নয়া দিল্লি : হিজাব বিতর্ক (Hijab Row) অব্যাহত। গতকাল এই মর্মে সমালোচনা করে আমেরিকা। যদিও দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্য দেশের বক্তব্য স্বাগত নয় বলে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হল ভারতের তরফে।
এনিয়ে এক বিবৃতিতে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেন, পোশাক কোড নিয়ে কর্ণাটকের কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যে ঘটনা ঘটেছে তা হাইকোর্টের বিচারাধীন বিষয়। আমাদের সাংবিধানিক কাঠামো এবং প্রক্রিয়া, সেইসাথে আমাদের গণতান্ত্রিক নীতি এবং রাজনীতি হল সেই প্রেক্ষাপট যেখানে সমস্যাগুলি বিবেচনা করা হয় এবং সমাধান করা হয়। যারা ভারতকে ভালো করে চেনে, তারা এই বাস্তবটা বোঝে।
আরও পড়ুন ; সোমবার থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত খুলবে স্কুল, তবে ধর্মীয় পোশাক নয়, নির্দেশ কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রীর
প্রসঙ্গত, অ্যাম্বাসাডর অফ লার্জ ফর ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডমের তরফে রাশদ হুসেন কর্ণাটকের ঘটনা উল্লেখ করে ট্যুইট করেন, স্কুলে হিজাব নিষিদ্ধ করাটা ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘন। উল্লেখ্য, গত বছর ডিসেম্বর মাসে রাশদ হুসেনকে IRF-এর অ্যাম্বাসাডর নিযুক্ত করা হয়। IRF-এ তিনিই প্রথম মুসলিম অ্যাম্বাসডর।
হিজাব বিতর্কে (Hijab Contovery) উত্তপ্ত কর্ণাটক (Karnataka)। বিক্ষোভ-বিবাদের আঁচ ছড়িয়ে পড়েছে গোটা দেশজুড়ে। এর মাঝেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে নেওয়া হয় পদক্ষেপ। আগামী দু-সপ্তাহের জন্য রাজধানী বেঙ্গালুরুর (Bengaluru) সমস্ত শিক্ষাঙ্গনে সব ধরণের জমায়েতে জারি করা হয় নিষেধাজ্ঞা। কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাই বোম্মাই (Basavraj Bommbai) জানিয়েছেন, আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতেই এই সিদ্ধান্ত। কর্ণাটকের বেশ কয়েকটি জায়গায় হিজাব পরা ছাত্রীদের ওপর হামলার ঘটনা সামনে আসতে শুরু করার পরই নেওয়া হয়েছে এই সিদ্ধান্ত। এদিকে, কর্ণাটক হাইকোর্টে (Karnataka High Court) দায়ের হওয়া হিজাব মামলা স্থানান্তর করা হয়েছে আদালতের বৃহত্তর বেঞ্চে।
গত জানুয়ারি মাসে হিজাব ঘিরে বিতর্ক চরমে ওঠে। উদুপির গভর্নমেন্ট গার্লস পিইউ কলেজে হিজাব পরিহিত ছয় মেয়েকে কলেজে ঢুকতে না দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। দক্ষিণপন্থী সংগঠনের তরফে এই দাবি ওঠে বলে অভিযোগ করেন হেনস্থার শিকার ওই মেয়েরা। চলতি মাসের শুরুতে নতুন করে সেই বিতর্কের আগুনে ঘি পড়ে। উদুপি এবং চিকমাগালুরুর দক্ষিণপন্থী সংগঠনগুলি মুসলিম মেয়েদের হিজাব পরে স্কুল-কলেজে ঢোকায় আপত্তি তোলে। বিবাদ এতটাই চরমে পৌঁছয় যে, মুসলিম মেয়েদের হিজাবের পাল্টা শুক্রবার গেরুয়া ওড়না পরে কলেজে আসতে দেখা যায় পড়ুয়াদের একাংশকে। মঙ্গলবার সকাল থেকে বিক্ষোভ হিংসাত্মক আকার ধারণ করে সেখানে। বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদের টপকে কলেজের ফটকে গেরুয়া পতাকা টাঙিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। সেই নিয়ে বচসা থেকে পরস্পরকে লক্ষ্য করে চলে পাথর ছোড়াছুড়ি।