কটক: লাগাতার পরস্পরকে টেক্কা দিয়ে চলেছে দেশের এক এক শহর। হাজারে বা লাখে নয়, একসঙ্গে কয়েকশো কোটি টাকার গাঁজা উদ্ধারের খবর মেলে প্রায়শই (Marijuana)। তাই গোপন সূত্রে খবর পেয়ে নড়েচড়ে বসেছিলেন সকলে। রুই, কাতলা নয়, আস্ত বোয়াল ধরতে তৎপর ছিলেন। কিন্তু গাঁজা উদ্ধারে গিয়ে যা হাতে এল, তা-ও কিছু কম নয়। বরং বাড়তি পাওনা হিসেবে জুটল রহস্য গল্পের ন্যায় ধাঁধা সমাধানের চ্যালেঞ্জ (Silver Recovered)।


ওড়িশায় বাংলার গাড়িতে কুবেরের ধন!


সেই চ্যালেঞ্জ জয় করেই আপাতত তুষ্ট ওড়িশার আবগারি আধিকারিকরা। কারণ এক কেজি, দু’কেজি নয়, সবমিলিয়ে প্রায় ১০০ কেজির রূপোর বাট উদ্ধার করেছেন তাঁরা। গহনা উদ্ধার করেছেন বিপুল পরিমাণ। সঙ্গে নগদে কড়কড়ে ১৪ লক্ষ টাকা। দু’জনকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও বড় চক্রের হদিশ মিলতে পারে বলে সম্ভাবনা রয়েছে। 


আবগারি দফতরের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, গঞ্জম জেলা থেকে গাড়িতে চাপিয়ে পড়শি রাজ্যে গাঁজা পাচার করা হচ্ছে বলে গোপন সূত্রে খবর এসে পৌঁছেছিল। সেই মতো চাঙ্গি টোল গেটে আগে থেকেই অপেক্ষা করছিলেন তাঁরা। একের পর এক গাড়িতে নাকা-তল্লাশি চলছিল। সেই সময় বাংলার নম্বর প্লেট ঝোলানো একটি গাড়ির উপর নজর যায় (Odisha Raids)। তাতে তল্লাশি চালাতেই চক্ষু চড়কগাছ হওয়ার জোগাড় হয় সকলের (Silver Bricks)। 


আবগারি দফতরের (Excise Department) এক আধিকারিক জানিয়েছেন, গাড়ির ভিতর উঁকি দিয়ে, চারিদিকে চোখ বুলিয়ে সন্দেহজনক কিছুই চোখে পড়েনি। কিন্তু ভিতরকার গড়ন দেখে খটকা লাগে। তাতেই আরও গুরুত্ব সহকারে তল্লাশি চালাতে গেলে গাড়ির ভিতরে এদিক ওদিক গোপন কুঠুরির হদিশ মেলে। একে একে তা খুলতেই  ঝুলি থেকে বেরিয়ে পড়ে বিড়াল। 


আরও পড়ুন: West Bengal Assembly: বিধানসভার বাইরে ঘুগনি-মুড়ি-চায়ের স্টল বিজেপি বিধায়কদের, ‘মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণা’য় ঝালমুড়ি বিক্রি অগ্নিমিত্রার


জানা গিয়েছে, ওই গাড়ির পিছনের আসনের নিচে গোপন কুঠুরি তৈরি করা ছিল। তার ভিতর থেকে কাগজে মোড়া থরে থরে সাজানো রূপোর বাট দেখতে পান আবগারি আধিকারিকরা। একে একে সেগুলি বার করা হয়। এর পর এর একটি কুঠুরি থেকে উদ্ধার করা হয় ৩৭ কেজি ওজনের রূপোর গয়না। এদিক ওদিক হাত চালাতে বেরিয়ে আসে নগত টাকার বান্ডিলও। সোনা-রূপো পাচার করতেই গাড়ির এমন বিশেষ অন্দরসজ্জা বলে মত আবগারি আধিকারিকদের। আস্কা থেকে সেগুলি খড়গপুরে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছিল বলে জানা গিয়েছে। 


এই ঘটনায় ওই গাড়ির চালক-সহ দু’জনকে আটক করা হয়েছে। তাঁরা দু’জনেই অপরাধ স্বীকার করেছেন বলে জানা গিয়েছে। আবগারি দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, আগেও একই ভাবে সোনা-রূপো পাচার করেছেন ওই দু’জন। বাংলায় ৫০ কেজি রূপোর গহনা এবং প্রচুর রূপোর বাট আগেও পৌঁছে দিয়েছেন তাঁরা। তার জন্য দিনে ১০০০ টাকা করে পেতেন তাঁরা। কাজ সম্পূর্ণ হলে মিলত আরও ৩ হাজার টাকা। অমিত মাঝি নামের একজন ব্যক্তি তাঁদের এই কাজের বরাত দেয় বলে জানা গিয়েছে। 


দু’জনকে আটক করা হয়েছে, চলছে জিজ্ঞাসাবাদ


এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই পণ্য ও পরিষেবা বিভাগকে খবর দিয়েছে আবগারি দফতর। ধৃত দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ওড়িশা থেকে বাংলায় এই পাচারচক্রের নেপথ্যে আর কারা জড়িয়ে রয়েছে, তা জানার চেষ্টা চলছে। আয়কর দফতরকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। সবদিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।