নয়াদিল্লি: বিশেষজ্ঞদের মতে, ধূমপানের ফলে ফুসফুসের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া বিঘ্নিত হয়। এরফলে, শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা ব্যাহত হয়। যার জেরে, বিভিন্ন রোগ-অসুস্থার মোকাবিলা করতে শরীরের ক্ষমতা কমে যায়। 


বিশেষজ্ঞরা জানান, সাধারণত ধূমপায়ীদের ইমিউন সিস্টেম ভীষণ ডিস্টার্বড থাকে। ধূমপানের ফলে শরীরের বিশেষ কিছু প্রতিরোধ ক্ষমতার স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হ্রাস পায়। বিশেষ করে, রোগের বিরুদ্ধে লড়াই চালানো টি-সেল ও বি-সেল সহ বেশ কিছু অ্যান্টিবডির উৎপাদন ব্যাহত হয়। 


বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাসচিব তেদ্রোস আধানোম ঘেব্রেসাস জানিয়েছেন, ধূমপান করলে করোনায় আক্রান্ত হওয়া এবং করোনায় মৃত্য়ুর সম্ভাবনা ৫০ শতাংশ বেড়ে যায়। 


বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনা ভাইরাস মূলত ফুসফুসে আক্রমণ করে। ফুসফুসের ক্ষতি করে। ফল, স্বাভাবিকভাবেই, সংক্রমণের মাত্রা একজন ধূমপায়ীর ক্ষেত্রে অনেকটাই বেশি। অর্থাৎ, ধূমপায়ীদের ভারী সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। 


কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের মতে, ধূমপানের ফলে চার প্রধান নন-কমিউনিকেবল ডিজিজ -- যথা কার্ডিওভ্যাসকুলার, ক্যান্সার, ক্রনিক লাং ডিজিজ ও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি প্রবল। 


এছাড়া, তামাক সেবনের ফলে, মাড়ি ও মুখের বিভিন্ন রোগ দেখা দিতে পারে। বিশেষজ্ঞরা জানান, ধূমপানের ফলে, মাড়িতে রক্ত সঞ্চালনের মাত্রা অনেকটাই কমে যায়। ফলে, মাড়ির রোগ হওয়ার সম্ভাবনা ৬ গুণ বেড়ে যায়। পাশাপাশি, মুখের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও প্রবল হয়। 


বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, যাঁরা ধূমপান করেন, তাঁদের উচিত কোনও মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা বা কাউন্সেলিং করানো। তাঁরা জানান, এই অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস ছাড়াতে কাউন্সেলিং সাহায্য করতে পারে। 


অনেকে মনে করেন, ধূমপানের অভ্যাস কাটানোর জন্য বাজারে মেলা নিকোটিন গাম সহায়তা করে। এছাড়া, চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ তো রয়েছেই।


প্রতি বছর ৩১ মে দিনটি ওয়ার্ল্ড নো টোবাকো ডে হিসাবে উদযাপিত হয়। তাই সেই দিনের প্রাক্কালে চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা আরও একবার এনিয়ে সতর্ক করে দিলেন। তাঁদের মতে, স্বাস্থ্যক্ষেত্রে এই জরুরি পরিস্থিতিটা যদি ধূমপান ছাড়ার পক্ষে যথেষ্ট কারণ না হয়, তাহলে আর কিছুই হবে না।