নয়াদিল্লি: মাত্র ৪৮ ঘণ্টার ব্য়বধানে দুটি পুরোপুরি আলাদা দৃশ্যের সাক্ষী থাকল কানাডার পার্লামেন্ট। বৃহস্পতিবার, কানাডার প্রবাসী ভারতীয় এমপি চন্দ্র আর্য (Indian Origin MP In Canadian Parliament Calls Out Pro Khalistan Ideology) মনে করালেন, 'কনিষ্ক ফ্লাইট'-এ বিস্ফোরণ ঘটানোর পিছনে যে মতাদর্শ কাজ করেছিল, এখনও সেই মতাদর্শ সে দেশের হাতেগোনা কিছু মানুষের মধ্যে জিইয়ে রয়েছে। কিন্তু অদ্ভূত ভাবে, তাঁর এই বক্তব্যের ঠিক ৪৮ ঘণ্টা আগে, মঙ্গলবার, খলিস্তানপন্থী জঙ্গি হরদীপ সিং নিজ্জরের স্মরণে নীরবতা পালন করে কানাডার হাউস অফ কমন্স। বছরখানেক আগে, নিউ কলম্বিয়ার 'সারে'-তে দুই গোষ্ঠীর লড়াইয়ে মারা যায় নিজ্জর। একদিকে 'খলিস্তানপন্থী চরম মনোভাবাপন্নদের' ঘটানো বিমান-বিস্ফোরণে নিহতদের স্মরণ, অন্য দিকে এক খলিস্তানপন্থী জঙ্গির স্মরণে নীরবতা? ঠিক কী অবস্থান নিতে চায় কানাডা?


বিশদ...
বৃহস্পতিবার, কানাডার পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে, এমপি চন্দ্র আর্য বলেন, 'সন্ত্রাসবাদের শিকার সকলকে স্মরণ করার জাতীয় দিবস ২৩ জুন। ৩৯ বছর আগে, এই দিনেই কানাডার খলিস্তানপন্থীদের বিছানো বোমা বিস্ফোরণ প্রকাশ্য দিবালোকে উড়ে গিয়েছিল এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট ১৮২। তাতে ৩২৯ যাত্রীর প্রত্যেকের মৃত্যু হয়, মারা যান বিমানের কর্মীরাও। কানাডার ইতিহাসে গণহত্যার সবথেকে বড় ঘটনা ছিল সেটি।' এখানেই থামেননি চন্দ্র। যে ভাবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধীর হত্যাকে খলিস্তানপন্থীরা সমর্থন করছেন, তাতে হিংসা এবং ঘৃণার পরিবেশ আরও বাড়ছে বলে সতর্ক করেন তিনি। কানাডার এমপি-র কথায়, 'হিন্দু ধর্মাবলম্বী কানাডার বাসিন্দাদের উদ্বিগ্ন হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। এয়ার ইন্ডিয়া বিমানের বিস্ফোরণে যাঁরা মারা গিয়েছিলেন, তাঁদের পরিবারের পাশে রয়েছি।' ১৯৮৫ সালের ২৩ জুন, এয়ার ইন্ডিয়ার মন্ট্রিয়ল-নয়াদিল্লির সেই বিমানটিতে লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দরে অবতরণের ৪৫ মিনিট আগে ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ হয়েছিল। সন্দেহের তির ছিল চরমপন্থী শিখ জঙ্গিদের দিকে। নিহতদের বেশিরভাগই ছিলেন কানাডা-প্রবাসী ভারতীয়। 'অপারেশন ব্লুস্টার'-র জবাবে এই বিস্ফোরণ চলে বলে অভিযোগ। সেই ঘটনায় নিহতদের স্মরণে এবারও উদ্যোগ নেয় ভারত। এমনিতে নিজ্জরের মৃত্যুর পর থেকে দু-দেশের সম্পর্কে যথেষ্ট টানাপড়েন রয়েছে। তার উপর, নিজ্জরের স্মরণ, গত মঙ্গলবার 'মুহূর্তের নীরবতা' পালন করে কানাডার 'হাউস অফ কমন্স।'


নিজ্জরকে নিয়ে...
এই নিজ্জরের মৃত্যুতে ভারতের দিকে আঙুল তুলেছিল কানাডা। তার মৃত্যুর জন্য দেশের পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে সরাসরি ভারতকে কাঠগড়ায় তুলেছিলেন স্বয়ং জাস্টিন ট্রুডো। যদিও অভিযোগের সপক্ষে কোনও প্রমাণ দিতে পারেননি। তার পর থেকে ভারত-কানাডা সম্পর্কে টানাপড়েন রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কুশপুতুল পোড়ানোর মতো ঘটনাও ঘটেছে কানাডায়, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধী হত্যার  'ট্যাবলো'-ও বেরিয়েছে। ভারতের বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ দিতে না পারায় অবশ্য কানাডার এই সব অভিযোগ আপাতত হালে পানি পায়নি। 


আরও পড়ুন:পাকিস্তানের থেকে বেশি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে ভারতের, অস্ত্রভাণ্ডার বাড়িয়েছে চিন : রিপোর্ট