি প্রস্তাব আনতে চেয়ে নোটিস দিয়েছে তৃণমূল। লোকসভায় একই ইস্যুতে নোটিস দেয় কংগ্রেসও। 


পাল্টা বিরোধীদের একজোট হওয়াকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। দলের মুখপাত্র সম্বিত পাত্র বলেন, রাহুল বলছেন, বিরোধীরা একজোট, কিন্তু ২ বছর আগে কর্ণাটকেও এই ছবি দেখা গিয়েছিল, এরপর কী হয়েছিল? ইউপি-তেও ২ যুবা একসঙ্গে লড়তে নেমেছিলেন কী হল? বিপক্ষের নেতা কেবলমাত্র নিজের ও নিজের পরিবারের কথা ছাড়া আর কিছু ভাবেন না। 


সবমিলিয়ে পেগাসাস ইস্যুতে ক্রমশ চড়ছে জাতীয় রাজনীতির পারদ।