নয়াদিল্লি: দেশ ১০০ কোটির ভ্যাকসিন ডোজের মাইলস্টোন ছুঁয়ে ফেলার একদিন পর জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। করোনা-কালে এই নিয়ে দশম বার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিলেন প্রধানমন্ত্রী। 


এদিন প্রধানমন্ত্রী জানান, ‘করোনা-কালে কর্তব্য পালন করেছে দেশ। আর তাতে সাফল্যও এসেছে। মোদি বলেন, ‘একশ কোটি ভ্যাকসিনেশনের অসাধারণ সাফল্য পেয়েছে দেশ। এই সাফল্য গোটা দেশের, দেশবাসীকে এর জন্য অভিনন্দন। 


তিনি বলেন, ‘কঠিন লক্ষ্য নির্ধারণ করে, তা পূরণ করার ক্ষমতা রাখে নতুন ভারত। ভারতের টিকাকরণ কর্মসূচির তুলনা সারা বিশ্বের সঙ্গে হচ্ছে।’


প্রধানমন্ত্রীর মতে, আজ ভারতের সাফল্য নিয়ে বিশ্বে আলোচনা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘যে দ্রুততায় ১০০ কোটি ভ্যাকসিনেশন হয়েছে, তা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। টিকা আমরা এর আগে বাইরে থেকে আমদানি করতাম।


তিনি যোগ করেন, ‘অতিমারীর শুরুতে অনেক প্রশ্ন ছিল। ১০০ কোটি ভ্যাকসিন ডোজ সেই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর। আজ সবাই ভারতের শক্তির আঁচ পাচ্ছে।’


প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অতিমারীর শুরুতে বলা হয়েছিল, ভারতের পক্ষে এই লড়াই কঠিন হবে। বলা হয়েছিল, এত অনুশাসন এখানে কী করে পালিত হবে? সবাইকে নিয়ে নিখরচায় ভ্যাকসিনেশন কর্মসূচি চালু হয়েছিল।’


মোদি মনে করিয়ে দেন, ‘টিকা কর্মসূচিতে ভিআইপি সংস্কৃতি আসতে দেওয়া হয়নি। সবাই এই টিকা পেয়েছেন, টিকা গ্রহণ নিয়ে এখানে কোনও সংশয় ছিল না।’


বিরোধীদের কটাক্ষ করে মোদি বলেন, ‘থালা বাজিয়ে, প্রদীপ জ্বালিয়ে লড়াই হয়েছে, অনেক বলেছিল, এতে করোনা যাবে? এর ফলে একত্র লড়াইয়ের বার্তা প্রচারিত হয়েছে।’


প্রধানমন্ত্রীর মতে, ‘ভারতের ভ্যাকসিনেশন কর্মসূচির পুরোটাই বিজ্ঞাননির্ভর। টিকা তৈরি করা নিয়েও আমাদের সামনে ছিল কঠিন চ্যালেঞ্জ। উৎপাদনের সঙ্গে চ্যালেঞ্জ ছিল দেশের সর্বত্র টিকা পৌঁছে দেওয়ার। কোন রাজ্য কতটা ভ্যাকসিন পাবে, তা ঠিক হয়েছে বৈজ্ঞানিকভাবে।’


নরেন্দ্র মোদি তাঁর ভাষণে বলেন, ‘ভারতীয় সংস্থাগুলিতে এখন রেকর্ড বিনিয়োগ আসছে। গৃহ নির্মাণ ক্ষেত্রেও দেখা যাচ্ছে উন্নতির জোয়ার। করোনা-কালে দেশের অর্থনীতিকে সামাল দিয়েছে কৃষিক্ষেত্রের পারফরমেন্স। সব ক্ষেত্রে উন্নতির চিহ্ন দেখা যাচ্ছে, উৎসবের মরশুম তাতে আরও গতি দেবে।’


প্রধানমন্ত্রী যোগ করেন, ‘বর্তমানে মেড ইন ইন্ডিয়া তকমা শক্তিশালী হচ্ছে। ভারতে তৈরি জিনিসপত্র কেনায় জোর দিন। ভোকাল ফর লোকাল স্লোগানকে বাস্তাবায়িত করতে হবে।’


তিনি আরও বলেন, ‘গত দিওয়ালিতে সবাই অশান্তি ভোগ করেছেন। আসন্ন দিওয়ালি ১০০ কোটি ভ্যাকসিনেশনের ফলে স্বস্তি দিচ্ছে। এর ফলে ছোট ব্যবসায়ীরা উৎসাহী হবেন।’


তিনি জানিয়ে রাখেন, ‘বড় লক্ষ্যপূরণ করতে সক্ষম দেশ। তবে যতক্ষণ যুদ্ধ চলছে, অস্ত্র নামাবেন না, সাবধানের সঙ্গে উত্সব পালন করুন। জুতো পরে যেমন আমরা বাইরে যাই, মাস্ক পরেও যেন তাই আমরা করি।’