মুম্বই : এনসিবি অফিসার সমীর ওয়াংখেড়েকে নিয়ে তোলপাড় বাণিজ্যনগরী। এরই মধ্য়ে তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে এনসিবি-র ডিরেক্টর জেনারেল এস এন প্রধান জানিয়ে দিয়েছেন, মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী নবাব মালিকের ফরওয়ার্ড করা বেনামি চিঠির নিয়ে কোনও তদন্ত হবে না। 


এনসিবি-র তরফে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সেন্ট্রাল ভিজিল্যান্স কমিশনের গাইডলাইন অনুযায়ী মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী তথা এনসিপি নেতা নবাব মালিকের ফরওয়ার্ড করা বেনামি চিঠির ভিত্তিতে সংস্থার মুম্বই জোনাল ডিরেক্টর সমীর ওয়াংখেড়ের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। 


মালিক জানিয়েছিলেন, তিনি এমন একটি চিঠি পেয়েছেন যেটাতে উল্লেখ করা হয়েছে, এমন ২৬টি কেস রয়েছে যেখানে এনসিবি-র জোনাল ডিরেক্টর সমীর ওয়াংখেড়ে তদন্তের সময় নিয়ম-কানুনের ধার ধারেননি। এর পাশাপাশি নবাব মালিক গতকাল মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে দেখা করে প্রভাকর সেইল-এর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে সিট তদন্ত দাবি করেছেন। মুম্বইয়ের ক্রুজে মাদক মামলায় সাক্ষী এই প্রভাকর। 


এদিকে সমীর ওয়াংখেড়ের পাশে দাঁড়িয়ে নবাব মালিকের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন একাধিক বিজেপি নেতা। দলের কেন্দ্রীয় সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয় বলেছেন, এটা বোঝা যাচ্ছে যে কেন্দ্রের কোনও সৎ অফিসার মহারাষ্ট্রে কাজ করতে পারবেন না। দাউদ আমাদের দেশে নেই। কিন্তু, মহারাষ্ট্র সরকারের মন্ত্রীদের ওপর তার প্রভাব রয়েছে।


অন্যদিকে দেবেন্দ্র ফড়নবীশ বলেছেন, অফিসারদের হুমকি দেওয়া ঠিক নয়। যদি সাক্ষীদের বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট করে দেওয়ার চেষ্টা হয়, তাহলে আর কেউ সাক্ষী দিতে এগিয়ে আসবেন না। তবে, যদি কোনও আধিকারিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, এনসিবি-রও উচিত সেটা খতিয়ে দেখা।


ক্রুজ ড্রাগস মামলায় নারকোটিকস কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি)-র তদন্ত নিয়ে মহারাষ্ট্রের জোট সরকারের শরিক এনসিপি লাগাতার প্রশ্ন তুলছে। এরইমধ্যে এনসিবি-র বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলেছেন এনসিপি নেতা নবাব মালিক। তিনি দাবি করেছেন,  ক্রুজে হানা দেওয়ার সময় এনসিবি আট জন, বরং ১১ জনকে হেফাজতে নিয়েছিল। কিন্তু পরে তিন জনে ছেড়ে দেওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে একজন বিজেপির এক নেতার আত্মীয়।


নবাব মালিক আরও বলেছেন, এনসিবি যেদিন ক্রুজে তল্লাশি চালিয়েছিল, ওই দিন এনসিবি-র আঞ্চলিক ডিরেক্টর সমীর ওয়ানখেড়ে ধোঁয়াটে বিবৃতিতে বলেছিলেন, আমরা ৮ থেকে ১০ জনকে হেফাজতে নিয়েছি। সবমিলিয়ে ১১ জনকে আটক করা হয়েছিল। মুম্বই পুলিশের কাছে সকাল পর্যন্ত এমনই তথ্য ছিল। কিন্তু এরপর সংখ্যা আটে নেমে আসে এবং তিনজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়।


কয়েকদিন আগে গোয়া-গামী একটি ক্রুজে এনসিবি তল্লাশি চালিয়েছিল। ওই তল্লাশিতে বলিউড অভিনেতা শাহরুখ খানের ছেলে আরিয়ান খান ও অন্য কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়। এই ঘটনা নিয়ে এনসিপি-র মুখপাত্র ও মন্ত্রী নবাব মালিক এনসিবি-র আধিকারিকদের আচরণ নিয়ে একের পর এক প্রশ্ন তুলছেন।