কলকাতা: এক ‘অশনি’-তে (Cyclone Asani) রক্ষে ছিল না, তার দোসর এ বার ‘করিম’। ভারতের উপকূলে এ বার দ্বিতীয় ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ার আশঙ্কা। ‘অশনি’র পিছু পিছুই ‘করিম’ (Cyclone Karim) ধেয়ে আসছে বলে জানা গিয়েছে। একসঙ্গে দুই ঘূর্ণিঝড়ের আবির্ভাব বিরল না হলেও, মূলত উঁচু জায়গাতেই এতদিন তা দেখা গিয়েছে। নিরক্ষরেখার দক্ষিণে, অপেক্ষাকৃত নীচু জায়গায় এমন ঘটনা সচরাচর চোখে পড়ে না বলে মত আবহবিদদের।
ঘণ্টায় ১১২ কিলোমিটার গতিসম্পন্ন ঘূর্ণিঝড় ‘করিম’-কে তীব্রতার নিরিখে ইতিমধ্যেই দ্বিতীয় শ্রেণির ঘূর্ণিঝড় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সমুদ্রে শক্তি খুইয়ে দুর্বল হয়ে পড়ার আগে ‘অশনি’র গতিবেগও ঘণ্টায় ১০০-১১০ কিলোমিটার ছিল। দু’দিক থেকে দুই ঘূর্ণিঝড় ছুটে আসার এমন ঘটনা ২০১৯ সালে বঙ্গোপসাগরে দেখা গিয়েছিল। সে বার ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ এবং ঘূর্ণিঝড় ‘লর্না’র অবির্ভাব ঘটেছিল একইসঙ্গে। তবে ‘লর্না’র প্রভাবে ‘ফণী’র শক্তি কিছুটা হলেও হ্রাস পায় সেই সময়।
আমেরিকার দ্য ওয়েদার চ্যানেল জানিয়েছে, দুই ঘূর্ণিঝড় যদি পরস্পরের ১০০০ কিলোমিটারের মধ্যেও এসে পড়ে, তাদের মধ্যে পারস্পরিক সংযোগ তৈরি হয়। কিন্তু মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত দুই ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যেকার ব্যবধান ছিল ২ হাজার ৮০০ কিলোমিটার। ‘অশনি’ এবং ‘করিম’-এর ঘূর্ণি বিপরীতমুখী, একটির নিরক্ষরেখার উত্তর অভিমুখে, অন্যটির দক্ষিণ অভিমুখে। ‘অশনি’র ঘূর্ণি ঘড়ির কাঁটার বিপরীতমুখী, ‘করিম’-এর ঘূর্ণির অভিমুখ ঘড়ির কাঁটার ন্যায়। তাই পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে ওঠার কোনও ইঙ্গিত আপাতত নেই বলে জানিয়েছে দ্য ওয়েদার চ্যানেল।
গত সপ্তাহে আন্দামান সাগরের কাছে ‘অশনি’র উৎপত্তি। ধীরে ধীরে তা শক্তি বাড়িয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়। তার প্রভাবে বাংলা, ওড়িশা, অন্ধ্রপ্রদেশে ভারী বৃষ্টিপাত, ঝোড়ো হাওয়া বইতে দেখা যায়। কিন্তু এই মুহূর্তে শক্তি হারিয়ে দুর্বল হয়ে পড়েছে ‘অশনি’। বুধবার সকালেই উত্তর-পূর্ব অভিমুখে বাঁক নেয় ‘অশনি’। সন্ধেয় পৌঁছয় অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলের কাছে। তার জেরে সকাল থেকেই দক্ষিণবঙ্গের আকাশ ছিল মেঘলা। বেলা গড়াতে বেশ কিছু জায়গায় ঝড়-বৃষ্টিও শুরু হয়। কিন্তু আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ‘অশনি’-র প্রভাবে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি ছাড়া তেমন ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা নেই।
অন্য দিকে, সপ্তাহান্তে ভারত মহাসাগরে ‘করিম’ মাথা তুলে দাঁড়ায়। এই মুহূর্তে অস্ট্রেলিয়ার পশ্চিমে খোলা সমুদ্রে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে সে। তবে আমেরিকার জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টার জানিয়েছে, খুব শীঘ্রই শক্তি হারাবে সে। কোকোস আইল্যান্ড ছাড়া আর কোথাও তার তেমন প্রভাব পড়বে না বলে দাবি তাদের।