ত্রিথেশ নন্দন, নয়াদিল্লি: ভারতের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্র দেশের অন্যতম কর্মসংস্থানের জায়গা। দেশপ্রেম-দেশসেবার লক্ষ্য তো রয়েইছে। তার সঙ্গে সরকারি চাকরির একটি সুযোগও।


কোভিড সময়টি বাদ দিলে প্রতিবছর ভারতের সেনাবাহিনীতে (Indian Army) জওয়ান নিয়োগ করা হয়। সারা দেশজুড়ে বিভিন্ন নিয়োগ-শিবির হয়। সেখানে যোগ দিতে ভিড় করেন হাজার হাজার যুবক। কিন্তু এখানও একটি বিষয় রয়েছে। ভারতের সেনাবাহিনীতে জওয়ান হিসেবে যোগদানের হারের যদি একটি তালিকা তৈরি করা যায়। তাহলে দেখা যাবে, ভারতীয় সেনায় যোগ দেওয়ার জন্য আগ্রহ মূলত দেখা যায় কয়েকটি রাজ্য থেকেই। তথ্যের দিকে চোখ রাখলেই স্পষ্ট হয় সেই বিষয়টি। সারা ভারত থেকেই ভারতীয় সেনায় যুবকরা যোগদান করেন। তবুও কিছু কিছু রাজ্য থেকে সেনায় যোগদানের হার অনেকটাই বেশি। মূলত উত্তর ও পশ্চিম ভারতের রাজ্যগুলি থেকেই সেনাবাহিনীতে যোগদানের হার বেশি।


কোন রাজ্য কোথায়?
ভারতের মোট জনসংখ্যার তুলনায় একটি রাজ্যের জনসংখ্যা (Population) কত শতাংশ এবং সেনা বাহিনীতে সেই রাজ্যের বাসিন্দার সংখ্যা কত শতাংশ, এই দুটি পরিসংখ্যান বিচার করলেই সামনে আসে বিষয়টি। সারা ভারতের জনসংখ্যার ৯ শতাংশ রয়েছে বিহারে (Bihar)। ২০২০ সালের তথ্য অনুযায়ী সেনায় ৬ শতাংশ ওই রাজ্য থেকে আসে। এগিয়ে রয়েছে পাঞ্জাব (Punjab) ও হরিয়ানা (Haryana)। দেশের ২ শতাংশ জনসংখ্যা রয়েছে হরিয়ানায়, সেই রাজ্য থেকে সেনাবাহিনীতে রয়েছেন ৬ শতাংশ। একই পরিমাণ জনসংখ্যা রয়েছে পাঞ্জাবেও। ভারতীয় সেনায় পাঞ্জাবের বাসিন্দা রয়েছেন ১০ শতাংশ। পিছিয়ে নেই জম্মু-কাশ্মীরও (Jammu and Kashmir)। গোটা দেশের ১ শতাংশ জনগণ যে রাজ্যের, সেখানকার বাসিন্দা ভারতীয় সেনায় রয়েছেন ৫ শতাংশ। একই পরিসংখ্যান উত্তরাখন্ডের (Uttarakhand) ক্ষেত্রেও। হিমাচল প্রদেশেও মোট ভারতের ১ শতাংশ বাসিন্দা থাকেন। ভারতীয় সেনায় সেই রাজ্যের বাসিন্দা রয়েছেন ৭ শতাংশ।




বছর বছর বেড়েছে যোগদান:
২০২০ সালের তথ্য অনুযায়ী ভারতের কোন দশটি রাজ্য থেকে সেনায় সবচেয়ে বেশি যোগদান হয়েছে?



  • বিহার

  • হরিয়ানা

  • হিমাচল প্রদেশ

  • জম্মু ও কাশ্মীর

  • মধ্যপ্রদেশ

  • মহারাষ্ট্র

  • পাঞ্জাব

  • রাজস্থান

  • উত্তরপ্রদেশ

  • উত্তরাখন্ড


২০১৭-১৮ থেকে ২০১৯-২০, উপরের প্রতিটা রাজ্যের ক্ষেত্রে সেনার যোগদানের সংখ্যা বেড়েছে।



'অগ্নিপথ' ক্ষোভ:
সম্প্রতি একটি প্রকল্প এনেছে ভারত সরকার। তার নাম অগ্নিপথ (Agnipath) প্রকল্প। এর মাধ্যমে চার বছরের জন্য নিয়োগ করা হবে। চার বছরের শেষে ২৫ শতাংশকে সেনা বাহিনীতে স্থায়ী ভাবে নিয়োগ করা হবে। বাকিদের অবসর নিতে হবে, অবসরের সময় এককালীন টাকা পেলেও পেনশন পাবেন না তাঁরা। প্রাক্তন সেনাকর্মীর পরিচয়ও পাবেন না। চার বছরের বেতন ও অবসরের সময় টাকার পরিমাণ ভাল হলেও, চার বছর পরে কী হবে তার ঘোরতর অনিশ্চয়তা রয়েছে বলে অভিযোগ। আর এখানেই তীব্র আপত্তি তুলেছেন সেনার চাকরিপ্রার্থীরা। দেশ জুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে, অনেক জায়গায় তা লাগামহীনও হয়েছে। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার বিহার-সহ একাধিক রাজ্যে সেই রোশের আঁচ এসে পড়ে রেলের উপর। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় একাধিক ট্রেন। ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে আরও অনেক সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তির। বিক্ষোভ-আন্দোলন ছড়িয়েছে হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ-সহ আরও একাধিক রাজ্যে। 
   
আরও পড়ুন: দেড় বছরে ১০ লক্ষ চাকরি! ফাঁকা পদও বহু, প্রতিশ্রুতি রাখবেন মোদি?