নয়াদিল্লি: নয় নয় করে দু'মাস অতিক্রান্ত হতে চলেছে। এখনও অশান্তি থামার লক্ষণ নেই মণিপুরে (Manipur Violence)। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, হতাহতের সংখ্যা শতাধিক, নির্দিষ্ট করে বললে ১১৩। ঘরছাড়া হাজার হাজার মানুষ। সেই আবহে মণিপুর সফরে যাচ্ছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী (Rahul Gandhi in Manipur)। ২৯ এবং ৩০ জুন মণিপুরেই থাকবেন রাহুল। ৩০ জুন সন্ধের পর ফিরবেন। সেখানে ত্রাণশিবিরগুলি ঘুরে দেখবেন তিনি। কথা বলবেন সাধারণ মানুষের সঙ্গে। এ যাবৎ সবচেয়ে উত্তাপ ছড়িয়েছে যে দুই জায়গায়, সেই ইম্ফল এবং চূড়াচন্দ্রপুরেও যাবেন রাহুল (Rahul Gandhi)।
রাহুলের মণিপুর সফরের কথা আগেই জানায় কংগ্রেস। দলের সাধারণ সম্পাদক কেসি বেণুগোপাল বলেন, 'প্রায় দু'মাস ধরে জ্বলছে মণিপুর। এই সময় সবচেয়ে বেশি করে আরোগ্যের ছোঁয়া প্রয়োজন, যাতে সংঘর্ষ থেকে শান্তির পথে ফিরতে পারে সমাজ। মানবিক সঙ্কট উপস্থিত হয়েছে, এই সময় ঘৃণার পরিবর্তে ভালবাসা জাগিয়ে তোলার দায় আমাদের সকলের'। মণিপুরে কংগ্রেসের প্রদেশ সভাপতি ওকরাম ইবোবি সিংহও রাহুলের সফর নিয়ে ট্যুইট করেন। লেখেন, 'রাহুল গাঁধী একাধিক শরণার্থী শিবিরে যাবেন। নাগরিক সমাজের নেতা, প্রবীণ নাগরিক এবং অন্য নেতাদের সঙ্গে দেখা করবেন'।
মণিপুরে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে লাগাতার সওয়াল করতে দেখা গিয়েছে রাহুলকে। বর্তমান পরিস্থিতির জন্য সরাসরি কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার এবং মণিপুরের বীরেন সিংহ সরকারের দিকে আঙুল তুলেছে তাঁর দল কংগ্রেস। শুধু তাই নয়, প্রধানমন্ত্রী মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে নীরবতা পালন করছেন কেন, প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস। বীরেনকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরানোর দাবি তুলেছেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে। সেই আবহে রাহুলের মণিপুর সফরের দিকে তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।
এর আগে, ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’য় বেরিয়ে ভাল সাড়া পেয়েছিলেন রাহুল। কর্নাটকে তার সুফলও ঘরে তোলে কংগ্রেস। মণিপুরে আপাতত তেমন কিছু না ঘটলেও, রাহুল সফরে গেলে মোদি মুখ খুলতে একপ্রকার বাধ্য হবেন বলে আশাবাদী কংগ্রেস। কারণ অতি সম্প্রতি আমেরিকা সফর থেকে ফিরে মোদি নিজেই দেশের পরিস্থিতি নিয়ে বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডার জবাবদিহি চেয়েছিলেন। তার ঠিক পর পরই মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে সর্বদল বৈঠক ডাকেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
সর্বদল বৈঠকেও কেন্দ্রীয় নীতির সমালোচনায় সরব হয়েছিল কংগ্রেস। মণিপুরের সমস্যা নিয়ে ইম্ফলের পরিবর্তে দিল্লিতে কেন বৈঠক হবে, প্রশ্ন তুলেছিলেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। রাজ্যে রাজ্যে যে ‘ডাবল ইঞ্জিন’ সরকারের স্তোত্র পাঠ করছেন মোদি, মণিপুরে তার পরিণতি নিয়ে কেন উচ্চবাচ্য করছেন না, প্রশ্ন কংগ্রেসের। মণিপুরকে সামনে রেখে সেই তত্ত্বের মোকাবিলা করাও লক্ষ্য কংগ্রেসের।
রাহুলের সঙ্গে মণিপুর সফরে সঙ্গী হবেন বেণুগোপাল। রাজ্যে কংগ্রেসের অধ্যক্ষ অজয়কুমার ইতিমধ্যেই মণিপুর পৌঁছে গিয়েছেন। রাহুলের সঙ্গে আর কে কে যাবেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। সরকারের তরফে কারণ দলবল নিয়ে রাহুলকে মণিপুরে ঢুকতে, ত্রাণশিবিরে যেতে বাধা দেওয়া হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে কংগ্রেস। সেই নিয়ে নতুন করে ঝামেলা বাধতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।