নয়াদিল্লি: মারণ রোগ ছড়িয়ে পড়েছিল গোটা শরীরে। তার পরেও চিকিৎসা মিলছে না, পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলেছিলেন মেয়ে। সেই নিয়ে টানাপোড়েন চলাকালীনই মৃত্যু হল জম্মু ও কাশ্মীরের (Jammu And Kashmir) বিচ্ছিন্নতাকামী নেতা আলতাফ আহমেদ শাহের (Altaf Ahmad Shah)। মঙ্গলবার ভোরে দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস-এ (AIIMS) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। কন্যা রুয়া শাহ বাবার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন।


প্রয়াত কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাকামী নেতা আলতাফ শাহ


মঙ্গলবার ট্যুইটারে বাবার মৃত্যুর খবর জানান রুয়া। তিনি লেখেন, ‘দিল্লির এমস-এ বন্দি হিসেবেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন বাবা’।  হুরিয়ত চেয়ারম্যান সৈয়দ আলি শাহ গিলানি-র জামাতা আলতাভ। উপত্যকার বিচ্ছিন্নতাকামী আন্দোলনের নেতা ছিলেন নিজেও। ২০১৮ সালে তাঁকে গ্রেফতার করে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (NIA)। সেই থেকে দিল্লির তিহাড় জেলে বন্দি ছিলেন।


বিগত ছ’মাস ধরে আলতাফের হয়ে ভারত সরকারের কাছে আর্জি জানিয়ে আসছিলেন কন্যা রুয়া। তিনি জানান, মূত্রাশয়ের ক্যান্সার ধরা পড়ে আলতাফের। সেই ক্যান্সার গোটা শরীরে ছড়িয়ে পড়েছে তাঁর। একেবারেই ভাল নেই তিনি। অথচ উপযুক্ত চিকিৎসা পাচ্ছেন না। বাড়ির লোকজনের সঙ্গে কথা বলতে দেওয়া হচ্ছে না তাঁকে।



এর আগে, দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় আলতাফের পরিবার। তারা জানায়, দিল্লির রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালে নামেই ভর্তি করা হয়েছে আলতাফকে। সেখানে ক্যান্সার চিকিৎসার কোনও বিভাগ বা ব্যবস্থাই নেই। তাতে গত ১ অক্টোবর আদালত লতাফকে অবিলম্বে এমস-এ ভর্তির নির্দেশ দেয়। কিন্তু তার পরও আলতাফকে এমস-এ নিয়ে যেতে গড়িমসি হয় বলে অভিযোগ।


আরও পড়ুন: Mulayam Singh Yadav Funeral : তেরঙ্গায় ঢাকা সমাজবাদী পার্টির প্রাণপুরুষের দেহ, পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় আজ মুলায়মের শেষকৃত্য


আদালত আলতাফের মেয়ে এবং ছেলেকে তাঁর সঙ্গে প্রতিদিন হাসপাতালে দেকা করার অনুমতি দিয়েছিল। এক ঘণ্টা করে তাঁরা রোজ বাবার সঙ্গে থাকতে পারবেন বলে জানিয়েছিল আদালত। কিন্তু পুলিশ তাঁদের দেখা করতে বাধা দিচ্ছিল বলে অভিযোগ তোলেন রুয়া। তিনি জানান, ভেন্টিলেটরে তোলার আগে পর্যন্ত আলতাফের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি তাঁদের।


মানবিকতার খাতিরে আলতাফকে জামিন দেওয়ার জন্যও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন রুয়া। চিকিৎসার প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও সেপ্টেম্বর মাসে আলতাফকে তিহাড় জেলে রেখে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেছিলেন তিনি। সম্প্রতি রুয়া জানান, তাঁর বাবার ফুসফুস কাজ করছে না। অক্সিজেনের মাত্রা কমে গিয়েছে শরীরে। এর পরই মঙ্গলবার মৃত্যু হল আলতাফের।


ক্যান্সার ছডি়য়ে পড়েছিল গোটা শরীরে


গ্রেফতার হওয়ার আগে পর্যন্ত সরকারি কর্মী ছিলেন আলতাফ। কিন্তু তিনি জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বলে দাবি করেন তদন্তকারীরা। তার জেরে ৩১১ ধারায় মামলা দায়ের হয়। ২০২১-এর অক্টোবরে চাকরিও কেড়ে নেওয়া হয় আলতাফের।