নয়াদিল্লি: রাত গড়ালেই প্রজাতন্ত্র দিবস (Republic Day 2022)। নিজেহাতে তেরঙ্গা (National Flag) উত্তোলন করবেন স্বয়ং রাষ্ট্রপতি। তার জন্য প্রস্তুতি সেরে রাখা হয়েছে আগেই। শেষ মুহূর্তে তাই সাজো সাজো রব লালকেল্লায় (Red Fort)। এই তেরঙ্গার সঙ্গেই জড়িয়েই ভারতের বিবর্তন। তাই প্রজাতন্ত্র দিবসে জাতীয় পতাকার গুরুত্ব বুঝে নিন।
১৯০৪ সালে জাতীয় পতাকার প্রথম নকশাটি তৈরি করেন ভগিনী নিবেদিতা (Sister Nivedita)। তাতে লাল রংয়ের পতাকার চার প্রান্তে হলুদের রেখা ছিল। মাঝখানে বজ্র আর তার দু’পাশে ভেঙে লেখা ‘বন্দে মাতরম’।
১৯০৬ সালের ৭ আগস্ট কলকাতার পার্সি বাগান স্কোয়্যার (গ্রিন পার্ক)-এ প্রথম তেরঙ্গা উত্তোলন করা হয়। তাতে আড়াআড়ি ভাবে নীল, হলুদ এবং লাল রংয়ের তিনটি ডোরাকাটা ছিল। তারা আঁকা ছিল আটটি, যার মাধ্যমে ভারতের আটটি প্রদেশকে বোঝানো হয়েছিল। হলুদ ডোরাকাটা অংশের উপর লেখা ছিল ‘বন্দে মাতরম’। নীচে লাল ডোরাকাটা অংশের উপর সূর্য, এক ফালি চাঁদ এবং একটি নক্ষত্র আঁকা ছিল। ১৯০৭ সালের ২২ আগস্ট জার্মানিতে ওই একই ধরনের দেখতে পতাকা উত্তোলন করেন মাদাম ভিকাজি কামা।
আরও পড়ুন: Republic Day 2022: করোনা সংক্রমণ এড়িয়ে কীভাবে বাড়িতেই প্রজাতন্ত্র দিবস উদযাপন করবেন?
১৯১৭ সালে ইউনিয়ন জ্যাক-তৃতীয় পতাকার আবির্ভাব ঘটে। অ্যানি বেসান্ত এবং লোকমান্য তিলক সেটি উত্তোলন করেন হোমরুল আন্দোলনের সময়। এর পর ১৯২১ সালে স্বাধীনতা সংগ্রামী পিঙ্গালি বেঙ্কায়া স্বরাজ পতাকা সামনে আনেন। তার উপরের অংশ ছিল সাদা, মাঝখানে সবুজ এবং নীচের অংশ লাল। তিনটি অংশেই মাঝখানে বসানো ছিল চরকা। ব্রিটিশদের হাত থেকে ভারতের স্বাধীনতার প্রতীক হিসেবে ওই পতাকা আনা হয়েছিল।
১৯৩১ সালে ওই স্বরাজ পতাকাতেই সামান্য রদবদল করা হয়। সবুজ অংশটিকে উপরে বসিয়ে, মাঝখানে সাদা, লালের পরিবর্তে নীচের অংশে যোগ হয় গেরুয়া। সাদা অংশের উপর আঁকা হয় চরকা। পরবর্তী কালে রাজেন্দ্র প্রদাশ চরকার পরিবর্তে মাঝের সাদা অংশে অশোক চক্র বসানোর সিদ্ধান্ত নেন। তাতেই পূর্ণতা পায় স্বাধীন ভারতের জাতীয় পতাকা।
১৯৪৭ সালের ২২ জুলাই আজকের এই জাতীয় পতাকা ডোমিনিয়ন অফ ইন্ডিয়ার পতাকা হিসেবে গৃহীত হয়। ভারত প্রজাতন্ত্রের পরিণত হওয়ার পরও ওই পতাকাই থাকে। জাতীয় পতাকার গেরুয়া রং সাহসিকতার প্রতীক। সাদা রং শান্তি এবং সত্যকে তুলে ধরে। অশোক চক্র ধর্ম এবং নীতির প্রতীক। সবুজ রং বৃদ্ধি, সমৃদ্ধি এবং প্রাচুর্যতার প্রতীক।