নয়াদিল্লি: ১৫ জুন পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্য়কায় ভারত-চিন সেনাবাহিনীর সংঘর্ষের পর ভারতীয় নৌবাহিনী দ্রুত দক্ষিণ চিন সমুদ্রে মোতায়েনের জন্য সামনের সারির যুদ্ধজাহাজ পাঠায়। ওই এলাকায় ২০০৯ থেকে কৃত্রিম দ্বীপ বানিয়ে, সামরিক উপস্থিতির মাধ্যমে নিজের প্রভাব-প্রতিপত্তি বাড়িয়েছে চিন।
সরকারি সূত্রে সংবাদ সংস্থা এএনআইকে বলা হয়েছে, গালোয়ানের সংঘর্ষে আমাদের ২০জন জওয়ান নিহত হন। এর ঠিক পরই ভারতীয় নৌবাহিনী তার প্রথম সারির একটি যুদ্ধজাহাজ দক্ষিণ চিন সমুদ্র মোতায়েন করে। ওই জলসীমার অধিকাংশই তাদের বলে দাবি করে ওখানে পিপলস লিবারেশন আর্মির নৌবাহিনী অন্য যে কোনও বাহিনীর উপস্থিতির বিরোধিতা করে। সূত্রটি আরও বলেছে, দক্ষিণ চিন সমুদ্রে ভারতীয় নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ সঙ্গে সঙ্গে মোতায়েন হওয়ায় প্রত্যাশিত ভাবেই চিনা নৌবাহিনী ও নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ কূটনৈতিক আলোচনার সময় ভারতের কাছে আপত্তি করে।
দক্ষিণ চিন সমুদ্রে মোতায়েনের সময় ভারতীয় যুদ্ধজাহাজটি ওখানে আগে থেকেই নিজেদের ডেসট্রয়ার, ফ্রিগেট নামিয়ে রাখা মার্কিন নৌবাহিনীর সঙ্গে লাগাতার যোগাযোগ রেখে চলে যাতে কমিউনিকেশন সিস্টেম বা যোগাযোগ ব্যবস্থা ঠিকঠাক থাকে। রুটিন ড্রিলের অংশ হিসাবে ভারতীয় যুদ্ধজাহাজকে ওখানে অন্য দেশের সামরিক ভেসেলের গতিবিধির খবরাখবর সম্পর্কে নিয়মিত আপডেট দেওয়া হয়। নৌবাহিনীর তত্পরতা নিয়ে হইচই এড়ানোর জন্য গোটা অভিযানটিই চালানো হয় অতি সন্তর্পণে, সাবধানতার সঙ্গে।
প্রায়ই একই সময়ে ভারতীয় নৌবাহিনী তার সামনের সারির ভেসেলগুসিকেও আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের কাছে মালাক্কা প্রণালী বরাবর ও যে রুটে চিনা নৌবাহিনী ভারত মহাসাগর অঞ্চলে ঢোকে, সেখানে নামায়, চিনা নৌবাহিনীর যে কোনও তত্পরতার ওপর নজর রাখতে। মালাক্কা প্রণালী বরাবর তেল নিয়ে ফেরে বা অন্য পণ্য, মালপত্র নিয়ে অন্য মহাদেশের পথেও যায় একাধিক চিনা ভেসেল।


পূর্ব বা পশ্চিম ফ্রন্টে যে কোনও হঠকারিতা মোকাবিলায় ভারতীয় নৌবাহিনী পুরোপুরি সক্ষম এবং মিশন-কেন্দ্রিক মোতায়েনের ফলে ভারত মহাসাগর অঞ্চলে, তার আশপাশে তৈরি হতে থাকা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তার সুবিধা হয়েছে বলেও সূত্রটি জানিয়েছে। এও বলেছে, মালাক্কা প্রণালী থেকে ভারত মহাসাগর এলাকার দিকে পিএলএ-র নৌবাহিনীর গতিবিধির ওপর কড়া নজর রাখতে দ্রুত আন্ডারওয়াটারর ভেসেল ও অন্যান্য মানবহীন সিস্টেম, সেন্সর জোগাড় ও মোতায়েনের প্ল্যানও আছে ভারতীয় নৌবাহিনীর। জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় দিজিবতি এলাকায় চিনা ভেসেলের উপস্থিতির দিকে নজর রয়েছে, তার আশপাশে নিজস্ব ভেসেলও মোতায়েন করেছে ভারতীয় নৌবাহিনী।