নয়াদিল্লি: দেশের ঐতিহ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এবার নাম বদলাতে পারে ভারতীয় নৌসেনার (Indian Navy Rank Rename) বিভিন্ন পদের, ঘোষণা স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (PM Narendra Modi)। গত কাল, সোমবার মহারাষ্ট্রের মালওয়াঁ-য় নৌসেনার একটি অনুষ্ঠানে এই কথা জানান প্রধানমন্ত্রী। ছত্রপতি শিবাজি মহারাজের দূরদর্শিতা ও সমরবিদ্যায় দক্ষতাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে তাঁর আরও ঘোষণা, নৌসেনা আধিকারিকরা যে সব 'অ্যাপলেট' ব্যবহার করেন, সেখানেও ছত্রপতি শিবাজির 'উপস্থিতি' থাকবে। 


কী বললেন?
মুম্বই থেকে প্রায় ৫০০ কিলোমিটার দূরে, মহারাষ্ট্রের সিন্ধুদূর্গ জেলায় গত কাল 'নেভি ডে'-র একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানেই মনে করান, এদেশে আধুনিক নৌসেনার সংগঠক হিসেবে ছত্রপতি শিবাজিকে আলাদা গুরুত্ব দিয়েছে ইতিহাস। কিংবদন্তী মরাঠা সম্রাট দেশের সুরক্ষায় নৌসেনার গুরত্ব ভালো ভাবেই বুঝতেন। তাই নিজের শাসনকালে শক্তিশালী নৌবাহিনী তৈরি করেছিলেন, মনে করান প্রধানমন্ত্রী মোদি। সঙ্গে সংযোজন, মরাঠা সম্রাটের মনোভাব দেশের মানুষকে তাঁর পরবর্তীকালে দাসত্বের ভাবনা থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য় করেছে। এখন তাই প্রায় সব দিকে, হইহই করে এগোচ্ছে দেশ। এহেন পরিস্থিতিতে ভারতের নৌবাহিনীর বিভিন্ন পদের নয়া নামকরণের ভাবনা।


আর যা...
গত কাল, 'নেভি ডে'-র ওই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নিরাপত্তা বাহিনীতে মহিলাদের সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়টি নিয়েও কথা বলেন। তাঁর কথায়, 'আমরা চেষ্টা করছি, কী ভাবে দেশের নিরাপত্তা বাহিনীতে মহিলার সংখ্য়া বাড়ানো যায়।' এই প্রসঙ্গে ভারতীয় নৌসেনার প্রশংসা শোনা যায় তাঁর মুখে। যে ভাবে নৌবাহিনীর একটি জাহাজের 'কমান্ডিং অফিসার' পদে এক মহিলাকে বেছে নেওয়া হয়েছে, তাকে কুর্নিশ জানান তিনি। তবে এর মধ্যে নৌসেনার পদের নামবদলের বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা আলাদা ভাবে নজর কাড়ে। 
হালেই 'ইন্ডিয়া বনাম ভারত' বিতর্ক তুমুল আলোড়ন ফেলেছিল জাতীয় রাজনীতিতে।  জি-২০ শীর্ষবৈঠকের আনুষ্ঠানিক নৈশভোজে রাষ্ট্রপতি ভবনের তরফে যে নিমন্ত্রণপত্র গিয়েছিল, তাতে 'প্রেসিডেন্ট অফ ইন্ডিয়া'-র পরিবর্তে 'প্রেসিডেন্ট অফ ভারত' লেখা হওয়ায় তীব্র বিতর্ক শুরু হয়। 'ইন্ডিয়া' থেকে 'ভারত' করার জন্য সংসদে নিয়ম মেনে প্রস্তাব আনতে পারে বিজেপি, এমনও আশঙ্কা প্রকাশ করে বিরোধী শিবির। পাল্টা বিজেপি নেতামন্ত্রীরা দাবি করতে থাকেন, আমাদের দেশ ভারত। এর মধ্যে কোনও সংশয় নেই। শুধু দেশের নাম নয়, ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারার ক্ষেত্রেও একই ধরনের বদলের চেষ্টার অভিযোগ ওঠে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে। সংসদের শেষ বাদল অধিবেশনে 'ইন্ডিয়ান পিনাল কোড, ১৮৬০' , 'ইন্ডিয়ান এভিডেন্স অ্যাক্ট, ১৮৭২' এবং 'কোড অফ ক্রিমিনাল প্রসিডিওর, ১৯৭৩'-র পরিবর্তে তিনটি বিল পেশ করেছিল সরকার। তাদের নাম যথাক্রমে, 'ভারতীয় ন্যায় সংহিতা ২০২৩', 'ভারতীয় সাক্ষ্য বিল ২০২৩' এবং 'ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা'। তবে এই নিয়ে তুমুল প্রতিবাদ শুরু হলে বিল তিনটিকে স্ট্যান্ডিং কমিটিতে পাঠিয়ে দেয় সরকার। এছাড়াও একাধিক শহরের নামবদলের ইতিহাসও রয়েছে। 
এবার নৌবাহিনীর পদের নামকরণ বদলের ইঙ্গিত প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণায়। 


আরও পড়ুন:বন্ধুত্ব-প্রেম-আবেগ-দুঃখের মিশেল, সফল হবে লন্ডন যাওয়ার স্বপ্ন? প্রকাশ্যে 'ডাঙ্কি'র ট্রেলার