কলকাতা: ইউহানের কাছেই এক বিশ্ববিদ্যালয়ে এমবিবিএস পড়তেন তিনি। করোনাভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় কোনওক্রমে ফিরেছেন দেশে। ফেলে আসা শহরের বদলে যাওয়া চেহারাটার পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা দিয়েছেন মহারাষ্ট্রের লাতুরের বাসিন্দা আশিস কুর্মে। বলেছেন, পুরনো শহরের সঙ্গে এখনকার ইউহানের তুলনা করলে চমকে উঠতে হয়।


এই ইউহান থেকেই করোনাভাইরাস ছড়ায় বলে জানা গিয়েছে। আশিস জানিয়েছেন, করোনা ছড়ানোর পর থেকে খাঁ খাঁ করছে ইউহান। অন্য সময়ের ব্যস্ত রাস্তাঘাট এখন ধু ধু করছে, কোনও বেসরকারি গাড়ি নেই, সরকারি যানবাহনের দেখা মিলছে কালেভদ্রে এক আধটা। ২৭ ডিসেম্বর থেকে ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত তাঁদের পরীক্ষা চলে, ৮ ডিসেম্বর ধরা পড়ে প্রথম করোনা সংক্রমণ। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের আগে পর্যন্ত এ ব্যাপারে কেউ কিছু জানত না, সবাই নির্বিঘ্নেই রাস্তাঘাটে ঘোরাঘুরি করত। কিন্তু হুবেই প্রদেশের এই প্রাণচঞ্চল শহরের ছবি দ্রুত বদলাতে শুরু করে।

জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকেই তাঁদের প্রতিদিন শরীরের তাপমাত্রা মাপতে হচ্ছিল। তবে স্বাভাবিকভাবে ঘোরাফেরা করতে পারছিলেন, ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত গিয়েছেন বাজারহাট, বন্ধুবান্ধবের বাড়ি। কিন্তু সেদিন থেকে গোটা শহর কার্যত স্তব্ধ হয়ে যায়, তাঁদের চলাফেরা হয় নিয়ন্ত্রিত। তখন থেকে তাঁদের হস্টেলে থাকতে হত, শিক্ষকশিক্ষিকারা এনে দিচ্ছিলেন দরকারি জিনিসপত্র। তবে চিনা নাগরিকদের তাঁদের হস্টেল চত্বরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছিল না। পরিস্থিতি উত্তরোত্তর খারাপ হওয়ায় দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

দেশে ফেরার পর ১৪ দিন তাঁকে কোয়ারান্টাইনে রাখা হয়, তারপর পাঠানো হয় লাতুরের বাড়ি। তবে ইউহানের রাস্তায় মৃতদেহ পড়ে থাকার যে সব ভিডিও দেখা যাচ্ছে, সেগুলি জাল বলে দাবি করেছেন তিনি। যদিও এর মধ্যে আরও ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে, যেগুলিতে দেখা যাচ্ছে, ইউহানের বাসিন্দারা এক বরিষ্ঠ সরকারি আধিকারিককে হেনস্থা করছেন, তাঁদের অভিযোগ, পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রশাসন পুরোপুরি ব্যর্থ। স্বেচ্ছাসেবকরা বাড়ি বাড়ি শাকসবজি ও মাংস পৌঁছে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও বাস্তবে তা হচ্ছে না, এ ব্যাপারে দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকরাও নিশ্চুপ রয়েছেন বলে তাঁরা অভিযোগ করেছেন।