মেলবোর্ন: অস্ট্রেলিয়ায় করোনা রুখতে বায়ো সিকিউরিটি বাবল নিয়ে তৎপরতা ঠিক কতটা, সেই খোঁজ ইতিমধ্যে পেয়েছেন ভারতীয়রা। বর্ডার-গাওস্কর ট্রফি খেলার মাঝে ভারতীয় ক্রিকেট দলকে পোহাতে হওয়া বিভিন্ন ঝক্কির খোঁজ মিলেছে। কিন্তু বায়োবাবল রক্ষার জেরে এবার অতিথিকে খুনের পরিকল্পনা পর্যন্ত করে ফেলেছে অস্ট্রেলিয় প্রশাসন!


বিপুল প্রশান্ত মহাসাগর টপকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে অস্ট্রেলিয়ায় উড়ে এসেছে 'জো'। মার্কিন মুলুক থেকে উড়ে আসা পায়রাটিকেই বায়ো সিকিউটির জন্য আশঙ্কা মনে করছে অস্ট্রেলিয় প্রশাসন। তাই তাঁকে খুন করে ফেলারই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

অস্ট্রেলিয়ার কৃষি, পানীয় জল ও পরিবেশ দফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দেশের বাইরের যে কোনও পাখিই সেখানকার বায়ো সিকিউরিটির পক্ষে বিপজ্জনক। অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা সহ অন্য যে কোনও ভাইরাস পরিযায়ী পাখির দেহে থাকতে পারে, তাই এই আশঙ্কা।

জো অবশ্য তাঁকে নিয়ে চলতে থাকা খুনের পরিকল্পনা সত্বেও অবিচল। বাকি পায়রাদের সঙ্গে মেজাজে সময় কাটানো, কখনও বাড়ির চালে বসে রোদ পোহানোর কাজে ব্যস্ত সে।

মেলবোর্নের বাসিন্দা কেভিন সেলি গত বছরের শেষদিকে তাঁর বাড়ির ছাদে কার্যত ক্লান্ত, বিধ্বস্ত অবস্থায় প্রথমবার পাখিটিকে দেখতে পান। পরে তাঁর পায়ে লাগানো ট্যাগ থেকে স্থানীয় পাখি অফিস থেকে তিনি পরে জানতে পারেন মার্কিন মুলুক থেকে এসেছে পায়রাটি। সম্প্রতি আমেরিকার নতুন প্রেসিডেন্টের পদে জো বাইডেন বসতে চলেছেন বলেই সোহাগে পায়রাটির নাম রাখেন 'জো'।

স্থানীয় পাখি অফিস পরে খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারে আসলে পাখিটির জন্ম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলাবামায়। সেখান থেকেই দু'মাস আগে নিখোঁজ হয়েছিল সে। উড়তে উড়তে দিকভ্রষ্ট্র হয়ে প্রশান্ত মহাসাগরের দিকে এসে পড়ে সে। কিছু উড়ে যাওয়ার পর এক পণ্য পরিবাহী জাহাজে বসে পড়ে। যাতেই আরও বেশ কিছুটা সমুদ্র পেরিয়ে ফের উড়ান ধরে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে এসে হাজির হয় সে।

মার্কিন অতিথিকে পেয়ে খুশি হলেও স্থানীয় পাখি অফিসে খোঁজ দেওয়ার পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের 'জো'কে খুন করার পরিকল্পনা জেনে বেজায় মনমরা কেভিন। তিনি অবশ্য সবরকম চেষ্টা চালাচ্ছেন যাতে খুনের পরিকল্পনা থেকে প্রশাসন সরে আসে।

কেভিনের দাবি প্রয়োজনে জো-কে পর্যবেক্ষণে রাখা হোক, অসুস্থ হলে তাঁকে সুস্থ করে তুলে মার্কিন মুলুকে তার আসল মালিকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক। যে দাবিতে সামিল হয়েছেন একাধিক অস্ট্রেলিয়ানও।