নয়াদিল্লি: দেখা হল, কথাও হল। কিন্তু বেরোল না সমাধানসূত্র। তাই লাদাখ সীমান্তে ভারত-চিন সংঘাতে পুরোপুরি ইতি পড়ল না এ যাত্রায়। বরং লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে সেনা সরানোর যে ভাবে গড়িমসি করছে চিন, তা নিয়ে উদ্বেগ বজায় রইল। একই সঙ্গে দুই দেশের দ্বিপাক্ষির সম্পর্কের উন্নতির কোনও ইঙ্গিতও আপাতত মিলছে না।
ভারত-চিন সীমান্ত জট কাটল না এখনও
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে দুই দেশের অবস্থান কাছাকাছি হলেও, সীমান্ত বিরোধ নিয়ে তিক্ততা এখনও বজায় রয়েছে। সেই পরিস্থিতিতেই সম্প্রতি দিল্লি সফরে আসেন চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই। ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেন তিনি।
তার পর শুক্রবার দিল্লি থেকে সটান নেপালও উড়ে গিয়েছেন। কিন্তু লাদাখের সমস্যা অমীমাংসিতই রয়ে গিয়েছে। চিনের তরফে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন ৫৯৭ কিলোমিটার এলাকা থেকে সেনা সরানোর কথা বলা হলেও, এখনও সেখানে বিপুল চিনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে।
এর ফলে ভারতকেও লাদাখে সেনা মোতায়েন রাখতে হচ্ছে। কারণ শুধু সশরীরে সেখানে উপস্থিতই নেই চিনাবাহিনী, কামান, রকেট, ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি এবং যাবতীয় সরঞ্জাম নিয়েই সেখানে ঘাঁটি গেড়ে রয়েছে চিনা বাহিনী। অধিকৃত আকসাই চিন, গভীর উপত্যকা এলাকা শিনজিয়াং এবং তিব্বতের বিভিন্ন অংশে চিনা বাহিনী রয়েছে।
উদ্বেগ অরুণাচলপ্রদেশ নিয়েও
আপাতত ১৫ নম্বর পয়েন্ট তথা কোঙ্কা লা এলাকায় চিনা বাহিনীর নজরদারি বন্ধ করাই লক্ষ্য ভারতের। কিন্তু এ নিয়ে চিনের সঙ্গে আলোচনার কোনও রাস্তাই মিলছে না। কারণ চিনা বাহিনী সরাসরি দেশের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিংকে রিপোর্ট করে, যিনি কিনা সে দেশের সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশনের চেয়ারম্যান। সে ক্ষেত্রে ওয়াংয়ের তেমন কোনও ভূমিকা নেই।
আর এই ঘটনাক্রমই উদ্বেগ বাড়াচ্ছে দিল্লির। কারণ ১৯৮৬ সালে অরুণাচল প্রদেশের সুমদ্রং চু-তে দু’পক্ষের মুখোমুখি অবস্থান কাটিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সময় লেগেছিল দীর্ঘ আট বছর। সম্প্রতি অরুণাচলেও নতুন করে চিনের সক্রিয়তার প্রমাণ মিলেছে।