নয়াদিল্লি: জাতীয় কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতির পদের জন্য লড়াই করতে চলেছেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী এবং বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা অশোক গেহলট। শুক্রবার তিনি নিজেই এই কথা ঘোষণা করেন। তিনি জানিয়েছেন, যে কংগ্রেস সভাপতির পদের জন্য তিনি যে লড়াই করবেন তা একপ্রকার নিশ্চিত। কবে মনোনয়নপত্র জমা করবেন সেটা দ্রুত ঠিক করবেন বলে জানিয়েছেন। দেশের যা বর্তমান পরিস্থিতি তাতে দেশের বিরোধীদের শক্তিশালী হতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। 


নির্বাচিত হলে ছাড়বেন মুখ্যমন্ত্রিত্ব:
এবিপি নিউজকে তিনি জানিয়েছেন, যদি তিনি কংগ্রেস সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন তাহলে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরে যাবেন তিনি।  


তাহলে কে হবেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী:
তিনি সরে গেলে তাঁর জায়গায় কে বসবেন? সেটা কি তিনি ঠিক করেছেন? এই বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে, অশোক গেহলট বলেন দলের নিয়ম মেনেই সেই প্রস্তাব যথাযোগ্য জায়গায় জানাবেন তিনি। 


সংবাদ সংস্থা এএনআই -এর খবর, অশোক গেহলট বলেছেন, 'আমি ওঁকে (রাহুল গাঁধী) অসংখ্যবার বলেছি সবার প্রস্তাব মেনে নিয়ে কংগ্রেসের সভাপতির পদে বসতে। কিন্তু তিনি সাফ জানিয়েছেন যে গাঁধী পরিবার থেকে কারও পরবর্তী সভাপতি পদে বসা উচিত নয়।' তারও আগে কংগ্রেসের এই বর্ষীয়ান নেতা বার্তা দিয়েছিলেন যে যদি রাহুল গাঁধী দলের লাগাম নিতে না চান, তাহলে সেই পদের জন্য নিজে এগোবেন তিনি। 


ইতিমধ্যেই কংগ্রেস সভাপতি পদের জন্য লড়ার বার্তা দিয়েছেন শশী তারুর। তিনি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন আগেই। কংগ্রেসের অভ্যন্তরে যে জি-২০ গোষ্ঠী নিয়ে প্রবল ডামাডোল হয়েছিল, তার অংশও ছিলেন তিনি।  গত লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের পরাজয় স্বীকার করে সভাপতি পদ থেকে সরে দাঁড়ান রাহুল। তারপরেই মাথাচাড়া দেয় এই গোষ্ঠী। তারপরেই দলের পরিচালন, কাঠামো, দলের অভ্যন্তরীণ রদবদল-সহ নানা বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছিল ওই শিবির। দলের নতুন সভাপতি নির্বাচনের দাবি তুলে চিঠিও দেওয়া হয়।


সম্প্রতি সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে দেখা করে কংগ্রেসের সভাপতি পদে লড়ার বিষয়ে কথা বলে তারুর। তিনি জানিয়েছেন, তাঁকে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অনুমতি দিয়েছেন সনিয়া গান্ধী। আগামী ১৭ অক্টোবর কংগ্রেসের সভাপতি পদে নির্বাচন। সেখানে কি তাহলে মুখোমুখি তারুর-গেহলট। 


অশোক গেহলট কংগ্রেসের অন্দরে গাঁধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। সেক্ষেত্রে গাঁধী পরিবারের কেউ যদি কংগ্রেস সভাপতি না হন, তাহলে গাঁধী পরিবারের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ কেউ এই পদে বসলে আখেরে কর্তৃত্ব থাকবে গাঁধী পরিবারের হাতেই, এমনটাও মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। যদিও সনিয়া গাঁধী স্পষ্ট জানিয়েছেন যে এই লড়াইয়ে তিনি নিরপেক্ষ থাকবেন। 


শুরু তরজা:
শশী তারুর কংগ্রেস সভাপতি পদে লড়ার কথা সামনে আসতেই দলের অভ্যন্তরেই টের পাওয়া গিয়েছে উষ্মা। কংগ্রেস নেতা গৌরব বল্লভ নিশানা করেছেন তারুরকে। সনিয়া গাঁধী অসুস্থ থাকার সময় তাঁকে চিঠি পাঠানো নিয়ে নিশানা করা হয়েছে শশী তারুরকে। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, রাহুল গাঁধীরই ওই পদে বসা উচিত। কিন্তু যদি তিনি তাঁর সিদ্ধান্তে অটল থাকেন। সেক্ষেত্রে বাকি দুটোর নামের মধ্যে কোনও তুলনাই হয় না। এমন বক্তব্যের মাধ্যমে কার্যত গেহলটকেই তিনি সমর্থন করেছেন বলে রাজনৈতিক মহলের মত। পাশাপাশি গৌরবের দাবি, মুখপাত্র নয় একজন সাধারণ কংগ্রেস কর্মী হিসেবে তাঁর এই বক্তব্য। এই বিষয়ে একাধিক টুইটও করেছেন তিনি। পাল্টা শশী তারুর প্রাক্তন মার্কিন রাষ্ট্রপতি থিওডোর রুজভেল্টের একটি উক্তি টুইট করেন। 


আরও পড়ুন: ব্যবসায় টাকার উত্‍স কী ? অনুব্রত-কন্যাকে নোটিস ধরিয়ে জানতে চাইল সিবিআই