নয়াদিল্লি : স্ত্রীর সম্পত্তি বা 'স্ত্রীধনে' কোনও নিয়ন্ত্রণ থাকা উচিত নয় স্বামীর। দুঃসময়ে তা ব্যবহার করতে পারেন কোনও ব্যক্তি, কিন্তু স্ত্রীকে তা ফিরিয়ে দেওয়াটা নৈতিক দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। শুক্রবার এক মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এমনই পর্যবেক্ষণ শোনাল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। পাশাপাশি শীর্ষ আদালত ওই মামলায় যুক্ত ব্যক্তিকে নির্দেশ দেন, তিনি যেন আবেদনকারী মহিলাকে তাঁর ক্ষতি হয়ে যাওয়া সোনার জন্য ২৫ লাখ টাকা দেন। মহিলা দাবি করেছিলেন, বিয়ের সময় বাপের বাড়ির তরফ থেকে তাঁকে সোনার গয়না দেওয়া হয়েছিল। বিয়ের পর স্বামীকে ২ লাখ টাকার চেকও দিয়েছিলেন তাঁর বাবা।
ওই মহিলার বক্তব্য অনুযায়ী, তাঁদের বিয়ের প্রথম রাতেই তাঁর সমস্ত অলঙ্কার নিজের হেফাজতে নিয়ে নেন স্বামী। সেই গয়না নিরাপদে রাখার কথা বলে তাঁর শাশুড়ির হাতে তুলে দেন। মহিলার অভিযোগ, পুরনো ধার-দেনা শোধ করতে গিয়ে তাঁর গয়নার অপব্যবহার করা হয়েছে স্বামী ও শাশুড়ির তরফে।
এই ঘটনায় ২০১১ সালে পারিবারিক আদালত বলেছিল যে, ওই ব্যক্তি ও তাঁর মা প্রকৃত অর্থেই আবেদনকারীর সোনার গয়না নিয়ে তার অপব্যবহার করেছেন। ওই মহিলাকে সেই ক্ষতি পুষিয়ে দিতে হবে। এরপর কেরল হাইকোর্ট পারিবারিক আদালতের সেই পর্যবেক্ষণের পরিপ্রেক্ষিতে বলে, ওই ব্যক্তি ও তাঁর মা যে তাঁর গয়নার অপব্যবহার করেছেন তা প্রমাণ করতে সক্ষম হননি মহিলা।
হাইকোর্টের এই নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যান মহিলা। শীর্ষ আদালতে সঞ্জীব খান্না ও দীপঙ্কর দত্তের বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, 'স্ত্রীধন' স্বামী ও স্ত্রীর যৌথ সম্পত্তি নয়। ওই সম্পত্তির উপর স্বামীর কোনও অধিকার নেই। বা, তিনি এর মালিক হিসাবে নিজেকে দাবি করতে পারেন না। বিয়ের আগে কোনও মহিলাকে দেওয়া সম্পত্তি বা বিয়ের সময় বা বিদায়ের সময়ে দেওয়া জিনিস তাঁর স্ত্রীধন সম্পত্তি। এটা একদম তাঁর নিজস্ব সম্পত্তি। যা তিনি নিজের আনন্দের জন্যই ব্যবহার করতে পারেন।
বেঞ্চ আরও বলেছে, স্ত্রীধন সম্পত্তিতে কোনও নিয়ন্ত্রণ থাকা উচিত নয় স্বামীর। তিনি এটা দুঃসময়ে ব্যবহার করতে পারেন, কিন্তু তবুও তাঁর স্ত্রীর কাছে একই জিনিস বা এর মূল্য ফিরিয়ে দেওয়ার নৈতিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।