নয়াদিল্লি: ‘লাভ জেহাদ ‘নিয়ে শোরগোলের মধ্যেই ব্যতিক্রমী ঘটনা উত্তরপ্রদেশের বেরিলি জেলায়। মুসলিম যুবকরা হিন্দু মেয়েদের ভুলিয়ে ভালিয়ে প্রেমের ফাঁদে জড়িয়ে বিয়ের পর ইসলাম গ্রহণে বাধ্য করছে, চাপ দিচ্ছে, হিন্দুত্ববাদীদের এহেন অভিযোগের মধ্যে বেরিলিতে হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করে ভিনধর্মী ছেলেকে বিয়ে করা দুই মুসলিম মেয়ের নিরাপত্তা দিতে রাজি উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। বেরিলির পুলিশ সুপার রোহিত সিংহ সাজভান বলেছেন, সরকারি নথির ভিত্তিতে দুই মহিলাই নিজেদের প্রাপ্তবয়স্ক বলে দাবি করে স্বেচ্ছায় অন্য ধর্মের যুবকদের বিয়ে করেছেন। এর সঙ্গে কোনও সম্পর্কই নেই লাভ জেহাদের। ওঁরা চাইলে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে। ধর্ম বদলে হিন্দু হয়ে বিয়ে করা মেয়েদুটি বেরিলির রিথাউরা ও বহেদি এলাকার।
রিথাউরার মেয়েটির ভাই অবশ্য গতকাল পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন, পাড়ারই একটি ছেলের প্রলোভনে পা দিয়ে তাঁর বোন গত ২২ ডিসেম্বর তার সঙ্গে পালিয়ে যায়, ঘর থেকে ৯৮ হাজার চুরি করে। তবে পুলিশের দাবি, মেয়েটিই পুলিশকে ভিডিও মেসেজ করে বয়সের নথিপত্র দেখিয়ে প্রমাণ করেছে, সে প্রাপ্তবয়স্ক, জানিয়েছে, নিজের ইচ্ছাতেই সে হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করে মন্দিরে ছেলেটিকে বিয়ে করেছে। পুলিশ পরে মেয়েটি সহ তাঁর স্বামী ও মেয়েটির অভিভাবকদের ডেকে পাঠায়। দুপক্ষই লিখিত ভাবে জানায়, পরস্পরের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই তাঁদের। সব মিটে গিয়েছে, অভিযোগও তুলে নেওয়া হয়।
বহেদির মেয়েটির ক্ষেত্রেও থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয় যে, দুজন লোক জোর করে তার ধর্ম বদলিয়ে ভিন সম্প্রদায়ের একটি ছেলের সঙ্গে তার বিয়ে দিয়েছে। মেয়েটির বাবাও পুলিশকে জানান, সে ঘর থেকে ৫ লক্ষ টাকা, সাত তোলা সোনা সঙ্গে নিয়ে পালিয়েছে। এমবিএ পাশ করা মেয়েটিও ভিডিও পাঠিয়ে নিজের ইচ্ছায়ই ধর্ম বদলে বিয়ে করেছে বলে জানায়, বাড়ি থেকে কিছু নিয়ে যায়নি বলেও দাবি করে। মেয়েটি গত সেপ্টেম্বরে আর্য সমাজ মন্দিরের দেওয়া বিয়ের সার্টিফিকেটও পেশ করে। দ্বিতীয় দম্পতিকেও থানায় ডাকা হলে তাঁরা নথিপত্র দেখিয়ে প্রাণের ভয়ে জেলা ছেড়ে চলে যাচ্ছে বলে জানায়। পুলিশ জানায়, নিরাপত্তা চাইলে ওঁদের জন্য়ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে।
উত্তরপ্রদেশ সরকার সম্প্রতি বেআইনি ধর্ম বদল সংক্রান্ত অর্ডিন্যান্স, ২০২০ চালু করে জানায়, জোর করে বা শুধুমাত্র বিয়ের জন্য ‘অসদুদ্দেশ্যে’ ধর্মবদল চলবে না। এটা লাভ জেহাদ।