নয়াদিল্লি: প্রতিদিনই নতুন নতুন রেকর্ড গড়ছে করোনা। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে টালমাটাল গোটা দেশ । দেড় লাখের উপর উঠে গিয়েছে দৈনিক সংক্রমণ । প্রতিদিনই কোভিড আক্রান্তের সংখ্যায় নতুন নতুন রেকর্ড গড়ছে ভারত ৷ স্বাস্থ্য মন্ত্রকের হিসেব অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ১,৮৪,৩৭২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৷ মৃতের সংখ্যা ১০২৭ ৷ পাশাপাশি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৮২,৩৩৯ জন ৷ 


সবমিলিয়ে দেশে এখনও পর্যন্ত করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১,৩৮,৭২,৮২৫ জন ৷ পাশাপাশি সুস্থ হয়েছেন ১,২৩,৩৬,০৩৬ জন ৷ অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা ১৩,৬৫,৭০৪ এবং এখনও পর্যন্ত করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১৩,৬৫,৭০৪ জনের ৷


সংক্রমণের সংখ্যায় দেশের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা মহারাষ্ট্রের । তবে পিছিয়ে নেই পশ্চিমবঙ্গও । ভোটের মরশুমে হু হু করে এ রাজ্যে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা । এ রাজ্যে দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা এখন প্রায় ৫ হাজার ।


ভোটের বাজারে জনসভার মঞ্চ থেকে একে অন্যের দিকে কথার তির ছুড়ছেন নেতা-নেত্রীরা। কথার লড়াইয়ে মাতছেন সমর্থকরাও। আর অন্যদিকে গোটা দেশের পাশাপাশি বাংলাতেও নিজের রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড গড়ছে নোভেল করোনা ভাইরাস। স্বাস্থ্য দফতরের মঙ্গলবারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী,গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৫ হাজার ছুঁইছুঁই। মৃত্যু হয়েছে ২০ জনের। কিন্তু তারপরও করোনাবিধি ভুলে এখন সবার মাথাতেই শুধু ভোট আর ভোট! হাতে হাতে পতাকা থাকলেও, মুখে নেই মাস্ক! একজোট হয়ে লড়ার কথা ভাবতে গিয়ে, শিকেয় উঠেছে শারীরিক দূরত্ব!


এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক সমাবেশে কড়াভাবে করোনাবিধি মেনে চলার জন্য, রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক ও জেলাশাসকদের একগুচ্ছ নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ এদিন নির্দেশ দিয়েছে, রাজনৈতিক হোক বা অরাজনৈতিক, যে কোনও জমায়েতে সবাইকে মাস্ক পরতেই হবে।স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে। বজায় রাখতে হবে শারীরিক দূরত্ব। এইসব করোনা বিধি মানা হচ্ছে কিনা তা নজর রাখতে হবে, নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকা জেলাশাসকদের।প্রয়োজনে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে পদক্ষেপ করতে হবে প্রশাসনকে। এছাড়াও যা যা প্রয়োজনীয় নির্দেশিকা জারি করা দরকার, তা করতে হবে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে।


পাশাপাশি জনসভাগুলিতে যাতে সবাই করোনাবিধি মেনে চলেন, সেই সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে উদ্যোগ নিতে হবে রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীদেরও।আজকের নির্দেশের পর নির্বাচন কমিশন কী কী পদক্ষেপ করল, ১৯ এপ্রিলের মধ্যে তা হলফনামা দিয়ে জানানোর নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।


করোনা আবহে রাজনৈতিক সভা-সমাবেশে করোনাবিধি না মানায়, হাইকোর্টে তিনটি জনস্বার্থ মামলা হয়েছিল। তারই একটি মামলার প্রেক্ষিতে এদিন এই সমস্ত নির্দেশ দিল হাইকোর্ট।


আর অন্যদিকে আরও ভয়ঙ্কর রূপ নিয়ে বাংলায় দেখা দিল করোনা। মঙ্গলবার স্বাস্থ্য দফতরের দেওয়া পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে,গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে আক্রান্ত হয়েছেন ৪ হাজার ৮১৭ জন।সোমবার যে সংখ্যাটা ছিল সাড়ে ৪ হাজার,রবিবার ছিল সাড়ে চার হাজারের নীচে। গত এক দিনে রাজ্যে করোনা প্রাণ কেড়েছে ২০ জনের।সোমবার সংখ্যাটা ছিল ১৪,রবিবার ছিল ১০।


অর্থাৎ তিন দিনেই দ্বিগুণ মৃত্যু হয়েছে রাজ্যে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রোজ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তর সংখ্যা। মঙ্গলবার স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে,গত ২৪ ঘণ্টায় কলকাতায় করোনা আক্রান্ত হয়েছে ১ হাজার ২৭১ জন। তারপরই আছে উত্তর চব্বিশ পরগনা। সেখানে আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ১৩৪ জন।কলকাতায় একদিনে মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের।উত্তর চব্বিশ পরগনায় মারা গিয়েছেন চার জন।