থাবা বসিয়েছে ভয়ঙ্কর অসুখ। ভরছে হাসপাতাল। ছড়িয়েছে আতঙ্ক।  এক জ্বরে কাবু গোটা দেশ। এতটাই বাড়াবাড়ি পরিস্থিতি সারা দেশে জারি হয়েছে মহামারী সতর্কতা। জাপানে ভয়ঙ্কর ভাবে থাবা বিস্তার করেছে ইনফ্লুয়েঞ্জা । অস্বাভাবিকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে গোটা দেশে। আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। মরশুমের বেশ কয়েক সপ্তাহ আগেই এবার জাপানে জাঁকিয়ে বসেছে ফ্লু আতঙ্ক।  ভাইরাসটি এবার স্বাভাবিকের থেকে দ্রুত ছড়াচ্ছে।   

Continues below advertisement

জাপানের সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর,ইনফ্লুয়েঞ্জার দাপট এতটাই যে, পরপর বন্ধ করে দিতে হয়েছে স্কুল।  হাসপাতালের আউটডোর থেকে ওয়ার্ড, উপচে পড়ছে ভিড়। বেশির ভাগ হাসপাতালের বেডও ভর্তি। প্রশাসন বেডের চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে। জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রক অনুসারে, গত ৩ অক্টোবর পর্যন্ত চার হাজার জনেরও বেশি মানুষ ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। গত কয়েক বছরে এমন প্রাদুর্ভাব দেখা যায়নি।  আগের সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে ইনফ্লুয়েঞ্জার দাপট চারগুণ বেশি। এই সংক্রমণ রোধে দেশজুড়ে কমপক্ষে ১৩৫টি স্কুল এবং চাইল্ড কেয়ার সেন্টার সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।  

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই বছর ফ্লু-এর বাড়বাডন্ত অস্বাভাবিক। আর এবার আক্রান্তরা অসুস্থও হচ্ছে বেশি। হোক্কাইডোর স্বাস্থ্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইয়োকো সুকামোটো জানিয়েছেন, মানুষকে আরও সতর্ক হতে হবে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বাড়াতে হবে। স্বাস্থ্যরক্ষা ও রোগ প্রতিরোধ সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান বাড়াতে হবে। দরকারে টিকা নিতে হবে । নিয়মিত হাত ধুতে হবে। সংক্রমণ ছড়ানো আটকাতে হবে। 

Continues below advertisement

সুকামোতো সতর্ক করে বলেন যে বিশ্বব্যাপী ভ্রমণ এবং জনসংখ্যার চলাচল ভাইরাসের নতুন পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার ক্ষমতাকে ত্বরান্বিত করতে পারে। তিনি উল্লেখ করেন যে জাপানের প্রাথমিক উত্থান বিশ্বের অন্যান্য অংশে উদ্ভূত ধরণগুলিকে প্রতিফলিত করে, যা ইঙ্গিত দেয় যে ইনফ্লুয়েঞ্জার স্ট্রেনগুলি আরও দক্ষতার সাথে ছড়িয়ে পড়তে পারে বা মানসম্মত চিকিৎসা প্রতিরোধ করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মহামারীর সীমা অতিক্রম করেছে ইনফ্লুয়েঞ্জা। বয়স্ক, ছোট বাচ্চাদের এই সময় সতর্ক থাকতে হবে বেশি।  যাদের কোনও কোমর্বিডিট আছে, তাদের আরও সতর্ক হতে হবে। এখনও কোভিড-১৯ সংকটের স্মৃতি টাটকা। তাই আরও সতর্ক প্রশাসন ও চিকিৎসকরা। জাপান পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ। প্রশাসনের তরফে বিদেশী পর্যটকদের সতর্ক করা হচ্ছে। যদিও স্বাস্থ্য মন্ত্রক  এখনও কোনও বড় বিধিনিষেধ লাগু করেনি। তবে স্কুল এবং কর্মক্ষেত্রগুলিকে বাড়ি থেকে ক্লাস বা অফিস করানোর বিষয়ে ভাবতে বলা হয়েছে।