নয়াদিল্লি: রাষ্ট্রদ্রোহ আইন (Sedition Law) পুনর্বিবেচনা করে দেখা হবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র। যত দিন পর্যন্ত তা না হচ্ছে, আপাতত ওই বিতর্কিত আইন স্থগিত রাখা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। আদালত জানিয়েছে, রাষ্ট্রদ্রোহ আইন সম্পর্কে কেন্দ্র চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না নেওয়া পর্যন্ত ওই আইন আপুাতত স্থগিত রাখা যায় কিনা, ওই আইনে গ্রেফতার হওয়া সকলের অধিকার রক্ষা করা যায় কিনা, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না নেওয়া পর্যন্ত কারও বিরুদ্ধে ওই আইন প্রয়োগ করা উচিত কিনা, সেই নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে কেন্দ্রকে।  আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সিদ্ধান্ত জানাতে হবে। সেই মতো নির্দেশ দিতে হবে রাজ্যগুলিকে।  


কেন্দ্রকে ২৪ ঘণ্টা সময় দিল সুপ্রিম কোর্ট


মঙ্গলবার আদালতে সওয়াল-জবাব চলাকালীন প্রধান বিচারপতি এনভি রমণা বলেন, “সরকারি নির্দেশিকা পেতে কাল সকাল পর্যন্ত সময় দিচ্ছি। কেন্দ্র যত দিন পর্যন্ত না আইন পর্যোলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, আগে থেকে জমা পড়ে থাকা এবং আগামী দিনে দায়ের হতে চলা মামলাগুলির পরিণতি নিয়ে উদ্বিগ্ন আমরা।” প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, “রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন যাঁরা এবং যাঁদের গ্রেফতার করা হতে পারে, আপাতত তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া স্থগিত রাখা যায় কিনা, জানাতে হবে কেন্দ্রকে।“


ব্রিটিশ আমলে প্রচলিত রাষ্ট্রদ্রোহ আইন (Section 124A Sedition) পর্যালোচনা করে দেখতে এর আগে আদালতে আরও সময় চেয়েছিল কেন্দ্র। তা নিয়েও কেন্দ্রকে তীব্র ভর্ৎসনা করে আদালত। বলা হয়, “কেন্দ্র বলছে পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে। কিন্তু আমরা অনর্থক সময় নষ্ট করতে পারি না। কতটা সময় দেওয়া যেতে পারে, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তা নয়ত একজনকে মাসের পর মাস জেলে রেখে দেওয়া কি উচিত? নিজেদের হলফনামায় নাগরিক স্বাধীনতার কথা বলেছে কেন্দ্র, সেই স্বাধীনতা রক্ষা করা হবে কী ভাবে?”


আরও পড়ুন: Family Health Survey : ইচ্ছে না করলে স্বামীকে শারীরিক ঘনিষ্ঠতায় 'না' বলতে পারেন কতজন ? কী বলছে কেন্দ্রের রিপোর্ট


রাষ্ট্রদ্রোহ আইন নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়ে সুপ্রিম কোর্টে নতুন হলফনামা জমা দিয়েছে কেন্দ্র। তাতে তারা জানায়, রাষ্ট্রদ্রোহ আইন পুনর্বিবেচনা করা হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই আইন বিলোপের পক্ষে। স্বাধীনতার ৭৫ বছরে আজাদি কা অমৃত মহোত্সবের মধ্যেই আইন বিলোপ জরুরি। তাই ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪(এ) ধারার পুনরায় পরীক্ষা এবং পুনর্বিবেচনার সিদ্ধান্ত। যদিও এর আগে সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্র জানিয়েছিল, রাষ্ট্রদ্রোহ আইন বাতিলে তাদের সায় নেই। তবে প্রয়োগের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট নির্দেশিকা প্রয়োজন।


কেন্দ্রের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন


কেন্দ্রের এই অবস্থান নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। মামলাকারী পক্ষের আইনজীবী গোপাল শঙ্করনারায়ণন বলেন, “গুরুত্বপূর্ণ মামলাগুলির নিষ্পত্তি যাতে না হতে পারে, তার জন্য অতিরিক্ত সময় চাওয়া বাহানা হয়ে দাঁড়িয়েছে কেন্দ্রের।” বৈবাহিক ধর্ষণের ক্ষেত্রেও কেন্দ্রকে এমনই আচরণ করতে দেখা গিয়েছিল বলে অভিযোগ করেন তিনি।