ওয়াশিংটন: করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ঘিরে চিনের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যে কূটনৈতিক দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে, তাতে এবার নয়া মাত্রা যোগ করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি এবার চিনের সেনাবাহিনীর সঙ্গে সরাসরি যুক্ত এমন বিশ্ববিদ্যালয়গুলির পড়ুয়া ও গবেষকদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা বাতিল করার পথে হাঁটতে চলেছেন। মার্কিন প্রশাসন সূত্রে খবর, চিনা পড়ুয়াদের একাংশ যাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোনও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে না পারে, তার ব্যবস্থা করা হবে। এর পাল্টা চিনও মার্কিন পড়ুয়াদের ভিসা বাতিল করার পথে হাঁটতে পারে।


মার্কিন প্রেসিডেন্ট করোনা সংক্রমণের জন্য সরাসরি চিনকে দায়ী করেছেন। তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিরুদ্ধে চিনের হয়ে কাজ করার অভিযোগও এনেছেন। বাণিজ্য, প্রযুক্তি সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দু’দেশের সংঘাত চলছে। হংকংয়ে আন্দোলন দমন করার জন্য যে নতুন জাতীয় নিরাপত্তা আইন এনেছে চিন, তার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, সেটা নিয়েও আলোচনা করছেন মার্কিন প্রশাসনের আধিকারিকরা।

হোয়াইট হাউস সূত্রে খবর, মঙ্গলবার ট্রাম্পের সঙ্গে নতুন ভিসা পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেছেন মার্কিন বিদেশ সচিব মাইক পম্পেও। চিনের পড়ুয়ারা যাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রযুক্তি ও গোপন তথ্য চুরি করতে না পারে, তার জন্যই ভিসা বাতিলের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করতে পারে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি। কারণ, আন্তর্জাতিক পড়ুয়া বিনিময়ের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির গুরুত্ব বাড়ে। এছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খরচ চালানোর জন্য বিদেশি পড়ুয়াদের টিউশন ফি-র উপর নির্ভর করে। বিদেশি পড়ুয়াদের একটা বড় অংশ চিনের।

এর আগেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ ও এফবিআই-এর পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে জানানো হয়েছে, চিনের পড়ুয়ারা জাতীয় নিরাপত্তার পক্ষে বিপজ্জনক। বিশেষ করে বিজ্ঞান বিভাগের পড়ুয়া ও গবেষকরা। তবে মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলির কর্মীদের দাবি, এভাবে কোনও একটি বিশেষ দেশের পড়ুয়াদের বাদ দেওয়া যায় না। এটা এশিয়ানদের বিরুদ্ধে বর্ণবিদ্বেষমূলক আচরণ হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে।

মার্কিন প্রশাসন যদি সত্যিই চিনের পড়ুয়াদের ভিসা বাতিল করে, তাহলে সমস্যায় পড়বেন ৩,০০০ জন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চিনা পড়ুয়ার সংখ্যা ৩,৬০,০০০। তবে তাঁদের মধ্যে যাঁরা গবেষণার সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের ভিসা বাতিল হতে পারে।