নয়াদিল্লি : একেবারে সম্মুখ-সমরে ইজরায়েল ও ইরান। ক্রমশ অবনতি হচ্ছে যুদ্ধ পরিস্থিতির। ইজরায়েলের 'অপারেশন রাইজি লায়নে'র পাল্টা 'অপারেশন TRUE প্রমিস- 3' চালিয়েছে ইরান। তেল আভিভ, জেরুজালেম-সহ একাধিক জায়গায় হামলা চালানো হয়েছে। এই আবহে হুঙ্কার ছাড়লেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেছেন, "অদূর ভবিষ্যতে তেহরানের আকাশে ইজরায়েলি বায়ুসেনার জেট দেখতে পাবেন - আমরা আয়াতুল্লাহ-র শাসনের প্রতিটি স্থান এবং প্রতিটি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানব।"
মধ্য়প্রাচ্য়ে মহাযুদ্ধের দামামা বেজে গেছে ! একেবারে সম্মুখ- সমরে ইজরায়েল ও ইরান ! অপারেশন রাইজিং লায়ন বনাম অপারেশন ট্রু প্রমিস- থ্রি। একপক্ষ বলছেন, সশস্ত্রবাহিনী প্রস্তুত। দয়া নয়, এবার জবাব ! অপরপক্ষ বলছে, সীমা ছাড়িয়ে গেছে। এয়ার স্ট্রাইক চলবে। শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া লড়াইয়ের পারদ শনিবার চড়ল তুঙ্গে। পারমাণবিক কেন্দ্র-সহ একাধিক সামরিক ঘাঁটিতে ইজরায়েলের এয়ার স্ট্রাইকের পাল্টা এবার ইজরায়েলে ড্রোন ও ব্যালেস্টিক মিসাইল হামলা চালাল তেহরান। ইজরায়েলের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম আয়রণ ডোমের জাল ভেদ করে তা আঘাত হানল তেল আভিভ, জেরুজালেম-সহ একাধিক জায়গায়। ইরানের হামলায় ইতিমধ্যে তিনজন নিহত হয়েছেন। আহত কমপক্ষে একশোর কাছাকাছি।
রবিবার পরমাণু চুক্তি নিয়ে আমেরিকা ও ইরানের মধ্যে ষষ্ঠ দফার বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। তার আগেই শুক্রবার ইরানের একাধিক পারমাণবিক কেন্দ্র ও সামরিক ঘাঁটিতে 'অপারেশন রাইজিং লায়ন' চালায় বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর দেশ। ২০০টি ফাইটার জেট নিয়ে হামলা চালানো হয়। তাতে শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। আহতের সংখ্যা পৌনে চারশোর বেশি ! থেমে থাকেনি ইরান। ইজরায়েলের ওপর 'ট্রু প্রমিস থ্রি' অপারেশন লঞ্চ করেছে তেহরান। দু'দফায় দেড়শোরও বেশি মাঝারি পাল্লার ব্যালিস্টিক মিসাইল ছুঁড়েছে ইরান। ইজরায়েলের ২টি F-35 যুদ্ধবিমানকে গুলি করে নামানোরও দাবি করেছে তারা। টার্গেট করা হয়েছিল ইজরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রককে। এরপর পাল্টা এয়ার স্ট্রাইক চলবে বলে জানিয়েছে ইজরায়েল! তাদের সশস্ত্র বাহিনী তৈরি আছে বলে পাল্টা হুঙ্কার ছেড়েছে ইরানও।
গত কয়েক দশক ধরেই ইরান ও ইজরায়েলের সংঘাত চলছে। একে অপরের বিরুদ্ধে ক্ষেপণাস্ত্রের হামলাও এই প্রথম নয়। ২০২৪-এর ২ অক্টোবর ইজরায়েলের একাধিক শহরে ১৮০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছিল ইরান। পাল্টা জবাব দিয়েছিল ইজরায়েল। তবে এবারের লড়াইয়ের তীব্রতা অতীতকে হার মানিয়েছে।
শুক্রবারই ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ফোন করেন। দুই রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে বেশ কিছুক্ষণ কথা হয়। প্রধানমন্ত্রী জানান, ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী তাঁকে পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেছেন। তিনি ভারতের উদ্বেগ প্রকাশ করে এই অঞ্চলে দ্রুত শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার ওপর জোর দিয়েছেন।