নয়াদিল্লি: বিশ্বব্যাঙ্কের নয়া প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত অজয় বাঙ্গা (World Bank President)। বুধবার তাঁর নামে আনুষ্ঠানিক সিলমোহর পড়ল। জলবায়ু পরিবর্তন, বিশ্ব অর্থনীতিতে এই সঙ্কটের সময়ে, আগামী পাঁচ বছরের জন্য বাঙ্গার হাতে দায়িত্ব তুলে দেওয়া হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে (Ajay Banga)। এ দিন এগজিকিউটিভ বোর্ডের বৈঠকের পরই লিখিত বিবৃতি জারি করে বাঙ্গার নাম পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা করা হয়। বলা হয়, 'বিশ্বব্যাঙ্ক এই মুহূর্তে বিবর্তনের মুখে দাঁড়িয়ে। এই সময় বাঙ্গার সঙ্গে কাজ করতে মুখিয়ে বোর্ড'।
২ জুন আনুষ্ঠানিক ভাবে বিশ্বব্যাঙ্কের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন
আমেরিকার তরফে বাঙ্গাকে বিশ্বব্যাঙ্কের প্রেসিডেন্ট হিসেবে বাঙ্গার নাম মনোনীত করা হয়। তার পর এগজিকিউটিভ বোর্ডের বৈঠকে এ দিন বাঙ্গার হাতে দায়িত্ব সঁপে দেওয়ার পক্ষে ভোট দেন সকলে। আগামী ২ জুন আনুষ্ঠানিক ভাবে বিশ্বব্যাঙ্কের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন বাঙ্গা। এই মুহূর্তে বিশ্বব্যাঙ্কের দায়িত্বে রয়েছেন ডেভিড মালপাস। জলবায়ু পরিবর্তনে তাঁর ভূমিকা বহুল সমালোচিত। তাই মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই দায়িত্ব ছাড়ছেন ডেভিড। তাঁর হাত থেকেই দায়িত্ব গ্রহণ করবেন বাঙ্গা।
আরও পড়ুন: Air Ticket Prices: নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করল Go First, বিমানযাত্রা আরও মহার্ঘ হওয়ার আশঙ্কা
ভারতীয় বংশোদ্ভূত বাঙ্গা খাতায়-কলমে আমেরিকার নাগরিক। এর আগে, মাস্টার কার্ডের চিফ এগজিকিউটিভ অফিসারের দায়িত্ব সামলেছেন। বিশ্বব্যাঙ্কের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে এ বছর ফেব্রুয়ারিতে তাঁকে মনোনীত করেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। যদিও বাঙ্গাকে বিশ্বব্য়াঙ্কের প্রেসিডেন্ট হিসেবে মনোনীত করা নিয়ে বিতর্কও হয় বিস্তর। বিশ্বব্যাঙ্কের নিয়ন্ত্রণ আমেরিকা নিজের মুঠোয় রেখেছে বলে অভিযোগ ওঠে। তবে শেষমেশ, বাঙ্গার হাতেই দায়িত্ব উঠল।
৬৩ বছর বয়সি বাঙ্গা জন্মসূত্রে ভারতীয়। ১৯৫০ সালে মহারাষ্ট্রের পুণেতে, এক শিখ পরিবারে জন্ম। বাবা ছিলেন সেনা আধিকারিক। সিমলা এবং হায়দরাবাদে কেটেছে স্কুল জীবন। অর্থনীতিতে স্নাতক হন দিল্লির সেন্ট স্টিফেন্স কলেজ থেকে। এর পর, আমদাবাদের আইআইএম থেকে উচ্চশিক্ষা লাভ করেন। ২০০৭ সালে আমেরিকার নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন বাঙ্গা।
২০১৬ সালে 'পদ্মশ্রী' সম্মানে ভূষিত হন
দীর্ঘ কর্মজীবনে, একাধিক নামীদামি সংস্থার দায়িত্ব সামলেছেন বাঙ্গা। ১৯৮১ সালে নেসলে-তে ইন্টার্ন ছিলেন তিনি। পরে যোগ দেন পেপসিকো-তে। ভারত মুক্ত অর্থনীতির পথে হাঁটলে পিৎজা হাট, কেএফসি-কে দেশে ব্যবসার সুযোগ করে দেওয়ার নেপথ্যেও তাঁর হাত ছিল। ১৯৯৬ সালে সিটি গ্রুপে যোগ দেন। ২০১০ সালে মাস্টারকার্ডের সিইও হন। ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অফ কমার্সের চেয়ারম্যানও নিযুক্ত হন। ২০১৬ সালে ভারত সরকার তাঁকে 'পদ্মশ্রী' সম্মানে ভূষিত করে।