পশ্চিম এশিয়ার ভূকম্প প্রবণ অঞ্চলে অবস্থিত প্রায় কেঁপে ওঠে মাটি৷ ২০০৩ সালে ভয়াবহ ভূকম্পে ইরানে মৃত্যু হয় প্রায় ২৬ হাজার মানুষের৷ তারপর ২০১২ সালে ফের একবার ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছিল ইরান। একবার দুবার নয়, ভূকম্পন প্রবণ এলাকায় অবস্থানের কারণে, বারবারই কেঁপে ওঠে ইরান। ইজরায়েলের সঙ্গে প্রবল সংঘাতের আবহে ফের কেঁপে উঠল ইরান। একবার নয়, কয়েকদিনের ব্যবধানে পরপর দুইবার। কারও কারও সন্দেহ এটা কি আদৌ স্বাভাবিক ভূমিকম্প? নাকি পারমাণবিক কার্যকলাপের ফল?
শুক্রবার স্থানীয় সময় রাত ৯.১৯ মিনিটে উত্তর ইরানে ৫.১ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। ইজরায়েলের আক্রমণ শুরু হওয়ার পরইরানের ফোর্ডোর কাছে একটি ২.৫ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। তার ঠিক পাঁচ দিন পর আবার কম্পন। এবার অভিঘাত আরও বেশি। শুক্রবারের ভূমিকম্পটি সেমনানের প্রায় ৩৬ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে ১০ কিলোমিটার গভীরে আঘাত হেনেছে। এদিন কম্পন ছড়িয়ে পড়ে তেহরান এবং আশেপাশের অঞ্চলে। ইরান আল্পাইন-হিমালয় ভূকম্পন বলয়ে অবস্থিত । এই এলকা খুবই কম্পনপ্রবণ। এখানে ঘন ঘন ভূমিকম্প হয়। প্রতি বছর ২০০০-এরও বেশি ছোট-বড় ভূমিকম্প হয় এখানে। এর মধ্যে ১৫ থেকে ১৬টি ভূমিকম্পের মাত্রা ৫.০ বা তার বেশি মাত্রার। ২০০৬ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে ইরানে ৯৬,০০০ বার কেঁপে উঠেছে মাটি। তাহলেই বোঝা যাচ্ছে কতটা ভূমিকম্প প্রবণ এলাকা ইরান।
১৩ জুন থেকে ইরানে হামলা চালাচ্ছে ইজরায়েল। বিশেষত ইরানের পারমাণবিক গবেষণাকেন্দ্র ও সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায় ইজরায়েল। নাতানজ, ইসফাহান এবং ফোর্ডোতে ভয়ানক আঘাত হানে ইজরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র। কেঁপে ওঠে তেহরান। শুক্রবারের ভূমিকম্পটির উৎস মাটির মাত্র ১০ কিলোমিটার গভীরে। কম্পনের কেন্দ্র সেমনানের স্পেস অ্যান্ড মিসাইল কমপ্লেক্সের কাছাকাছি হওয়ার জন্যই জল্পনার সূত্রপাত। একাংশের ধারণা, এই কম্পনের কারণ পারমাণবিক কার্যকলাপ হলেও হতে পারে। তবে ভূমিকম্পের প্রাথমিক তথ্ ও ধরণ থেকে মনে করা হচ্ছে , এটি প্রাকৃতিক ঘটনা।
মে মাসে যখন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষের আবহ তৈরি হয়, তখনও একবার কেঁপে উঠেছিল পাকিস্তানের মাটি। অনেকে জল্পনা করেন, এর পিছনে পারমাণবিক কার্যকলাপ থাকলেও থাকতে পারে। তবে পরে ভূতাত্বিকরা জানান, এমনটা নয় ওটা প্রাকৃতিক কম্পনই ছিল। তেমনটাই মনে করা হচ্ছে ইরানের ক্ষেত্রে। কৃতিক টেকটোনিক কার্যকলাপের ফলেই এই কম্পন ঘটে থাকতে পারে বলে মনে করছে ইন্ডিয়া টু-ডে-র এক্সপার্ট প্যানেল।