বারাণসী: বছর ঘুরলেই উত্তরপ্রদেশে (Uttarpradesh) বিধানসভা নির্বাচন (Assembly Election)। তার আগে গতকাল নিজের লোকসভা কেন্দ্র বারাণসীতে (Baranasi) পুনর্নির্মিত কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের (Kashi Viswanath Temple) করিডোরের উদ্বোধন করেছেন নরেন্দ্র মোদি (PM Narendra Modi)। আজও বারাণসীতে (Baranasi) প্রধানমন্ত্রীর একাধিক কর্মসূচি রয়েছে। সকালে যাবেন বিশ্বনাথ মন্দিরে (Kashi Viswanath Temple) । তারপর বিজেপি (BJP) শাসিত রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে তাঁর বৈঠক রয়েছে। ওই বৈঠকে ১২টি বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা তাঁদের কাজের খতিয়ান পেশ করবেন। তা পর্যালোচনা করে দেখবেন প্রধানমন্ত্রী (PM Narendra Modi)।  


গতকাল গভীর রাতে বারাণসী রেল স্টেশন (Baranasi Rail Station) ঘুরে দেখেন প্রধানমন্ত্রী (PM Narendra Modi)। স্টেশনের বিভিন্ন আধুনিক ব্যবস্থা সম্পর্কে খোঁজ নেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ (Yogi Adityanath)।  প্রধানমন্ত্রী জানান, রেল যোগাযোগের পাশাপাশি আধুনিক, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন স্টেশন গড়ে তোলাই তাঁর সরকারের লক্ষ্য। একটি যোগ সংস্থার অনুষ্ঠানেও যোগ দেবেন তিনি। বিকেলে তাঁর দিল্লি ফেরার কথা। 





গতকাল ক্রুজে এসে প্রথমে গঙ্গাস্নান, পরে বিশ্বনাথ মন্দিরে পুজো দেন প্রধানমন্ত্রী। শিব দীপাবলিতে গঙ্গাবক্ষ থেকে দেখলেন সন্ধ্যারতিও। 


কখনও ক্রুজে সওয়ার। কখনও গেরুয়া বসনে গঙ্গা স্নান। কাশী বিশ্বনাথ-সহ একাধিক মন্দির দর্শন, পুজো, আরতি। নির্মাণ শ্রমিকদের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজ। সন্ধেয় দশাশ্বমেধ ঘাটে সন্ধারতি। সোমবার বারাণসীতে নতুন রূপে আত্মপ্রকাশ করা কাশী বিশ্বনাথ মন্দির করিডরের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। 


এদিন বারাণসী পৌঁছে প্রথমে কালভৈরব মন্দিরে যান মোদি। সেখানে পুজো দেওয়ার পর, ক্রুজে উঠে পড়েন প্রধানমন্ত্রী। সঙ্গে ছিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। ক্রুজের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী ও উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীকে একান্তে আলোচনা করতেও দেখা যায়।  এরপর ললিতা ঘাটে এসে পৌঁছয় ক্রুজ অলোকনন্দা। 


পোশাক বদলে গেরুয়া পরে নেন নরেন্দ্র মোদি। এরপর নামেন গঙ্গায়।  গঙ্গায় ডুব দেন। তারপর গঙ্গার জল নিয়ে সোজা চলে আসেন কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরে। শেষে ষোড়শ উপচারে পুজোয় অংশ নেন, সঙ্গে করেন আরতি।


প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এ দিন বলেন, এখানে সবাই আসতে চাইতেন, কিন্তু রাস্তা সংকীর্ণ ছিল। এখন সোজা গঙ্গার ঘাট থেকে মন্দিরে আসা অনেক সহজ হবে। ৩ হাজার বর্গফুটের করিডর এখন ৫ লক্ষ বর্গফুটের করা হয়েছে। এখন মন্দির পরিসরে প্রায় ৭০ হাজার পুণ্যার্থী আসতে পারবেন। 


প্রধানমন্ত্রীর মুখে এদিন উঠে আসে বাংলার প্রসঙ্গও। 


তিনি আরও বলেন, কাশীর সঙ্গে জুড়ে পণ্ডিত রবিশঙ্কর থেকে বিসমিল্লা খান। বাংলার রানি ভবানী কাশীর মন্দিরে সর্বস্ব দান করেছিলেন। দক্ষিণ ভারতেও কাশীর প্রভাব অবিস্মরণীয়। কাশীর বার্তা দেশের দিশা বদলে দেয়। 


এদিন মন্দির চত্বর-সহ গোটা কাশীকেই সাজিয়ে তোলা হয়েছিল। গোটা শহরেই যেন অকাল দীপাবলি। প্রায় ১১ লক্ষ প্রদীপ দিয়ে সাজানো হয় দশাশ্বমেধ-সহ একাধিক ঘাট। সঙ্গে রঙ্গোলির দারুণ কারুকাজ। 


২০১৯ সালে এই প্রকল্পের শিল্যন্যাস করেছিলেন মোদি। তারপর প্রায় ৩৩৯ কোটি টাকা খরচে তৈরি হয়েছে এই করিডোর। 


কিন্তু সমাজবাদী পার্টির সভাপতি অখিলেশ যাদব সোমবারই দাবি করেন, কাশী বিশ্বনাথ করিডর তৈরির উদ্যোগ, তাঁদের সরকারের আমলে নেওয়া হয়েছিল। এ নিয়ে নথিও সামনে আনা হবে বলে জানিয়েছে তারা। 


এদিন সন্ধ্যায় গঙ্গার ধারে গিয়ে আরতিও দেখেন প্রধানমন্ত্রী। এদিনই সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয় কাশী বিশ্বনাথ ধাম।