কাঠমান্ডু: শেষরক্ষা হল না। হাসপাতালে ভর্তি করেও বাঁচানো গেল না ভারতীয় পর্বতারোহী বংশী লালকে (Indian Climber Death)। ৪৬ বছরের বংশীকে গত সপ্তাহেই মাউন্ট এভারেস্টের একাংশ থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল। তার পর থেকে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। গত কাল, সোমবার সব শেষ। জীবন-মৃত্যুর এই লড়াইয়ে শেষমেশ হার মানলেন ভারতীয় পর্বতারোহী। নেপালের পর্যটন দফতরের আধিকারিক জানিয়েছেন, হাসপাতালেই মারা যান তিনি।


কী জানা গেল?
এভারেস্ট-অভিযানে গিয়ে চলতি মরসুমে এই নিয়ে ৮ জন পর্বতারোহীর মৃত্যু হল। তবে এই আট জনের মধ্যে তিন জন খাতায়-কলমে 'নিখোঁজ'। এই তিন জনের এক জন ব্রিটিশ, বাকি দুজন নেপালের শেরপা। খাতায়-কলমে নিখোঁজ থাকলেও এই তিন জনের বাঁচার আশা যে কার্যত নেই, সে ব্যাপারে একমত বিশেষজ্ঞরা। এবারের মতো এভারেস্ট অভিযানের মরসুম শেষ হয়ে আসছে। আপাতত মৃতের সংখ্যা ৮, যা দেখে বহু অভিজ্ঞ পর্বতারোহীই জানাচ্ছেন, গত বারের তুলনায় বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ-জয়ে এবার অনেকটাই কম প্রাণহানি হয়েছে। গত মরসুমে এই সংখ্য়াটি ছিল ১৮। 


'মারণ-পর্বত?'
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, মাউন্ট এভারেস্ট অভিযানের ক্ষেত্রে ৮ হাজার মিটারের উপর থেকে শুরু হয় ঘাতক-এলাকা। এখনও পর্যন্ত, এই পর্বত-জয়ের যে কজনের প্রাণ গিয়েছে, তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগেরই মৃত্যু হয় এই অঞ্চলে। সে জন্য পর্বতারোহীরা এটিকে 'ডেথ জোন'-ও বলে থাকেন। এই উচ্চতায় বাতাস অত্যন্ত পাতলা হয়ে আসে, অক্সিজেনের মাত্রাও কমে যায়। তবে নেপালে পর্বত-অভিযানে গিয়ে মৃত্য়ু মানেই যে নেপথ্যে এভারেস্টের অদম্য আহ্বান কাজ করবে, তা নয়। হিসেব বলছে, বিশ্বের দশটি সর্বোচ্চ শৃঙ্গের মধ্যে ৮টি-ই নেপালে। ফলে বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে সেই শৃঙ্গগুলি জয়ে, নানা অ্যাডভেঞ্চারের নেশায় পারি জমান বহু মানুষ। চলতি মরসুমেই যেমন, রোমানিয়ার এক পর্বতারোহী, লোৎসে অভিযানে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। আবার মাকালু-জয় করতে গিয়ে এই বারই মারা গিয়েছেন ফ্রান্স ও নেপালের দুই পর্বতারোহী। সব মিলিয়ে, মাউন্ট এভারেস্ট ছাড়াও বিপদসঙ্কুল পর্বতশৃঙ্গ নেহাৎ কম নেই এই অঞ্চলে।
তবে পর্বত অভিযান মানে শুধুই মৃত্যুমিছিল নয়। মৃত্যুর চোখে চোখ রেখে জিতে আসার অসংখ্য রেকর্ডও তৈরি হয় এখানে। ফুংজো লামামের কথাই ধরা যাক। নেপালের এই পর্বতারোহী ১৪ ঘণ্টা ৩১ মিনিটে এভারেস্ট সামিট করে রেকর্ড গড়েছেন। মহিলা পর্বতারোহীদের মধ্যে দ্রুততম পর্বত আরোহণের রেকর্ড তাঁর। এরকম আরও রয়েছে। কে বলে বিপদসঙ্কুল মানেই তা এড়িয়ে থাকা শ্রেয়? না হলে কেন, বছরের পর বছর ধরে, সমস্ত বিপদ তুচ্ছ করে পর্বতের নেশায় ছুটে যান এত মানুষ?  
অনেকে ফেরেন, অনেকের ফেরা হয় না। তাতে কি? পর্বতের নেশা তাতে একটুও ধাক্কা খায় না।


 


আরও পড়ুন:TMC-র লুঠের ১৭ হাজার কোটি টাকা আমি মানুষকে ফিরিয়ে দিয়েছি : প্রধানমন্ত্রী