রাঁচি: এক কোটি, দু’কোটি নয়, খনি দুর্নীতির তদন্তে নেমে প্রায় ২৫ কোটি টাকা উদ্ধার। তার মধ্যে ১৭ কোটি আবার নগদে। হাতে গুনতে না পেরে, ব্যাঙ্ক থেকে তুলে আনা হল টাকা গোনার যন্ত্র। তার পর ট্রাঙ্কে ভরে তোলা হল গাড়িতে। আর তাতেই নতুন করে বিতর্কে ঝাড়খণ্ডের (Jharkhand News) খনি সচিব তথা আইএএস অফিসার (IAS Officer) পূজা সিঙ্ঘল (Pooja Singhal)। শুধুমাত্র তাঁর বাড়িতে হানা দিয়েই নগদ ২৩ লক্ষ টাকা উদ্ধার করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (Enforcement Directorate/ED)। এখনও পাহাড়প্রমাণ টাকা গোনা চলছে (ED Raid)।


IAS অফিসারের বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ


বর্তমান ঝাড়খণ্ড সরকারের খনি এবং ভূতত্ত্ব বিভাগের সচিব পূজা। ঝাড়খণ্ডের খুঁটি জেলার ডেপুটি কমিশনারের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি পূর্বতম বিজেপি সরকারের কৃষি সচিব হিসেবেও কর্মরত ছিলেন। ইন্ডিয়ান অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস ২০০০ ব্যাচের অফিসার পূজা। ১০০ দিনের কাজ প্রকল্প থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে। তা খতিয়ে দেখতেই সম্প্রতি পূজার বাড়ি, দফতর-সহ একাধিক জায়গায় হানা দেন ইডি-র তদন্তকারীরা।


আর্থিক তছরুপের এই মামলায় ঝাড়খণ্ড, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, দিল্লি, পঞ্জাব মিলিয়ে প্রায় ১৮টি জায়গায় তল্লাশি চালান তদন্তকারীরা। তাতেই রাঁচিতে এক চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টের দফতর থেকে নগদে ১৭ কোটি টাকা উদ্ধার হয়। ১০০, ২০০, ৫০০ এবং ২০০০ টাকার নোটের বান্ডিল থরে থরে সাজানো অবস্থায় সেই ছবি এবং ভিডিও সামনে এসেছে। ওই চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট পূজার সহযোগী বলে জানা গিয়েছে। শুক্রবার থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত টাকা গোনার কাজ এখনও শেষ হয়নি বলে জানা গিয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে।



আরও পড়ুন: Delhi Bar Timing: কিছুক্ষণ আরও না হয় রহিলে...দিল্লিতে ভোর ৩টে পর্যন্ত পানশালা খোলা রাখায় সায়


রাঁচিতে একটি হাসপাতালেও তল্লা চালান ED আধিকারিকরা। সারা ক্ষণ তাঁদের নিরাপত্তায় মোতায়েন রয়েছে CRPF বাহিনী। এই মামলায় এর আগে ঝাড়খণ্ড সরকারে কর্মরত জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার রাম বিনোদপ্রসাদ সিনহাকে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা থেকে ২০২০-র ১৭ জুন গ্রেফতার করে ED। আর্থিক তছরুপের মামলা দায়ের হয় তাঁর বিরুদ্ধে। এ ছাড়াও ১৬টি এফআইআর এবং চার্জশিটে ধরে তদন্ত এগোয়। জানা যায়, পুজা যখন খুঁটির দায়িত্বে ছিলেন, সেই সময় সরকারি প্রকল্প থেকে নিয়মিত মোটা টাকা নিজের এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের অ্যাকাউন্টে জমা করতেন তিনি। তাঁর ৪ কোটি ২৮ লক্ষ টাকার সম্পত্তি আগেই বাজেয়াপ্ত হয়।


পূজার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ যদিও এই প্রথম নয়। তদন্তে জানা গিয়েছে, রাঁচি থেকে কলকাতা, একাধিক সম্পত্তির মালকিন তিনি। কলকাতার রাজার হাটে একটি বাড়ি রয়েছে তাঁর। সেখান থেকে বছরে প্রথম পক্ষের স্বামীর সঙ্গে মিলে ভাড়াবাবদই ৬ লক্ষ টাকা আয় ছিল তাঁর। ২০০৮-’০৯ সালে রাঁচিতে সিভিল সার্ভিস অফিসারদের কোঅপারেটিভ সোসাইটে-তে ৭৮ হাজার বর্গফুটের একটি জমি নিজের নামে নেন পূজা রাঁচির একটি ব্যবসায়িক ভবনে ৪ হাজার ৫০০ বর্গফুটের একটি দোকানও রয়েছে তাঁর।


একাধিক জায়গায় তল্লাশি তদন্তকারীদের


ওই দোকানটি দ্বিতীয় স্বামীর নামে করে রেখেছেন তিনি। সেখান থেকে ভাড়া বাবদ আয় হয় ১০ লক্ষ টাকা। এ ছাড়াও, রাঁচির অশোক নগরে দ্বিতীয় স্বামীর সঙ্গে মিলে ৮০ লক্ষ টাকা দিয়ে একটি বাড়ি কিনেছেন তিনি। সেখান থেকে তিন লক্ষ টাকা ভাড় পান বছরে।