UP Election Results: উত্তরপ্রদেশে গেরুয়া-ঝড়। বিধানসভা ভোটে বিপুল জয়লাভ করে ফের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিতে পারেন যোগী আদিত্যনাথ। ভোট গণনার প্রবণতা অনুযায়ী, বিরোধীদের বহু পিছনে ফেলে এগিয়ে বিজেপি। আসন সংখ্যা  গতবারের তুলনায় কম হলেও এখনও পর্যন্ত প্রাপ্ত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রাপ্ত ভোটের হার অনেকটাই বাড়িয়ে নিয়েছে পদ্ম-শিবির। সমাজবাদী পার্টির শক্তি গতবারের তুলনায় বাড়তে চলেছে। এখনও পর্যন্ত সমাজবাদী পার্টি নেতৃত্বাধীন জোট একশোর বেশি আসনে এগিয়ে রয়েছে। বিধানসভা ভোটে প্রচারে ঝড় তুলেছিলেন অখিলেশ যাদব। তিনিই ছিলেন ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতাদের নিশানা হয়ে উঠেছিলেন। তাঁর জনসভাগুলিতে ভিড় আছড়ে পড়তে দেখা গিয়েছে। কিন্তু ভোটের ফলে স্বাভাবিকভাবেই হতাশ সমাজবাদী পার্টি শিবির। এখনও প্রশ্ন ওঠাটাই স্বাভাবিক, কোথায় ভুলটা হল অখিলেশ যাদবের?


ভোটের প্রচারে বিভিন্ন জনসভা ও মিছিলে অখিলেশ বারেবারেই আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে দাবি করেছেন, সমাজবাদী পার্টি ফের  রাজ্যের ক্ষমতায় আসবে। প্রচারের শুরুতে চারশো পারের স্লোগান তুলেছিলেন উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। পরে তা কমে তিনশো পার হয়। অখিলেশের সভা-মিছিলগুলি ভিড় উপচে পড়েছিল। কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে দেখা গিয়েছিল ব্যাপক আবেগ-উচ্ছ্বাস। সমাজবাদী পার্টির ইস্তেহার নিয়েও বেশ আলোচনা চলছিল। বিজেপি ও মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে নিশানা করার কোনও সুযোগ ছাড়েননি অখিলেশ। কিন্তু তাঁর সমস্ত দাবির ফানুস ভোট গণনায় চুপসে গেল। যদিও নিজেদের গড় বলে পরিচিত করহলে সমাজবাদী পার্টির সভাপতি অখিলেশ প্রচুর ভোটেই এগিয়ে। কিন্তু রাজ্যে সমাজবাদী পার্টির পক্ষে ভোটবাক্সে ঝড় উঠল না। জনসভার ভিড়ের প্রতিফলন দেখা গেল না ইভিএমে। কেন এমন হল, তা নিশ্চিতভাবেই বিশ্লেষণ করবে সমাজবাদী শিবির। এবার জয়ন্ত চৌধুরীর রাষ্ট্রীয় লোকদল, ওমপ্রকাশ রাজভরের দল সহ কয়েকটি ছোট দলের সঙ্গে জোট বেঁধে লড়াইয়ে নেমেছিল সমাজবাদী পার্টি শিবির। ভোটের আগে স্বামী প্রসাদ মৌর্য, ধর্ম সিংহ সাইনি বিজেপি ছেড়ে সমাজবাদী পার্টিতে যোগ দিয়েছিলেন। অ-যাদব অনগ্রসর শ্রেণীর ভোট টানার লক্ষ্যে যে কৌশল অখিলেশ নিয়েছিলেন, সেই সামাজিক সমীকরণ বাস্তবে কাজে আসেনি বলেই মনে করা হচ্ছে। অ-যাদব ওবিসি  ভোট কতটা সমাজবাদী পার্টি টানতে পেরেছে, তা ভোটের পরবর্তী বিশ্লেষণে স্পষ্ট হবে। সেইসঙ্গে আরএলডি-র হাত ধরে বিজেপির জাঠ ভোট ব্যাঙ্কে তিনি কতটা ভাগ বসাতে পেরেছেন, তাও দেখার। এক্ষেত্রে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে প্রত্যাশামাফিক ফল করতে পারেনি সমাজবাদী পার্টি জোট। অন্যদিকে, কৃষক আন্দোলনের ইস্যু সত্ত্বেও পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে বিজেপি বেশ ভালো ফল করেছে।


ভোটের ফল ঘোষণার দুদিন আগেই বুথ-ফেরত সমীক্ষার ফল সামনে এসেছিল। বুথ ফেরত সমীক্ষাগুলিতে বিজেপির নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠনের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল। ওই সময় অখিলেশ ইভিএম নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন। এর পাল্টা অখিলেশকে তীব্র কটাক্ষ করেছিল বিজেপি।


ভোট গণনায় এখনও পর্যন্ত যে তথ্য জানা গিয়েছে, তাতে বিজেপি পাঁচটির মধ্যে চারটিতেই এগিয়ে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপি দাবি করেছে যে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতিকে খারিজের যে আর্জি জানিয়েছিলেন, ভোটদাতারা তাতে সাড়া দিয়েছেন। বিজেপির জাতীয় সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বিএল সন্তোষ ট্যুইট করে বলেছেন, উত্তরপ্রদেশে বিজেপির জয় নয়া রাজনীতির দিশা দেখিয়েছে। কিন্তু কেউ কেউ নিজেদের সংশোধন করতে নারাজ। অন্যদিকে, কেন্দ্রীয়মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহ বলেছেন, জাতপাতের রাজনীতিকে প্রত্যাখান করেছেন ভোটাররা।