নয়াদিল্লি: দুনিয়ার রীতিনীতি বোঝার বয়স হওয়ার আগেই পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে হয়েছে তাকে। কিন্তু নিজের মৃত্য়ু দিয়ে পাঁচজনকে পুনর্জীবন একরত্তির। দুষ্কৃতীদের গুলিতে সম্প্রতি মৃত্যু হয় মেয়েটির। সন্তান হারানোর সেই শোক বুকে নিয়েই মেয়ের অঙ্গদান করলেন মা-বাবা। দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস (AIIMS)-এ গোটা বিষয়টি সম্পন্ন হয়েছে। হাসপাতালে ইতিহাসে দেশের কনিষ্ঠতম অঙ্গদানকারীর (Organ Donation) তালিকায় নাম উঠল ওই একরত্তির।


বিদায়বেলায় পাঁচজনের প্রাণরক্ষা


সপ্তাহ তিনেক আগে দুস্কৃতীদের ছোড়া গুলিতে আহত হয় রোলি প্রজাপতি নামের ছ'বছরের মেয়েটি। সরাসরি মাথায় গুলি লাগে তার। তার জেরে গভীর কোমায় চলে যায় সে। বহু চেষ্টা-চরিত্র করেও ফেরানো যায়নি তাঁকে। শেষমেশ তাকে ব্রেনডেড ঘোষণা করা হয়। এর পর মেয়েটির শোকগ্রস্ত পরিবারকে অঙ্গদানের প্রস্তাব দেন চিকিৎসকেরা। তাতে রাজি হয়ে যান তাঁরা। সেই মতোই গোটা প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে (Organ Transplant)। 


আরও পড়ুন: Viral Video: ন্যানোয় সওয়ার রতন টাটা, নেই দেহরক্ষী, সহায়ক, মুহূর্তে ভাইরাল ভিডিও


এইমস-এর তরফে জানানো হয়েছে, গত ২৭ এপ্রিল মেয়েটিকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। চিকিৎসা করতে গিয়ে দেখা যায়, মস্তিষ্কের মধ্যে গেঁথে বসে রয়েছে গুলি। মস্তিষ্কের কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। শত চেষ্টাতেও তাকে ফেরাতে না পেরে ব্রেনডেড ঘোষণা করে দেওয়া হয়। শোকগ্রস্ত পরিবারকে সেই সময় সামলানোই মুশকিল হয়ে গিয়েছিল। তা-ও  আলোচনায় বসেন চিকিৎসকরা। রীতিমতো কাউন্সেলিং করানো হয়। তাঁরাও বোঝেন। সম্মতি দেন অস্ত্রোপচারে। 


পাঁচ অঙ্গেরই প্রতিস্থাপন


মেয়েটির মা-বাবার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন এইমস-এর চিকিৎসকেরা। জানা গিয়েছে, মেয়েটির লিভার, কিডনি, দুই কর্নিয়া এবং হৃদপিণ্ডের ভালভ অন্য রোগীর শরীরে প্রতিস্থাপন করা হবে। দিল্লি এইমসের ইতিহাসে রোলিই সর্বকনিষ্ঠ অঙ্গদাত্রী। মেয়েটির মা-বাবার প্রতি কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। 


এইমস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ১৯৯৪ থেকে হাসপাতালে অঙ্গদান প্রক্রিয়া চলে আসছে। শুধু হাসপাতালের ইতিহাসেই নয়, দিল্লি তথা রাজধানী সংলগ্ন এলাকাগুলিতেও এত কম বয়সি অঙ্গদান করার নজির নেই বলে জানিয়েছেন তাঁরা।