ওয়াশিংটন: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফের এক কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তির উপর পুলিশের নৃশংস অত্যাচারের ঘটনা প্রকাশ্যে এল। মিনেপোলিসের এক পুলিশ অফিসার এক আফ্রিকান আমেরিকানকে গাড়ির নীচে শুইয়ে তাঁর গলায় হাঁটু দিয়ে পাঁচ মিনিট চেপে রাখেন। এর জেরে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়।


মৃত ব্যক্তির নাম জর্জ ফ্লয়েড। তিনি মৃত্যুর আগে সংশ্লিষ্ট পুলিশ অফিসারকে বলেন, ‘আপনার হাঁটু আমার গলায়। আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছি না।’ কিন্তু এই কাতর আর্জি পুলিশ অফিসারের কানে যায়নি। মিনেপোলিসের মেয়র জ্যাকব ফ্রে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত চার পুলিশ অফিসারকে বরখাস্ত করেছেন।

এই পুলিশি অত্যাচারের ঘটনা পথচারীরা মোবাইল ফোনে রেকর্ড করেন। সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। সেই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ফ্লয়েড ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে পড়ছেন। তখনও পুলিশ অফিসাররা তাঁকে ব্যঙ্গ করছেন। পরে ফ্লয়েডকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে ততক্ষণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। মিনেপোসিলের মেয়র জানিয়েছেন, ‘এই ঘটনা অত্যন্ত অন্যায়। আমরা দেখতে পেলাম, একজন শ্বেতাঙ্গ পুলিশ অফিসার একজন কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তির গলায় হাঁটু দিয়ে চেপে রেখেছেন। আমেরিকায় কেউ কৃষ্ণাঙ্গ হলেই তাঁকে মৃত্য়ুদণ্ড দেওয়া যায় না।’

নাগরিক অধিকার আন্দোলনকারী বেন ক্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি ফ্লয়েডের পরিবারের হয়ে এই ঘটনার বিচারের জন্য লড়াই করবেন। জাল নোটের বিনিময়ে কোনও জিনিস কেনা বা ব্যাঙ্কে জাল চেক দেওয়ার অভিযোগে ফ্লয়েডকে আটকায় পুলিশ। এরপর তাঁর উপর অত্যাচার করা হয়। এমন একটি অভিযোগে তাঁকে পুলিশ আটক করে, যে অভিযোগের ভিত্তিতে অত্যাচার চালানো যায় না। অথচ অমানবিক প্রথায় অত্যাচার চালিয়ে ফ্লয়েডকে হত্যা করা হল।

এর আগে ২০১৪ সালে নিউ ইয়র্কে এরিক গার্নার নামে এক কৃষ্ণাঙ্গ যুবককে বেআইনিভাবে সিগারেট বিক্রির অভিযোগে আটক করে পুলিশ। এরপর পুলিশি অত্যাচারে তাঁর মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনার প্রতিবাদে গোটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে আন্দোলন শুরু করেন কৃষ্ণাঙ্গরা। এবার মিনেপোলিসে একই ঘটনা ঘটল।

মিনেপোলিসের পুলিশ প্রধান মেডারিয়া অ্যারান্ডো জানিয়েছেন, তিনি এই ঘটনার তদন্তের ভার এফবিআই-কে দিয়েছেন। তবে অনেকেই এতে খুশি নন। বিভিন্ন মহল থেকে খুনের অভিযোগে ওই পুলিশ অফিসারকে গ্রেফতারের দাবি উঠেছে।