নয়াদিল্লি: পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্যের মধ্যে অন্যতম। ভারতের ইতিহাস ও সংস্কৃতির ধারক ও বাহক। সেই তাজমহলই (Taj Mahal) এ বার আইনি নোটিস পেল। বিগত ৩৭০ বছরে এই প্রথম এমন ঘটল (Tax Notice)।
৩৭০ বছরে আগে কখনও তাজমহলের উপর কার্যকর হয়নি কর
তাজমহলের দেখভাল, রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে ভারতীয় প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ (ASI)। আগ্রা পৌরসভার (Agra Municipal corporation) তরফে তাদেরকেই নোটিসটি ধরানো হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, সম্পত্তি এবং জলকর বাবদ প্রায় ২ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে তাজমহলের। অবিলম্বে তা মিটিয়ে দিতে হবে।
২০২১-’২২ এবং ২০২২-’২৩ অর্থবর্ষের হিসেব মিলিয়ে ওই নোটিস পাঠানো হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, জল-কর বাবদ ১.৯ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে তাজমহলের। সম্পত্তি কর বাবদ বাকি রয়েছে ১.৫ লক্ষ টাকা। ১৫ দিনের মধ্যে বকেয়া টাকা না মেটালে তাজমহল ‘অ্যাটাচ’ করা হবে বলে নোটিসে জানিয়েছে আগ্রা পৌরসভা, যার অর্থ হল, বকেয়া করের টাকা মেটালে তাজমহল বাজেয়াপ্ত করা হবে এবং মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সেখানে নিষিদ্ধ থাকবে প্রবেশ।
কিন্তু তাজমহল ব্যক্তিগত মালিকানাধীন কোনও সাধারণ সম্পত্তি নয়, বরং সৌধ। দেশের আইন অনুযায়ী, এমন সৌধ, স্মৃতিস্তম্ভের উপর সম্পত্তি কর কার্যকর হয় না। তাই নোটিস নিয়ে প্রতিক্রিয়া চাইলে এএসআই-এর সুপারিন্টেন্ডেন্ট প্রত্নতত্ত্ববিদ রাজকুমার পটেল বলেন, “সৌধের উপর সম্পত্তি কর কার্যকর হয় না। জলের বাণিজ্যিক ব্যবহার যেহেতু নেই, তাই জলের উপরও কর দিতে দায়বদ্ধ নই আমরা। তাজমহল চত্বরকে সবুজ-সতেজ রাখতেই জল ব্যবহার করা হয়। এই প্রথম এমন তাজমহলকে কর সংক্রান্ত নোটিস ধরানো হল। কোথাও ভুলভ্রান্তি হয়েছে বলেই বোধ হয়।”
তাজমহলকে করের নোটিস পাঠানো নিয়ে প্রতিক্রিয়া চাইলে আগ্রা পৌরসভার কমিশনার নিখিল টি ফান্ডে বলেন, “তাজমহলকে কর পাঠানোর বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নই আমি। তবে রাজ্যগুলির ভৌগলিক তথ্য সংক্রান্ত সমীক্ষার ভিত্তিতে নতুন করে নোটিস জারি করা হচ্ছে। তার আওতায় সরকারি ভবন, ধর্মীয় স্থানগুলিকেও বকেয়া মেটানোর নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। এএসআই-কে যদি নোটিস ধরানো হয়ে থাকে, তা নিয়ে তাদের কাছ থেকে প্রতিক্রিয়া পেলে তবেই এ নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।”
মুঘল স্থাপত্যের অন্যতম নিদর্শন তাজমহল
আগ্রায় যমুনার দক্ষিণ তীরে অবস্থিত তাজমহল মুঘল স্থাপত্যের অন্যতম নিদর্শন। স্ত্রী মুমতাদের স্মৃতিতে সেটির নির্মাণ করেন মুঘল সম্রাট শাহজাহান। এই মুহূর্তের বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্যের মধ্যে অন্যতম সেটি। ১৯২০ সালে, ইংরেজ আমলেই তাজমহলকে সংরক্ষিত সৌধ ঘোষণা করা হয়। সম্পত্তি বা জল, কোনও রকম করই এতদিন কার্যকর হয়নি তাজমহলের উপর।