নয়াদিল্লি: তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর, দ্বিতীয়বার মমতার (Mamata Banerjee) দিল্লি (Delhi) সফর। চার মাসের মধ্যে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) সঙ্গে বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বুধবার রাজ্যের (West Bengal) একাধিক বিষয় আলোচনার পাশাপাশি ত্রিপুরার হিংসা (Tripura Violence) নিয়েও আলোচনা হয়েছে বৈঠকে। নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক সেরে বেরিয়ে সাংবাদিকের এমনটাই জানিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী (Mamata Banerjee)।


এ দিন তিনি বলেন, 'ত্রিপুরার হিংসা (Tripura) নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সায়নীর মতো জনপ্রিয় শিল্পীকে গ্রেফতার করা হয়েছে, সায়নীর (Saayoni Ghosh) বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার ধারা দেওয়া হয়েছে। এই বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। মমতা আরও বলেন, ‘তৃণমূল চায় বিজেপি হারুক। যদি কেউ সাহায্য চায়, তৃণমূল দিতে প্রস্তুত। বিজেপিকে হারাতে অখিলেশকে সাহায্য করবে তৃণমূল। 


আগামিকাল ত্রিপুরায় পুরভোট (Tripura Municipality Vote)। ঠিক তার আগেই, ত্রিপুরায় তুলকালাম! বিগত কয়েকদিন ধরেই দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে সেখানে। গত ২১ নভেম্বর কার্যত রণক্ষেত্রে পরিণত হয় এলাকা। অভিযোগ ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর সভাস্থলের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময়, খেলা হবে স্লোগান দিয়েছিলেন। তারপর খুনের চেষ্টার অভিযোগে, রবিবার আগরতলায় গ্রেফতার করা হয় যুব তৃণমূলের রাজ্য সভানেত্রী সায়নী ঘোষকে (Saayoni Ghosh) ।


সায়নীকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় আগরতলা (Agartala) পূর্ব মহিলা থানায় তাণ্ডব, থানায় হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। হেলমেট পরে লাঠি নিয়ে তৃণমূল নেতা-নেত্রীদের ওপর হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। আহত হন এক তৃণমূল কর্মী। চলে ইটবৃষ্টি। ভাঙচুর করা হয় তৃণমূল নেতা সুবল ভৌমিকের গাড়ি। থানার বাইরে জড়ো হওয়া কয়েকজন হেলমেটধারীকে লাঠিচার্জ করে হঠিয়ে দেয় পুলিশ। তৃণমূলের অভিযোগ, চক্রান্ত করে থানায় ডেকে এনে মারার চেষ্টা চলছে। এর আগে সকালে আগরতলায় পোলো টাওয়ার হোটেলে হানা দেয় পুলিশ। তৃণমূলের দাবি, মহিলা পুলিশ এসে সায়নী ঘোষকে নিয়ে যেতে চায়। বাধা দেন কুণাল ঘোষ। সায়নীকে থানায় নিয়ে যাওয়ার নোটিস কোথায়? জানতে চান কুণাল। এই নিয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় তৃণমূল নেতার। সায়নীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, গতকাল মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের সভা চলাকালীন গাড়ির মধ্যে বসে তিনি বিজেপি সমর্থকদের উত্যক্ত করেন। যদিও ভিত্তিহীন অভিযোগ বলে পাল্টা দাবি করে সায়নী ঘোষের। 


এ দিন রাতেই দিল্লি যান তৃণমূলের সাংসদদের (TMC MLA) প্রতিনিধি দল। পরদিন দিল্লিতে ধর্নায় বসেন তৃণমূলের সাংসদরা। গ্রেফতারের পর, ২১ নভেম্বর রাতে আগরতলা (Agartala) পশ্চিম মহিলা থানায় রাখা হয় সায়নীকে। থানা চত্বরে কড়া নিরাপত্তা। এদিন থানায় গিয়ে সায়নীর সঙ্গে দেখা করেন কুণাল ঘোষ, ব্রাত্য বসু, সুস্মিতা দেব, অর্পিতা ঘোষরা। থানা থেকে বেরিয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, রাজধর্ম পালন করছে না ত্রিপুরা পুলিশ। রাজনৈতিকভাবে তাদের ব্যবহার করা হচ্ছে। ভয়াবহ পরিস্থিতি, মন্তব্য করেন ব্রাত্য বসুর। সবমিলিয়ে ত্রিপুরা ভোটের আগেই কার্যত রণক্ষেত্র তৈরি হয় ত্রিপুরা। আজ সেই সায়নী ইস্যু টেনেই প্রধানমন্ত্রীর কাছে ফের একবার সরব হলেন মমতা। 

উল্লেখ্য, রাত পোহালেই পুরভোট ত্রিপুরায়। ভোটকেন্দ্রগুলিতে কড়া নিরাপত্তা। ৬৪৪টি পোলিং বুথের মধ্যে ৩৭০টি অতি স্পর্শকাতর ও ২৭৪টি স্পর্শকাতর বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। অতি স্পর্শকাতর বুথগুলিতে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকছেন ত্রিপুরা স্টেট রাইফেলসের ৪ জওয়ান। স্পর্শকাতর বুথগুলিতে থাকছে ৪ জন সশস্ত্র পুলিশ। আগরতলা পুরসভার পোলিং বুথগুলিতে ত্রিপুরা স্টেট রাইফেলসের ৫ জন করে জওয়ান থাকবেন।