নয়াদিল্লি : দেশজুড়ে ৭৩তম প্রজাতন্ত্র দিবস পালন চলছে। দিল্লির রাজপথে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা দেখল দেশবাসী। আর এই দিনেই লম্বা কর্মজীবন থেকে অবসর নিল প্রোসিডেন্টের এক  বিশ্বস্ত ।
এদিন  আজাদি কি অমৃত মহোৎসব উৎসবের সূচনা করেন রাষ্ট্রপতি। প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে এই প্রথম ফ্লাইপাস্ট করল ৭৫টি বিমান, কপ্টার। মার্চ পাস্টে দেখা গেল  প্রথমবার দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ১ হাজার ড্রোনকে। দেশপ্রেমের আবহে পরিপূর্ণ অনুষ্ঠানের শেষে তৈরি হল এক আবেগঘন মুহূর্ত। প্রেসিডেন্ট কোবিন্দের বডিগার্ড ঘোড়া বিরাট অবসর গ্রহণ করল এই দিনই। সুদীর্ঘ ১৯ বছর কর্মজীবন তার। রাষ্ট্রপতির দেহরক্ষী কমান্ড্যান্ট কর্নেল অনুপ তিওয়ারির মাউন্ট ছিল বিরাট। এ বছর তাকে দেওয়া হয় চিফ অব আর্মি স্টাফ কম্যান্ডেশন মেডেল। রাষ্ট্রপতি কোবিন্দ, প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ এই অনুষ্ঠানে তাকে বিদায় জানান। অনুষ্ঠান শেষে কুচকুচে কালো সুঠাম চেহারার বিরাটের পিঠে হাত বুলিয়ে তাকে ফেয়ারওয়েল জানান তাঁরা। 






এদিন ২১টি তোপধ্বনির মধ্যে জাতীয় পতাকা উত্তোলন হয়। অনুষ্ঠানে শুরুতেই আকাশপথে গর্জন এম আই কপ্টারের। পুষ্পবৃষ্টি করে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করে বায়ুসেনার চারটি কপ্টার। পোশাকি নাম সিক্সটি ওয়ান ক্যাভালরি। ৬৯ বছর আগে তৈরি অশ্বারোহী দলের কুচকাওয়াজ দেখল রাজপথ। নেতৃত্ব দিলেন মেজর মৃত্যুঞ্জয় সিংহ চৌহান। ৭১-এর যুদ্ধে পাক শত্রু বিনাশে অগ্রণী ভূমিকা নেয় সেঞ্চুরিয়ন ট্যাঙ্ক। এদিন প্রদর্শিত হল দিল্লির রাজপথে। নেতৃত্বে ছিলেন ক্যাপ্টেন রাহুল শর্মা। হাই মোবিলিটি ইনফ্যান্ট্রি কমব্যাট ভেহিকল। রাতে আচমকা হানা দিতে সক্ষম। চলতে পারে জলে-জঙ্গলে। আইসিভি বিএমপি টু নামে সামরিক মহলে পরিচিত এই সাঁজোয়া গাড়ি ভারতীয় সেনাবাহিনীর মেরুদণ্ড। কুচকাওয়াজে রাজপথ দেখা গেল এই সাঁজোয়া গাড়ি। রাজপথে কুচকাওয়াজে কার্গিলে ব্যবহৃত ধনুষ কামান দেখা গেল। দেখা গেল যে কোনও পরিস্থিতিতে নদী বা খাদ ডিঙিয়ে যেতে উপযোগী ভারতীয় সেনাবাহিনীর নিজস্ব সর্বত্র ব্রিজবাহন যান। শুধু রাজপথে নয়, চমক ছিল আকাশেও। উড়ল ধ্রুব কপ্টার বাহিনী। কুচকাওয়াজে দেখা গেল টাইগার ক্যাট ও আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র। এবারের প্রজাতন্ত্র দিবসে ছিল একাধিক চমক। দিল্লির রাজপথে ন্যাশনাল ক্যাডেট কর্পস অংশ নেবে শহিদোঁ কো শত শত নমন অনুষ্ঠানে। দেখা যাবে ৭৫টি বিমান অথবা হেলিকপ্টারের গ্র্যান্ড ফ্লাইপাস্ট। প্রজাতন্ত্র দিবসে কলাকুম্ভ অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশন করেন ৪৮৫ জন শিল্পী। এদিন নজর কাড়ে প্রধানমন্ত্রীর পোশাকও। এবার প্রধানমন্ত্রীর সজ্জায় ছিল মণিপুরের শাল ও উত্তরাখণ্ডের ঐতিহ্যবাহী টুপি। প্রধানমন্ত্রী যে টুপি মাথায় পরেছিলেন, তা উত্তরাখণ্ডের টুপি এবং এতে আঁকা ছিল ব্রহ্ম কমলের ছবি। আর এই ব্রহ্মকমল উত্তরাখণ্ডের রাজ্য-ফুল। উত্তরাখণ্ডে প্রতিবারেই কেদারনাথ সফরে পুজোর সময় এই ব্রহ্মকমল ব্যবহার করতে ভোলেন না। আর প্রধানমন্ত্রীর এই ছবি ট্যুইটও করেছেন ভোটমুখী উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর ধামি। তিনি বলেছেন, এভাবে প্রধানমন্ত্রী রাজ্যের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে গৌরবাণ্বিত করেছেন।