নয়াদিল্লি: জেল থেকে মুক্তি পেতে চলেছেন দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গাঁধী হত্যা মামলায় (Rajiv Gandhi Assassination Case) দোষী সাব্যস্ত এজি পেরিয়াবালন (AG Perarivalan)। বিগত ৩১ বছর ধরে জেলবন্দি ছিলেন তিনি। বুধবার সুপ্রিম কোর্ট তাঁর মুক্তির নির্দেশ দিয়েছে। এই রায়ের পর, রাজীব গাঁধী হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত নলিনী শ্রীহরণ, তাঁর স্বামী, শ্রীলঙ্কার নাগরিক মুরুগান-সহ অন্য ছ'জনেরও মুক্তির রাস্তা প্রশস্ত হল বলে মনে করা হচ্ছে।
রাজীব গাঁধী হত্যার সময় পেরিয়াবালনের বয়স ছিল ১৯ বছর। জঙ্গি সংগঠন লিবারেশন টাইগারস অফ তামিল ইলাম (Liberation Tigers of Tamil Eelam)-এর সদস্য তথা রাজীব হত্যার চক্রী শ্রীবাসনের জন্য দু'টি ৯ ভোল্টের ব্যাটারি কেনার অভিযোগ উঠেছিল পেরিয়াবালনের বিরুদ্ধে, যা কিনবা বিস্ফোরণ ঘটানোর কাজে ব্যবহার করেছিল ওই জঙ্গি সংগঠন।
১৯৯৮ সালে সন্ত্রাস দমন আদালত পেরিয়াবালনকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেয়। পরের বছর সুপ্রিম কোর্ট সেই সাজা বহাল রাখলেও, , ২০১৪ সালে তা যাবজ্জীবন করা হয়। চলতি বছরের মার্চ মাসে পেরিয়াবালনের জামিন মঞ্জুর করে শীর্ষ আদালত। তার পরই জেল থেকে সময়ের আগে মুক্তির আবেদন জানান পেরিয়াবালন।
কেন্দ্রীয় সরকার যদিও পেরিয়াবালনের আবেদনের বিরোধিতা করে। কেন্দ্র জানায়, তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল বিষয়টি রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের উপর ছেড়েছেন। তিনিই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন। তাতে এত সময় ব্যয় করা নিয়ে প্রশ্ন তোলে আদালত। প্রশ্ন তোলা হয় রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়েও। আদালত জানায়, রাজ্যপাল রাজ্যের মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত মানতে বাধ্য। তাই তামিলনাড়ু সরকার যখন রাজীব গাঁধী হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত সাত জনকেই ১৬১ ধারায় ক্ষমা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সে ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির মতামতের জন্য অপেক্ষা কার অর্থহীন।
গত সপ্তাহে আদালতে ফের এ নিয়ে শুনানি চলাকালীন কেন্দ্র জানায়, ক্ষমাপ্রার্থনা মঞ্জুর করার ক্ষমতা একমাত্র রাষ্ট্রপতির হাতেই নিহিত রয়েছে। তাতে অসন্তোষ প্রকাশ করে আদালত। তাহলে এত বছর ধরে রাজ্যপালরা যাঁর যাঁর ক্ষমাপ্রার্থনা মঞ্জুর করেছেন, সেগুলি অসাংবিধানিক কিনা, জানতে চায় আদালত।
বন্দি হিসেবে জেলের মধ্যে পেরিয়াবালনের রেকর্ড ভাল। জেল থেকে লেখাপড়ার পাশাপাশি বইও লিখেছেন তিনি। যদিও বরাবরই তিনি দাবি করে এসেছেন যে, রাজীব হত্যায় ওই ব্যাটারি ব্যবহার করা হবে, তা জানতেন না তিনি।