নয়াদিল্লি: পাকিস্তানে ইমরান খানই সর্বেসর্বা। পাকিস্তান করোনা সমস্যায় বিপর্যস্ত। তাই সেনা তাঁকে সাহায্য করছে মাত্র। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের রিপোর্টকে নস্যাৎ করে বললেন পাক মানবাধিকার মন্ত্রী শিরিন মাজারি।


সম্প্রতি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ একটি প্রতিবেদনে জানায়, করোনা আবহে পাকিস্তানে ইমরানের রাশ ক্রমশ আলগা হচ্ছে। জাঁকিয়ে বসছেন সেনাকর্তারা। ওই রিপোর্টে দাবি করা হয়, পাকিস্তানের বিমান, বিদ্যুৎ পরিষেবা ও স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে অন্তত একজন করে সেনা অফিসার দায়িত্ব পেয়েছেন। ক্রমেই বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইমরানের জনপ্রিয়তা তলানিতে ঠেকেছে।
এই পরিপ্রেক্ষিতে, পাক মন্ত্রীর দাবি, এসব কানে শোনা কথার ভিত্তিতে লেখা এবং সর্বৈব অজ্ঞতার প্রতিফলন।
“সংবিধান অনুসারে প্রধানমন্ত্রী ইমরানই প্রশাসনের সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী...সেনা ও নিরাপত্তা বাহিনী তাঁর সরকারের সহায়তার দায়িত্বে।”
পারভেজ মুশারফের প্রশাসনের ১২ জন এখন ইমরানের ক্যাবিনেট সদস্য। ইমরানের যোগাযোগ উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল আসিম আলিম এখন চিনে বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্পের পাক প্রজেক্টগুলির তদারকির দায়িত্বে।
মাজারি আরও বলেন, পাকিস্তানে সবসময় অসামরিক ও সামরিক ক্ষেত্রে টানাপোড়েন চলছে, এই বিশ্লেষণ এবার বন্ধ হোক। উল্টে ভারতের দিকে আঙুল তুলে মাজারি বলেন, ' পাক সেনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও আরএসএসের হুমকির জন্য বেশি সতর্ক। '
তাঁর দাবি, 'পাকিস্তান ভারত থেকে ক্রমাগত হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে, সেই জন্যই পাকিস্তানকে জাতীয় নিরাপত্তা পোক্ত করতে হচ্ছে। ভারতের যে কোনও সামরিক আগ্রাসন রোধে প্রয়োজনীয় সমস্ত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য পাক প্রধানমন্ত্রী সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন। ”
এই বক্তব্যের যদিও এখনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি নরেন্দ্র মোদির দফতর।
স্বাধীনোত্তর ইতিহাসে বেশিরভাগ সময়ই সেনাকর্তারা দেশ শাসন করেছেন পাকিস্তানে। বারবার সেনা অভ্যুত্থানের সাক্ষী থেকেছে ভারতের প্রতিবেশী দেশ। মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার কূটনৈতিক বিষয় নিয়ে গবেষণা ও বিশ্লষণকারী সংস্থা নিউইয়র্কের ‘বিজিয়ার কনসাল্টিং’-এর প্রেসিডেন্ট আরিফ রফিকের মতে, পাকিস্তানের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি যেদিকে ইঙ্গিত দিচ্ছে, তার নিরিখে বলা যায়, ইমরানের আধিপত্য প্রশাসনে যত কমবে, সেনার কর্তৃত্ব মাথাচাড়া দেবে। প্রাক্তন ও বর্তমান সেনা কর্তাদের নিয়োগ বাড়া মানেই ক্ষমতার অলিন্দে তাঁদের আধিপত্য। তিনি আরও বলেন, ‘‘ইমরানের উপর চাপ ক্রমেই বাড়বে। কারণ, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও লকডাউনের জেরে পাকিস্তানের অর্থনীতি বেশ কোণঠাসা’’