নয়াদিল্লি: উত্তরপ্রদেশে যোগী আদিত্যনাথকে (Yogi Adityanath) জেতানোর পিছনে বড় ভূমিকা ছিল তাঁর। বিজেপি-তে (BJP) এ বার গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত হলেন সুনীল বনসল (Sunil Bansal)। তাঁকে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক নিযুক্ত করলেন জেপি নাড্ডা (JP Nadda)। একই সঙ্গে বাংলার (West Bengal) পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হল সুনীলকে। দেওয়া হল ওড়িশা এবং তেলঙ্গানার দায়িত্বও। বুধবার সুনীলের নিযুক্তির ঘোষণা করল বিজেপি। 


বিজেপি-র সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুনীল বনসল


অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের থেকে বিজেপি-তে উত্থান ঘটে সুনীলের। ২০১৩ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদির নাম ঘোষণা হওয়ার পরই অমিত শাহের নেকনজরে পড়েন  সুনীল। উত্তরপ্রদেশে আপনা দলের মতো আঞ্চলিক দলগুলিকে একজোট করে বিজেপি-র ভিত মজবুত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল সুনীলের। যে কারণে উত্তরপ্রদেশের ৮০টি আসনের মধ্যে ৭৩টিতেই জয়লাভ করে। তার ফলস্বরূপ  বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি  হওয়ার দৌড়ে সকলকে যেমন পিছনে পেলে দেন শাহ, তেমনই উত্তরপ্রদেশে দলের সাধারণ সম্পাদকের পদ জুটিয়ে ফেলেন সুনীলও। 


এর পর ২০১৭ সালে যোগী আদিত্যনাথের জয়লাভেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন সুনীল। সমাজবাদী পার্টির অন্দরে যখন পারিবারিক কোন্দল তুঙ্গে, সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে দলিত এবং অনগ্র শ্রেণির আস্থা অর্জনে সফল হন সুনীল। ফলে বিজেপি-তে তাঁর উত্থান সময়ের অপেক্ষা বলে তখন থেকেই মনে করা হচ্ছিল। বুধবার সেই লক্ষ্যে পৌঁছলেন সুনীল। 



আরও পড়ুন: Nitish on Modi: ‘প্রধানমন্ত্রী হওয়ার বাসনা নেই’, বিরোধী ঐক্যের পক্ষেই সওয়াল নীতীশের, ’২৪-এ মোদির ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিলেন


তবে বিজেপি-তে সুনীলের এই উত্থান একই সঙ্গে কৈলাস বিজয়বর্গীয়র (Kailash Vijayvargiya) রাজনৈতিক ভবিষ্যতে নতুন করে প্রশ্নচিহ্ন তুলে দিল। কারণ ২০১৫ সাল থেকে বিজেপি-র সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ছিলেন কৈলাস। তাঁকে সরিয়ে সেই জায়গায় বসানো হল সুনীলকে। একই সঙ্গে, বাংলার দলের পর্যবেক্ষকের দায়িত্বও পেলেন সুনীল। ২০২১-এ ওই দায়িত্বে ছিলেন কৈলাস। কিন্তু বাংলায় দলের বৈতরণী পার করেত শুধু ব্যর্থই হননি তিনি, পরাজয়ের দায়ও তাঁর কাঁধে গিয়ে পড়ে। মুকুল রায়-সহ তৃণমূল থেকে দলে দলে লোকজনকে বিজেপি-তে যোগ দেওয়া করিয়ে, পুরনোদের বিরাগভাজন হয়েছিলেন কৈলাস। বাংলায় তাঁর কর্মকাণ্ড নিয়েও প্রশ্ন তোলেন অনেকে। তাই বেছে বেছে তাঁর জায়গায় সুনীলকে তুলে আনায় কৈলাসের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের উপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বেল মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। 


’২৪-এর নির্বাচনের আগে বাংলায় বিজেপি-র দায়িত্বে সুনীল বনসল


বাংলায় আশানুরূপ ফল করতে না পারার পর থেকেই কৈলাসের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। বিধানসভায় দল পরাজিত হওয়ার পর আর বাংলায় দেখা যায়নি তাঁকে। তাঁর সহকারি অরবিন্দ মেননকেও সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যায়নি তার পর থেকে। এই পরিস্থিতিতে ২০২৪-এর আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে বাংলার দিকে বিশেষ নজর দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করছিলেন বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সুনীলকে এনে সেই শূন্যতাই পূরণ করা গেল আবার কৈলাসের বিরুদ্ধে অনুযোগেরও জবাব দেওয়া গেল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।