নয়াদিল্লি: নির্বাচনে জয়ী হলেও আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে এখনও দায়িত্ব গ্রহণ করেননি ডোনাল্ড ট্রাম্প। আপাতত বকেয়া কাজ সারছেন জো বাইডেন। কিন্তু আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব ছাড়ার আগে বাইডেন কি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা ঘটাতে চলেছেন, এই প্রশ্নই এখন মুখে মুখে ফিরছে আন্তর্জাতিক মহলে। বেশ কিছু দেশ ইতিমধ্যেই নাগরিকদের তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের কথা মাথায় রেখে আগাম সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ দিয়েছে। (World War 3)


ইউক্রেনের হাতে যেভাবে তাঁর সরকার আমেরিকায় তৈরি ক্ষেপণাস্ত্র তুলে দিয়েছে, তাতেই এই প্রশ্ন উঠে আসছে। রাশিয়া বনাম ইউক্রেন যুদ্ধ ১০০০ দিনের সময়সীমা পার করে গিয়েছে। সবমিলিয়ে ১২০০০-এর বেশি মানুষ মারা গিয়েছেন। সেই আবহেই সম্প্রতি পেন্টাগনের তরফে কিভ-কে দীর্ঘ পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র তুলে দেওয়া হয়, যাতে রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলা চালাতে পারে তারা। আর সেই অস্ত্র হাতে পাওয়া মাত্রই মঙ্গলবার রাশিয়ায় ছ'টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইউক্রেন। মেয়াদ শেষ হওয়ার ঠিক আগে হঠাৎ ইউক্রেনের হাতে কেন ক্ষেপণাস্ত্র তুলে দিতে গেলেন বাইডেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন ট্রাম্পের সমর্থকরাও। (Joe Biden)



আমেরিকার জোগানো ক্ষেপণাস্ত্র রাশিয়ার মাটিতে আছড়ে পড়ার পর চুপ নেই সেদেশের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও। শত্রুপক্ষের উপর ক্ষেপণাস্ত্র প্রয়োগের ক্ষেত্রে যে কড়া বিধি-নিষেধ ছিল এতদিন, তা শিথিল করে দিয়েছেন তিনি।  তাই বাইডেন পুতিনের এঁকে দেওয়া গণ্ডি টপকাতে বাইডেনই ইউক্রেনকে  মদত জুগিয়েছেন বলে মনে করছেন কূটনীতিকরা।  এমনকি ট্রাম্পের ছেলেও বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন। তাঁর দাবি, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু করতে চাইছেন বাইডেন। জানুয়ারি মাসে ট্রাম্পের ক্ষমতাদখলের রাস্তা কণ্টকাকীর্ণ করে তুলতেই বাইডেন এমন নির্দেশ দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। 


যদিও বাইডেনের সহযোগীদের দাবি, ৩ বছর ১০ মাসের জন্য আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হননি বাইডেন। তাঁর কার্যকালের মেয়াদ ৪ বছরই। তাই ক্ষমতা হাতবদল হওয়ার আগে পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা আছে তাঁর। কিন্তু অনেকেই মনে করছেন, ক্ষমতা ছাড়ার আগে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে ইন্ধন জুগিয়ে যাচ্ছেন বাইডেন। ট্রাম্প যাতে পরিস্থিতি সামলাতে না পারেন, বাইডেন সেই ব্যবস্থা করে যাচ্ছেন বলে দাবি করেছেন প্রথম দফায় ট্রাম্প সরকারের নিরাপত্তা বিভাগের ইউরোপীয় রাষ্ট্রদূত জেমস গিলমোর। 


এমন পরিস্থিতিতে সুইডেন সরকার যুদ্ধকালীন সতর্কতা সংক্রান্ত পুস্তিকা বিতরণ করতে শুরু করেছে নাগরিকদের মধ্যে। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে প্রাণে বাঁচতে কী কী করণীয়, তার বিশদ বিবরণ রয়েছে পুস্তিকায়। ইংরেজি-সহ একাধিক ভাষায় ওই পুস্তিকা লেখা হয়েছে। ফিনল্যান্ড সরকারও যুদ্ধকালীন প্রস্তুতি নিয়ে নয়া ওয়েবসাইট চালু করেছে। নরওয়েতেও পথচলতি মানুষের হাতে যুদ্ধকালীন নিরাপত্তার নির্দেশাবলী ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তাহলে কি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ ঘনিয়ে আসছে? উঠছে এই প্রশ্নও।