জয়পুর: একেবারে বেনজির ঘটনা। কন্যাসন্তানকে ঘরে আনতে সাড়ে ৪ লাখের হেলিকপ্টার ভাড়া করল পরিবার। ব্যান্ড বাজার সঙ্গে সদ্যোজাতকে দেওয়া হল গোলাপ ছড়ানো 'রেড কার্পেট ওয়েলকাম'। এমনই ঘটনা ঘটেছে রাজস্থানের এক গ্রামে।



নেতা, মন্ত্রী এমনকী হিট হিরোদেরও হার মানাল খুদে। 'সাড়ে চার লাখি' হেলিকপ্টারে করে 'এন্ট্রি' নিল নিজের ঘরে।রাজস্থানের নগৌর জেলায় সেই হেলিকপ্টার দেখতে উপছে পড়ল গ্রাম। পরে 'ভাগ্যবতী'কে এক ঝলক দেখতে ভিড় জমাল গ্রামবাসী। নিমডি চন্দাবতা গ্রামে এখন শুধুই উৎসবের আমেজ।

পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, ২ মাস আগে দাদুর বাড়িতেই জন্ম নিয়েছে মেয়ে। এবার ছিল 'বাবার ঘরে' ফেরার পালা। রামনবমীর দিনে মায়ের কোলে করে গ্রামে আগমন। পুজোর দিনে এমনিতেই চারিদিকে চলছিল ভজন-কীর্তন। মা ও মেয়েকে দেখে ফুল ছুড়তে থাকেন গ্রামবাসীরা।মেয়ের দাদু মদনলাল কুমহার জানান, ৩৫ বছর পর তাদের পরিবারে কোনও কন্যা সন্তানের জন্ম হয়েছে। প্রথম থেকেই উৎসবের মেজাজে যা পালন করতে চাইছিল পরিবার। সেই কারণেই হেলিকপ্টারে করে মেয়েকে ঘরে আনার কথা ভাবে ছেলে।

তবে মেয়েকে 'গ্র্যান্ড ওয়েলকাম' জানানো খুব একটা সহজ হয়নি। হেলিকপ্টার নামানোর জন্য দুই গ্রামেই আলাদা করে বানাতে হয় হেলিপ্যাড। যার জন্য নিতে হয় প্রশাসনের অনুমতি। শেষে জেলা আধিকারিক ছাড়পত্র দিতেই উড়তে শুরু করে মেয়ের উড়ান। দুই গ্রামের ৩০ কিলোমিটারের দূরত্ব অতিক্রম করতে ২০ মিনিট সময় নেয় কপ্টার।

দেশে কন্যাসন্তান নিয়ে অনেক পরিবারই যখন চিন্তায় পড়েন, তখন কেন মেয়েকে নিয়ে এমন মাতামাতি ? সেই প্রশ্নের নিজেই উত্তর দিলেন খুদের বাবা হনুমানরাম প্রজাপত। তিনি বলেন, ''কন্যাসন্তানের জন্ম উৎসবের মতো পালন করা উচিত। হেলিকপ্টার ভাড়া করে সমাজে সেই বার্তাই দিতে চেয়েছি আমি।''

কন্যাসন্তান নিয়ে দেশের বাস্তব চিত্র বলছে, এখনও ঘরে মেয়ে জন্মালে ভ্রু কোঁচকায় অনেক পরিবার। সেই কারণে আজকের দিনেও দেশে 'বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও'-এর মতো প্রকল্প চালাতে হচ্ছে সরকারকে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে কন্যাসন্তানের গুরুত্ব বোঝাল রাজস্থানের অখ্যাত এক গ্রাম।