নয়াদিল্লি: জম্মু ও কাশ্মীরকে পাকিস্তানের বলে দেখিয়েছিল। ভুল মানচিত্র প্রকাশ নিয়ে ক্ষমা চাইল ইজরায়েল। ভারতের আন্তর্জাতিক সীমান্ত দেখানোয় ভুল হয়েছে মেনে নিল ইজরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী। তবে তাদের দাবি, বিতর্কিত মানচিত্রটি তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়। কারণ শুধুমাত্র আঞ্চলিক ক্ষেত্রের অলঙ্করণ হিসেবেই তুলে ধরা হয়েছিল সেটিকে। কিন্তু ইজরায়েলের এমন 'ভুল' নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া চোখে পড়ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ইজরায়েলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন অনেকেই। (Israel News)

ইজরায়েল বনাম হামাসের যুদ্ধ চলাকালীনই নতুন করে ইরানের সঙ্গে সংঘাত বেড়েছে তেল আভিভের। গত ২৪ ঘণ্টায় রকেট বর্ষণ, পাল্টা রকেট বর্ষণে তপ্ত হয়ে উঠেছে পরিস্থিতি। আর সেই আবহেই একটি মানটিত্র প্রকাশ করে ইজরায়েল, যাতে ভারত-সহ একাধিক দেশকে দেখানো হয়। দাবি করা হয়, ইরান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হলে, তা বহু দূরের দেশেও গিয়ে পড়তে পারে। সেই তালিকায় রাখা হয় ভারতকেও। কিন্তু ভারতের যে মানচিত্র দেখানো হয় ওই মানচিত্রে, তা নিয়েই বিতর্ক বাধে। (India Map)

ইজরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর তরফে প্রকাশিত মানচিত্রে, ভারতের উত্তর ভাগ থেকে জম্মু ও কাশ্মীরকে পুরোপুরি বাদ দেওয়া হয়। জম্মু ও কাশ্মীরকে পাকিস্তানের অংশ বলে দেখানো হয় ওই মানচিত্রে। লেখা হয়, 'ইরান গোটা পৃথিবীর জন্য বিপজ্জনক। ওদের নিশানায় শুধুমাত্র ইজরায়েল নেই, এখান থেকে সূচনা। পদক্ষেপ তকরা ছাড়া উপায় ছিল না আমাদের'। কিন্তু ওই মানচিত্রটি সামনে আসতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ফুঁসে ওঠেন ভারতীয়রা। ভারতের মাথা থেকে জম্মু ও কাশ্মীরকে কেন বাদ দেওয়া হয়েছে, প্রশ্ন ওঠে।  ইজরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীকে মানচিত্রটি প্রত্যাহার করে নেওয়ার অনুরোধও জানান কেউ কেউ। এর পরই ক্ষমা চেয়ে বার্তা পোস্ট করে ইজরায়েলি বাহিনী। Indian Right Wing Community নামের একটি হ্যান্ডলকে সরাসরি জবাব দিয়ে লেখে, 'পোস্টটি ওই অঞ্চলের অলঙ্করণ মাত্র। এতে সীমান্ত সঠিক ভাবে বোঝানো হয়নি। কেউ আহত হয়ে থাকলে আমরা ক্ষমাপ্রার্থী'।

কিন্তু তাতেও ক্ষোভ মেটেনি অনেকের। ইজরায়েলের উদ্দেশে একজন লেখেন, 'ভারত কেন নিরপেক্ষ অবস্থান নিচ্ছে, নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন এবার। কূটনীতিতে কেউ সত্যিকারের বন্ধু হয় না'। পৃথ একটি ম্যাপ তুলে ধরে আর একজন লেখেন, 'ইজরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্রে ঝুঁকি নেমে আসতে পারে বলে ধরা হয় এমন দেশগুলি রয়েছে এই মানচিত্রে। ধরা হয়, কারণ আপনারা বিপজ্জনক না হওয়ার ভান করছেন, তাই তদারকি করতে দেন না। এই মানচিত্রের সঙ্গে নিজেদের মানচিত্রটির তুলনা করুন। পৃথিবীর জন্য কে বেশি বিপজ্জনক, পরিষ্কার বুঝতে পারবেন?'

ইরান যে মানচিত্র প্রকাশ করে, তাতে সৌদি আরব, লিবিয়া, ইথিওপিয়া, ভারত, চিন, রোমানিয়া, বুলগেরিয়া, রাশিয়া, কাজাখস্তান, তুরস্ককে দেখানো হয়। ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র এত শক্তিশালী যে, ওই দেশগুলিতেও আছড়ে পড়তে পারে বলে দাবি করা হয়। ইরান এবং ইজরায়েলের মধ্যে নতুন করে সংঘাতের জেরে এই মুহূর্তে তপ্ত পশ্চিম এশিয়া। গত ২৪ ঘণ্টায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হানা চলছেই। সেই আবহে এই মানচিত্র প্রকাশের নেপথ্য়ে ইজরায়েলের নিজের স্বার্থ জড়িয়ে রয়েছে বলে মনে করছেন কেউ কেউ। আমেরিকার সেনেটর বার্নি স্যান্ডার্স সরাসরি ইজরায়েলের সমালোচনা করেছেন। যেভাবে আগে ইরানের উপর হামলা চালিয়েছে ইজরায়েল, যেভাবে নতুন যুদ্ধের সূচনা করেছেন বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু, তার তীব্র নিন্দা করেছেন তিনি।