ব্যাঙ্গালোর : কর্ণাটকে হিজাব বিতর্ক মামলার শুনানি আজকের মতো মুলতুবী হয়ে গেল। আগামীকাল দুপুর আড়াইটে থেকে ফের শুরু হবে শুনানি। কর্ণাটকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাবে নিষেধাজ্ঞাকে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা মামলার শুনানি এদিন শুরু হয় কর্ণাটক হাইকোর্টে। হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ঋতুরাজ অবস্থী, বিচারপতি কৃষ্ণা এস দীক্ষিত ও বিচারপতি জেএম খাজির বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হচ্ছে।


এদিন সওয়াল শুরু করেন প্রবীণ আইনজীবী রবিভার্মা কুমার।  তিনি শিক্ষা সংক্রান্ত বিধিনিয়মের ১১ নম্বর ধারা উল্লেখ করেন। তিনি জানান, ওই বিধিনিয়মে বলা হয়েছে, ইউনিফর্ম বদলের এক বছর আগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিতে নোটিস দিতে হবে অভিভাবকদের। অ্যাডভোকেট অধ্যাপক রবিভার্মা বলেন, নিয়ম বলছে, কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইউনিফর্ম বদল করতে চাইলে অভিভাবকদের এক বছর আগে নোটিশ দিতে হয়। হিজাব নিষিদ্ধ করতে হলে, এক বছর আগে জানানো দরকার। 
প্রবীণ আইনজীবী কুমার নির্দেশিকা উল্লেখ করে  বলেন, এ কথা মনে রাখা প্রয়োজন যে, পিইউ প্রতিষ্ঠানগুলির পড়ুয়াদের জন্য ইউনিফর্মের প্রয়োজন নেই। কিন্তু এরপরও কিছু প্রতিষ্ঠান ও ম্যানেজমেন্ট কমিটি ইউনিফর্ম বাধ্যতামূলক করেছে, যা আইনের পরিপন্থী। 
পিটিশনকারীদের পক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে রবিভার্মা কুমার প্রশ্ন তোলেন, শুধুমাত্র হিজাবের কথাই বলা হচ্ছে কেন, যেখানে দোপাট্টা, চুড়ি, পাগড়ি, ক্রশ ও বিন্দির মতো অসংখ্যা ধর্মীয় প্রতীক রয়েছে, যেগুলি প্রত্যেক দিনই অনেকেই পরে থাকেন।  তিনি বলেন, আমি এক্ষেত্রে শুধুমাত্র আমাদের সমাজের সমস্ত অংশের দৈনন্দিন ব্য়বহার করা ধর্মীয় প্রতীকগুলি এক্ষেত্রে তুলে ধরছি। তাই সরকার শুধু হিজাবকেই বেছে নিয়ে এ ধরনের বৈষম্য়ের পথে হাঁটছে কেন? শাঁখা পরা হয়, সেগুলি কি ধর্মীয় চিহ্ন নয়? তাহলে শুধুমাত্র ওই মুসলিম তরুণীদেরই বেছে নেওয়া কেন? হিজাব পরে থাকার কারণে ক্লাসরুম থেকে বের করে দেওয়া হয়। বিন্দি পরা ছাত্রীকে তো বেরিয়ে যেতে বলা হয়নি। শাঁখা পরা ছাত্রীকেও নয়। ক্রশ পরে থাকা ছাত্রীকেও নয়। তাহলে শুধু এই ছাত্রীদেরই কেন? আর তা ভারতীয় সংবিধানের ১৫ ধারার লঙ্ঘন। 
তিনি প্রশ্ন তোলেন, ঘোমটার অনুমতি রয়েছে। শাঁখার অনুমতি রয়েছে। তাহলে হিজাব কেন? এটা কী শুধু ধর্মীয় পরিচিতির জন্য নয় ? 
ইউনিফর্মের রঙে দোপাট্টাকে মাথা ঢাকার পোশাক হিসেবে ব্যবহারের আর্জির ব্যাপারে কর্ণাটক সরকারের কাছ থেকে জবাব চেয়েছে হাইকোর্ট।