ওয়াশিংটন: আগামী বেশ কয়েকবছর ধরে বিশ্বজুড়ে স্থায়ী হতে পারে করোনার ধাক্কা। আর তার কারণ হতে পারে বিশ্বের অর্থশালী দেশগুলির বাড়তি সংখ্যায় করোনা ভ্যাকসিন মজুত করা। বিত্তবান দেশগুলি তাদের নাগরিকদের প্রতিষেধকদের বেশ কয়েকটি ডোজ দেওয়া নিশ্চিত করতে প্রচুর পরিমাণ ভ্যাকসিন মজুত করার কাজ শুরু করেছে। যার জেরে ভুগতে পারে বিশ্বের গরীর দেশগুলো। যে তালিকায় রয়েছে ভারতও।


ভারত ইতিমধ্যে প্রায় ১৬০ কোটি করোনা ভ্যাকসিনের বরাত দিলেও তা দেশের মাত্র ৫৯ শতাংশ জনগণকে দেওয়া যাবে বলেই আশঙ্কা সমীক্ষায়। বরাতের সংখ্যাটা বিপুল হলেও তা আখেরে দেশের প্রায় ৫৯ শতাংশ জনগণ পাবেন। মেক্সিকো (৮৪ শতাংশ), ব্রাজিল (৪৬ শতাংশ), কাজাখস্থানের (১৫ শতাংশ) মতো দেশেও জনগণের সংখ্যানুপাতে ভ্যাকসিন না পাওয়ারই আশঙ্কা। তালিকায় সবার নীচে রয়েছে ফিলিপিন্স। এদিকে, আজ থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চালু হচ্ছে গণ টিকাকরণ। ইতিমধ্যে যা চালু হয়ে গিয়েছে ব্রিটেনে।

ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশিত সমীক্ষায় সামনে উঠে এসেছে নতুন এক আশঙ্কা। তারা জানাচ্ছে, বিত্তবান দেশগুলির লক্ষ্য যাতে তাদের দেশের সব নাগরিকদের কয়েকটি করে ভ্যাকসিনের ডোজ দেওয়া যায়। তাই বিপুল সংখ্যায় প্রতিষেধক বরাত দিয়েছে তারা। উল্টোদিকে, উন্নয়নশীল বা গরীব দেশগুলি যত পরিমাণ প্রতিষেধকের জন্য বরাত দিয়েছে, তাতে সেই দেশগুলোর সব বাসিন্দারা একবার করেও ডোজ পাবেন কি না, সে নিয়েই তৈরি হয়েছে আশঙ্কা। আর তেমনটা হলে আখেরে বিশ্ব থেকে মোছা সম্ভব হবে না করোনা অতিমারী।

আফ্রিকা, দক্ষিণ আমেরিকা ও দক্ষিণ এশিয়ার একাধিক দেশে প্রভাব সবথেকে বেশি পড়ার আশঙ্কা। জনসংখ্যা অনুসারে ভারত, চিনের প্রয়োজন সবথেকে বেশি ভ্যাকসিন। চিন তাদের তৈরি নিজস্ব ভ্যাকসিন দেশের ১৪০ কোটি জনগণের জন্য বরাদ্দ রাখছে। এদিকে, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রয়োজন প্রায় ১৩৬ কোটি ও ১১০ কোটি ভ্যাকসিন।

ভারতীয়রা আপাতত এদেশে প্রতিষেধকের ছাড়পত্র পাওয়ার অপেক্ষায়। মার্কিন সংস্থা ফাইজারের পাশাপাশি দেশের সিরাম ইনস্টিটিউট (কোভিশিল্ড) ও ভারত বায়োটেক (কোভ্যাকসিন) ইতিমধ্যে দ্রুত ভ্যাকসিন প্রয়োগের ছাড়পত্র দাবি করেছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই দেশে করোনা ভ্যাকসিন চলে আসার কথা জানানোর সময় প্রধানমন্ত্রী ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, দেশের সব নাগরিক একসঙ্গে ভ্যাকসিন পাবেন না, ধাপে ধাপে তা সবাই পাবেন।