মুম্বই: গণেশ। তবে ঠিক পরিচিত মূর্তি নয়। এ রূপ অচেনা। অর্ধেকটা পুরুষ। বাকিটা নারী। যাঁর হাতে তৈরি হয়েছে এই অভিনব মূর্তি, সেই শিল্পী নামকরণ করেছেন 'অর্ধনারী গণেশ'। মুম্বইয়ে হল সেই মূর্তিরই আরাধনা। কিন্তু কেন এমন ভাবনা? কীই বা এই অর্ধনারী গণেশের (Ganesh Puja) বিশেষত্ব?


এর নেপথ্যেও আর জি কর কাণ্ড। কলকাতার আর জি কর (RG Kar Hospital) হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ ও ভয়ানক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দেশজুড়ে তোলপাড়। এমনকী, বিদেশেও আছড়ে পড়েছে প্রতিবাদের ঢেউ।


আর সেই আবহে গণেশ চতুর্থীতে মুম্বইয়ে দেখা গেল অভিনব মূর্তির আরাধনা। মুম্বইয়ের এক শিল্পী এই অর্ধনারী গণেশ নির্মাণ করেছেন। যে গণেশের অর্ধেকটা পুরুষ, অর্ধেক নারী। লিঙ্গবৈষম্য দূর করা ও মহিলাদের ওপর নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের বার্তা দিচ্ছে এই মূর্তি।


শিল্পীর নাম রিন্টু রাঠৌর (Rintu Rathod)। যিনি অর্ধনারী গণেশ তৈরি করেছেন চকোলেট দিয়ে। মহিলা শিল্পী রিন্টু চকোলেট দিয়ে মূর্তি বানানোর জন্য প্রসিদ্ধ। শিল্পী বলেছেন, ২০ কেজি ডার্ক চকোলেট ও ১০ কেজি হোয়াইট চকোলেট দিয়ে তিনি এই মূর্তি নির্মাণ করেছেন। মূর্তির উচ্চতা ২৫ ইঞ্চি। মুম্বইয়ে তাঁর সান্তাক্রুজের বাড়িতে এই গণেশ প্রতিষ্ঠা করেছেন শিল্পী নিজেই।

 

শিল্পীর কথায়, 'হিন্দু ধর্মে এই মূর্তির একটা বিশেষত্ব রয়েছে। এ থেকে বোঝানো হয় যে সমাজে পুরুষ ও মহিলা - দুই সম্প্রদায়ের মতাদর্শই সমান গুরুত্বপূর্ণ। সম্প্রীতি রক্ষার বার্তাও দিচ্ছে এই অর্ধনারী গণেশের মূর্তি।'

 

রিন্টু রাঠৌর জানিয়েছেন, মহারাষ্ট্রের রায়গড়ে গোরেগাঁওয়ের ৮০০ বছরের পুরনো এক মন্দিরে অর্ধনারী গণেশের মূর্তি রয়েছে যার ১২টি হাত। আর জি কর কাণ্ডের পর থেকে মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে যখন সর্বত্র তোলপাড় চলছে, তখন শিল্পী বলেছেন, 'দুই লিঙ্গের মধ্যে সামঞ্জস্য রক্ষা করা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। কলকাতায় যেভাবে সেই ভারসাম্য লঙ্ঘিত হল, তাতে মহিলাদের মা কালীর রূপ ধরে নিজেদের সুরক্ষার ব্যবস্থা নিজেদেরই করতে হবে।'

 

১৭ সেপ্টেম্বর অনন্ত চতুর্দশীতে ১০ দিনের এই উৎসবের সমাপ্তি হবে। সেদিন দুধের মধ্যে এই চকোলেট গণেশের বিসর্জন দেওয়া হবে। সেই দুধ গরিব বাচ্চাদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।

আরও পড়ুন: ঘরের মাঠে তুরুপের তাস, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মাঠে নামার আগে স্ত্রীর উপহার পেলেন অশ্বিন