নয়াদিল্লি: বৈধ কাগজপত্র না থাকায় পায়ে বেড়ি পরিয়ে ফেরত পাঠানো হয়েছে ভারতীয়দের। আমেরিকায় এই মুহূর্তে ভারতীয় পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎও টালমাটাল। কারণ ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরকার নয়া আইন আনতে তৎপর হয়েছে, যার আওতায় সেখানে থেকে অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ আর মিলবে না। (Optional Practical Training)

আমেরিকার কংগ্রেসে নয়া বিল জমা পড়েছে। Optional Practical Training (OPT) প্রকল্প বাতিলের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে ওই বিলে।  এতে সেখানে থাকা ৩ লক্ষের বেশি ভারতীয় পড়ুয়ার বিপদে পড়তে পারেন বলে  আশঙ্কা। কারণ OPT প্রকল্পের আওতায় বিদেশি পড়ুয়া, বিশেষ করে যাঁরা বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং গণিত বিভাগে পাঠরত, তাঁদের কিছু বিশেষ সুযোগসুবিধা দেওয়া হয়। (Donald Trump)

OPT প্রকল্পের আওতায়, স্নাতক হওয়ার পর বিদেশি পড়ুয়ারা আমেরিকায় আরও তিন বছর থাকতে পারেন। ওই সময়ে কোনও সংস্থায় কাজ করে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে পারেন তাঁরা।  ওই প্রকল্প বাতিলের অর্থ ৩ লক্ষের বেশি ভারতীয় পড়ুয়ার আমেরিকায় থাকার মেয়াদও শেষ হতে পারে। 

২০২৪ সালের Open Doors সমীক্ষা অনুযায়ী, ভারতীয় পড়ুয়ারাই আমেরিকার OPT প্রকল্পে সবচেয়ে বেশি লাভবান হন। ২০২৩-’২৪ সালে ওই প্রকল্পের আওতায় লাভবান হন ৯৭ হাজার ৫৫৬ ভারতীয় পড়ুয়া, যা তার আগের বছরের তুলনায় ৪১ শতাংশ বেশি। ওই বিল কার্যকর হলে স্নাতক হওয়ার পরই আমেরিকা ছাড়তে হবে ভারতীয় পড়ুয়াদের। অর্থনৈতিক ভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন সকলে। কারণ শিক্ষা ঋণ মেটানোর ক্ষেত্রে তিন বছর আমেরিকায় কাজের সুযোগকে কাজে লাগাতেন তাঁরা। 

বিলটি কার্যকর হলে ভারতীয় পড়ুয়াদের কাজের সুযোগও কমবে।  আমেরিকার পরিবর্তে কানাডা এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের দিকে ঝুঁকতে হবে তাঁদের। আমেরিকার চাকরির বাজারেও এর প্রভাব পড়বে। বিশেষ করে বিজ্ঞান এবং প্রুক্তির দুনিয়ায় আন্তর্জাতিক পড়ুয়াদের বিশেষ যোগদান থাকে। এমন পরিস্থিতিতে F1, M1 ভিসা রয়েছে যাঁদের, তাঁরা H-1B ভিসা পাওয়ার চেষ্টা করছেন। আমেরিকা এবং ভারতের তথ্য়প্রযুক্তি সংস্থাগুলি H-1B ভিসা স্পনসর করে মূলত। কিন্তু H-1B ভিসা পাওয়ার ঝক্কি অনেক। ফলে উদ্বেগ বাড়ছে। 

আমেরিকায় বসবাসকারী ভারতীয় পড়ুয়ারা ইতিমধ্যেই গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে বাড়ি ফেরার পরিকল্পনা বাতিল করেছে। বাড়ি গেলে আর আমেরিকায় ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে আশঙ্কা তাঁদের। কর্নেল, ইয়েল, কলম্বিয়ার মতো ইউনিভার্সিটি বিদেশি পড়ুয়াদের বাড়ি না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। এই বিল ট্রাম্পের অভিবাসী বিরোধী নীতির অংশ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।